ডা. মাহমুদুর রশিদ :
মি. জামান জ্বর জ্বর অনুভব করছিলেন বেশ কয়েকদিন ধরে। তিনি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে শেয়ার কেনা-বেচা করে সংসার চালান। ভালোই যাচ্ছিল তার সংসার জীবন। হঠাৎ ছন্দ পতন। ঘরের সকলে করোনা দ্বারা সংক্রমিত হলেন। তার মধ্যে আবার জামানের স্ত্রী লায়লাকে আই.সি.ইউ.তে ভর্তি করানো হলো। শত চেষ্টা সত্ত্বেও লায়লাকে বাঁচানো গেলনা।
করোনা আক্রান্ত হয়ে দেশে মৃত্যু তালিকায় তার নাম আন্তর্ভুক্ত হলো এবং মোট সংখ্যাটিও বাড়ল।
কোভিড-১৯ ভাইরাস তার পৃথিবীতে টিকে থাকার জন্য যে রূপ ধারণ করেছে তার সাথে আমরা বুঝে উঠে পারছি না একদম। তাই আমাদের আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। তেমনি মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে আশংকাজনক হারে।
সারাদেশে বড় বড় শহরের চিত্র যেমন ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে। তেমনি আই.সি.ইউ. ফাঁকা পাওয়া দুষ্কর হয়ে যাচ্ছে।
২০২০ এর ৮ই মার্চ থেকে ২০২১ এর আজ পর্যন্ত প্রিয় বন্ধুগণ আমরা কি একবার ভেবেছি লক্ষ্য লক্ষ্য করোনা স্যাম্পেল কালেকশন, তা প্রসেসিং এবং সন্ধ্যায় রিপোর্ট প্রদান করা তারপর চিকিৎসা, হাসপাতাল,ক্লিনিক পরিষ্কার- পরিচ্ছন্ন রাখাসহ যাবতীয় কাজে যে সকল স্বাস্থ্যকর্মী জীবন বাজি রেখে মানবসেবা করে যাচ্ছেন- তারা পারিবারিক, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কেমন মর্যাদা পাচ্ছেন?
তা ভেবেছি কি?
এক শতক পর মহামারির এই কঠিন সময়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা দেশব্যাপী যে মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে মানবতার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন- তাদের প্রতি আমরা একটিবারের জন্যও কি রাষ্ট্রীয়ভাবে সর্বোচ্চ সম্মান দেখাতে পারি না?
আমাদের রাষ্ট্রীয় কৃপণতা দূর হোক।
চিকিৎসা পেশা অন্তত একবার হলেও সর্বোচ্চ সম্মান লাভ করুক।
লেখক : উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, নান্দাইল, ময়মনসিংহ।