বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

কুড়িগ্রামে মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে কিশোর গ্যাং

শুক্রবার, এপ্রিল ২, ২০২১
কুড়িগ্রামে মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে কিশোর গ্যাং

রেজাউল করিম রেজা, কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রাম জেলা জুড়ে চলছে টিকটক-ইউটিউব ভিডিও বানানোর মহৌৎসব। যার ফলে অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে। কিশোর-কিশোরীরা, বাংলা সিনেমাকেও হার মানিয়েছে। এলাকায় এলাকায় গড়ে উঠছে কিশোর গ্যাং।

কুড়িগ্রাম শহরের কলেজ রোডের হাবুর চায়ের দোকানে ,শিশু নিকেতন সামনে সাইফুলের চায়ের দোকান,মজিদা কলেজের সামনে ,রিভার ভিউ হাই স্কুল এর সামনে,ধরলা নদীর টি বাঁধে ও আশপাশের চায়ের দোকান , হাসপাতাল পাড়া এলাকা , রৌমারীপাড়া সরকারি কলেজের সামনে ছোট ছোট চায়ের দোকান গুলোতে এবং মধুর মোরে আমবাড়ীঘাট, প্রতিবন্দী স্কুলের সামনে, তালতলা, উঠতি বয়সের ছেলেরা আড্ডা দিয়ে বিড়ি সিগারেট খাচ্ছে। এক একটি এলাকা নিয়ে গঠিত হচ্ছে কিশোর গ্যাং। আর এ সকল কিশোর গ্যাং এর পেছনে অদৃশ্য এক শ্রেনীর নেতারাও রয়েছে বলে জানা যায়। অনুসন্ধান করলে বেড়িয়ে আসবে থলের বিড়াল। 

এসব গ্যাং এর লালোসার শিকার হচ্ছে মধ্যবিত্ত ও উচ্চ বিত্তশালী পরিবারের সন্তানরা। কিশোর গ্যাং নির্মূল করা না গেলে । অনেক বাবা
মায়ের সস্তানের জীবনের প্রদ্রীপ নিভে যাওয়ার আশংকা রয়েছে বলে ভুক্তভুগি পরিবাররা জানিয়েছে।

কুড়িগ্রামে ভকেশনাল টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ এর এসএসসি পরীক্ষার্থী ছাত্র মামুন (১৮), নিলারাম স্কুল এন্ড কলেজের নবম শ্রেনীর ছাত্র রিয়াদ (১৭), বর্ডারগার্ড স্কুলে এসএসসি পরীক্ষার্থী মমিন (১৮), কুড়িগ্রাম কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজ অষ্টম শ্রেনীর ছাত্র লিমনের (১৬) কিশোর গ্যং এর হাত থেকে কুড়িগ্রাম থানা পুলিশ এর সহোযোগিতায় রক্ষা পেলেন সাংবাদিক পুত্র কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের অষ্টম শ্রেনীর ছাত্র  শাফি (১৫)। 

খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, শাফির বন্ধু লিমন দীর্ঘদিন থেকে শাফির সাথে বন্ধুত্ব করে আসছে। এরই সুবাধে শাফিকে টার্গেট করে ব্লাক মেইল করে তার বাবার কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার জন্য দীর্ঘদিন থেকে শাফির বন্ধু লিমনের সোর্স এর সহোযোগিতায় রিয়াদ, মমিন, মামুনসহ নাম না জানা আরো কয়েকজন মিলে কিশোর গ্যাং তৈরী করে। দীর্ঘদিন থেকে কিশোর গ্যাং তৈরী করে অধিপত্য বিস্তার করে আসছিলো এরা বলে অনেকে অভিযোগ করেন।

প্রথম টার্গেট ছিলো শাফির উপর। কিন্তু সেটা আর হলো না । শাফি উপর চলে নির্যাতনের উপর নির্যাতন। তাকে বিভিন্নভাবে মারডাং করে
আসছিলো। বাবা মাকে বলে না দেয়ার জন্য দেশীয় অস্ত্রের মহরা দিতো তারা শাফির বাসার সামনে। এর ভয়ে শাফি বাবা মাকে মারডাং খেলেও বলে নাই। 

ঘটনার দিন ২০ শে মার্চ ২০২১ দুপুরে প্রতিদিনের ন্যায় প্রাইভেট পড়তে গেলে কুড়িগ্রাম কলেজ রোড মদিনা লাইব্রেরী সামনে হাবুর চায়ের
দোকানের ভিতরে নিয়ে যায় কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের ডোম চাকুরী করে রবির ছেলে এসএসসি পরীক্ষার্থী মমিন,আমবাড়ী ঘাট এলাকায় ট্রাক শ্রমিক রিয়াজুলের ছেলে রিয়াদ,গণপূর্ত বিভাগের (অবসরপ্রাপ্ত সুপার ভাইজার) নজরুলের ছেলে এসএসসি পরীক্ষার প্রার্থী মামুন এবং
কুড়িগ্রাম কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের অষ্টম শ্রেনীর ছাত্র টেষ্টির পিছনে বাড়ী কাচামাল ব্যবসায়ী চাঁদ মিয়ার ছেলে লিমন। এরা কিশোর গ্যাং এর সদস্য বলে জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হএরছে ধারনা করা হচ্ছে। 

