আমার শান্তি- সুখ
- শেখ ফাহমিদা নাজনীন
শুনেছি মানুষ নাকি পৃথিবীর আকাশ ফুঁড়ে
একলাফে চলে গেছে চাঁদের দেশে,
মঙ্গলে জঙ্গল বসাবার সাধ নিয়ে
প্রকৃতি করছে জয় যোদ্ধাবেশে।
মানুষ, সে ভারি এক অদ্ভুত শক্তি,
মানুষের হাতে আছে ক্ষমতা অসীম,
বুদ্ধিমত্তা ভরা জাগতিক রুহু দিয়ে
উত্তাল সাগরকে করছে সসীম।
ভেঙে ফেলা, ছিঁড়ে ফেলা আপামর বন্ধন,
তাই নাকি এ যুগের প্রগতির ট্রেন্ড,
মানুষে মানুষে আজ বনিবনা হয় নাকো,
ভিন গ্রহে, খুঁজে ফেরে আনকোরা ফ্রেন্ড।
কি জানি, সে কারা? বড়ো লজ্জায় মুখ ঢাকে,
কৃষাণীর ছেলে, নাকি পরিচয়হীন,
আমার তো বেশ লাগে, সবুজ ধানের শীষে
চাষির দু'হাতে ছোঁয়া মমতার ঋণ।
যারা বলে, বুজরুকি শালীনতা, ভদ্রতা,
সভ্যতা, কেবলই সে পশ্চিমা ঘেঁষা,
অক্সফোর্ডে কথা বলা, ক্যামব্রিজে হেঁটে চলা,
সায়েন্স ফিকশনের গল্পতে মেশা।
তাদের বাক্যবাণে, চমকায় থেকে থেকে,
থমকানো মনখানা তবু যেন ভাবে,
আলেকজান্দ্রিয়ার বাতিঘর নাম যার,
মিশরের রাজপথে ছিলো কেন তবে?
আজকের কথা নয়, কতো সে বছর আগে,
রোমান দরবারে প্রত্যয়ী মুখে,
সত্যের মহাবাণী করতে উচ্চারণ
দাঁড়িয়েছিলো যাঁরা অবিচল সুখে,
তাঁরা কি সাহসী নয়? সত্যের কাণ্ডারি?
কি নামে ডাকবে বলো, সেই মুখগুলি?
আমার এ প্রাচীন মন সেখানে সাহস খোঁজে,
তাঁদের আঁচড়ে ফোটে স্বপ্নের তুলি।
শুনেছি, মানুষ নাকি কৃত্রিম বৃষ্টিতে
মরুভূমি করে তোলে শস্যশ্যামল,
তবুও জীবন কেন গাণিতিক ছকে বাঁধা?
মৃন্ময় ঠেলে ওঠে পাপের গরল?
তোমরা আকাশ ভেদে মঙ্গলে হানা দাও,
পৃথিবীকে বেঁধে ফেলো অদৃশ্য জালে।
আমার শান্তি-সুখ, সবুজ জলার ধারে
জোনাকির ঝিলিমিলি আমলকী ডালে।
শেখ ফাহমিদা নাজনীন
৯ মার্চ ২০২২।