অনুপম মল্লিক আদিত্য, জবি প্রতিনিধি :
২৫শে মার্চ কালরাত্রি ও গণহত্যা দিবস উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) প্রদীপ প্রজ্বালন করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যা ৭ টা ১৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবন চত্বরে প্রদীপ প্রজ্জ্বালনের মাধ্যমে ভয়াল কালরাত স্মরণ করা হয়। এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস এক মিনিটের জন্য অন্ধকারাচ্ছন্ন করা হয়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক এর নেতৃত্বে মোমবাতি প্রজ্বালন করা হয়।
পরবর্তীতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে চারুকলা বিভাগের শিল্পী-শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বিশালাকৃতির স্ক্রল পেইন্টিং অংকন করা হয়।
এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ। অতিথিবৃন্দ গভীর শ্রদ্ধা ভরে শহীদদের স্মরণ করেন।
চারুকলা বিভাগের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন,
আমি মনে করি আমাদের নতুন প্রজন্ম অনেক কিছুই জানে না। এই অনুষ্ঠানগুলো আয়োজন করার মাধ্যমে আমাদের নতুন প্রজন্ম বিশেষ করে যারা শিক্ষার্থী আছেন তারা আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাস, আমাদের যে সংগ্রাম, আত্মত্যাগ এই সম্পর্কে জানতে পারবে।আমাদের নতুন প্রজন্ম জানতে পারবে কীভাবে আমাদের স্বাধীনতা অর্জন হয়েছে।
ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমার মনে হয় এটি একটি ইউনিক স্মরণ করার চেষ্টা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে এর আগে হয়েছে কিনা আমি জানি না। পুরান ঢাকা ২৫ মার্চের রাত, ২৬ মার্চের রাত ২৭ মার্চ সেগুলো দেখার সুযোগ হয়েছে এবং আমি অত্যন্ত গর্বিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পুরনো ঢাকার একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সেখানে এভাবে গণহত্যার দিন স্মরণ করা আমি মনে করি, এটা ইতিহাসের একটা অংশ হয়ে থাকবে।এবং আমরা যে কথাটি বলছি যে গণহত্যার আন্তর্জাতিকভাবে আমরা সবাই চাই এবং আমরা দাবি করি এবং এ ধরণের আয়োজনের মাধ্যমে আমাদের দাবিটি আরো জোড়ালো হবে এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি নিশ্চিত হবে। কিছু দিন আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার রোহিঙ্গা গণহত্যার স্বীকার করে নিয়েছে, তারা স্বীকৃতি দিয়েছে। আমরাও চাইব শুরু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নয়, সারা বিশ্ব ২৫ মার্চের এই কালোরাত্রি গণহত্যাকে স্বীকৃতি দেয় এবং সেটা দিলে আমাদের জন্য বিষয়টি ঐতিহাসিকভাবে আরও তাৎপর্যপূর্ণ হবে।
চারুকলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. বজরুল রশীদ খান বলেন, ২৫ মার্চকে স্মরণ করার জন্য, তাদের যেনো আমরা ভুলে না যাই, তাদের যে আত্মাত্যাগ, নিরস্ত্র জনগণের ওপর যেভাবে হানাদার বাহিনী গণহত্যা করেছিল, এটা যেন আমরা স্মরণ করি এবং সমস্ত বিশ্বকে জানিয়ে দিতে চাই, এরকম একটা গণহত্যা আমাদের ওপর হয়েছিল। আমরা আন্তর্জাতিকভাবে এর স্বীকৃতি চাই। এজন্যই আমাদের এই আয়োজন, আশাকরি প্রতি বছরই এই আয়োজন সমুন্নত রাখব।
চারুকলা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাঃ আলোপ্তগীন তুষার এর নেতৃত্ব চারুকলা বিভাগের সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ২০ফুট/৬ফুট বিশাল আকৃতির ক্যানভাসে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ গণহত্যা ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে স্ক্রলপেইন্টিং করা হয়।
মোমবাতি প্রজ্বালন অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় চেয়ারম্যানবৃন্দ, শিক্ষক-শিক্ষিকা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও সদস্যবৃন্দ, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল, সহকারী প্রক্টর নিউটন হাওলাদার, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, সাংবাদিক প্রতিনিধি ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সময় জার্নাল/এসএম