এরা দীর্ঘদিন থেকে শাফিকে অপহরন করে মোটা অংকের টাকা নিয়ে হত্যা করার পরিকল্পনা করে আসছিলো। অনুসন্ধানে জানা যায়, ঘটনার প্রথম সূত্রপাত হয় গত ২০/৩/২১ তারিখে কলেজ রোডের মদিনা লাইব্রেরীর সামনে হাবুর চায়ের দোকানের ভিতরে কিশোর গ্যাংরা শাফিকে মারধর করে অচেতন অবস্থায় কুড়িগ্রাম সরকারী হাসপাতালে ভর্তি করে। ঘন্টাব্যাপী অক্সিজেন
সাপোর্টে থাকার পর তার স্বাভাবিক জ্ঞান ফিরে আসে। পরে শাফিকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখে বাড়ীতে পাঠিয়ে দেয়। এর পর শুরু হয় দেশীয় অস্ত্রের মহরা শাফির বাসার সামনে। সাংবাদিক পুত্র শাফি ভয়ে বাবা মাকেও বিষয়টি জানায় নাই। 

এরই ধারাবাহিকতায় ১/৪/২১ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঐ কিশোর গ্যাংরা শিশু নিকেতনের সামনে সাইফুলের চায়ের দোকানে শাফিকে
ডেকে নিয়ে গিয়ে মারধর করে এবং পায়ের রগ কাটার উদ্দশ্যে ছুড়ি ধরে ব্লাক মেইলিং করে তার মাকে ফোন করে এরপর শাফি কৌশলে বাসায় চলে আসে। 

ঘটনার বিবরন বাবা মাকে বললে তার বাবা মা কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ খান মোঃ শাহারিয়ার কে জানালে ঘটনার বিষয়টি জিডি করতে বলেন। যার জিডি নং কুড়িগ্রাম সদর থানা ১৪২২ তাং ১/৪/২১।

এই কিশোর গ্যাংটি শাফিকে দীর্ঘদিন থেকে ভয়ভীতি দেখে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৪/১২/২০ সালে সে এনজাইটি নিউরোসিস রোগে ভুগছিলেন। তখন কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন এর সাথে যোগাযোগ করলে তার নিজ বাসভবনে ডাকেন শাফি সহ তার বাবা মাকে। সেখানে শাফিকে অনেক জিজ্ঞাসা করলে তার মাঝে ভয়ের আভাস পায়। তখন সিভিল সার্জন ডাঃ হাবিবুর রহমান কুড়িগ্রাম হাসপাতালে ভর্তি করাতে বলেন। ঐ রাতেই ১৪/১২/২০ তারিখে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে ভর্তি করালে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রের্ফাড করেন দ্বায়িত্বরত চিকিৎসক।

সেখানে সারারাত চিকিৎসা নেয়ারপর ১৫/১২/২০ সকালে রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কেবিন ৯০১ ভর্তি ছিলেন। সেখানে ১ লক্ষ টাকার শারিরিক পরীক্ষা নীরিক্ষা করা হয়। তার শরীরে কোন রোগ ধরা পরে নাই। তার ভিতরে এটি ভয় কাজ করে সব সময় এটি ধারনা করেছিলো ডাঃ। রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সহকারি অধ্যাপক ডাঃ গোলাম
ইউসুফ এর চিকিৎসায় সুস্থ্য হয়ে ১৬/২/২০ তারিখে কুড়িগ্রামে আসেন।

এ সময় ডাঃ গোলাম ইউসুফ বলেন,শাফির ভিতরে একটি ভয় কাজ করছে। সে মানুষিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। এ রকম ভাবে চলতে থাকলে তার জীবনের বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। তাকে হাসি খুশিতে রাখেবেন। 

জেলা প্রেস ক্লাবের সাধারন সম্পাদক আমিনুর রহমান বলেন, ঘটনাটি দুঃখ জনক। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। 

জেলা মডেল প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব ভুট্টু ও রিপোর্টাস ইউনিটির সাধারন সম্পাদক সাজু চৌধুরী এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। 

শাফির বাবা সাংবাদিক মোল্লা হারুন উর রশীদ বলেন, ইতিপূর্বে অনেক মায়ের কোল খালি হয়েছিলো এ রকম কিশোর গ্যাং এর কবলে পরে। আর যেন কোন মায়ের কোল খালি না হয় সে জন্য পুলিশ প্রশাসনের সু -দৃষ্টি কামানা করছি। নাম না প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে ধারনা করছেন এই কিশোর গ্যাং এর মতো আরো অনেক গ্যাং আছে যা কুড়িগ্রাম কালেক্টরেট স্কুলের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মেরে ফেলেছিলো। ইতিপূর্বে ঐ হাসপাতাল পাড়ায় ইমরান মটরস এর মালিকের ছেলের জীবন দিতে হয়েছিলো

এভাবেই কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের নার্সের হাতে জীবন দিতে হয়েছিলো কুড়িগ্রামের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সুলতান মিয়ার ছেলে সে অষ্টম
শ্রেনীর কালেক্টরেট স্কুল এর ছাত্র ছিলো। যত হত্যাকান্ড ঐ হাসপাতাল পাড়া হতে হয়ে থাকে। 

এ ব্যপারে কুড়িগ্রাম সদর থানার এস আই মাজিদুল শাহ, ডোম রবি ও নজরুল কে সদর থানায় তাদের ডেকে এনে মুচলেকা নেন এবং তাদের সন্তানদের শাষণ করতে বলেন। এ ব্যাপারে শাফির পরিবার চরম নিরাপত্তা হীনতায় রয়েছে। 

কুড়িগ্রাম কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ হারুন উর রশীদ মিলন বলেন.কুড়িগ্রামে কিশোর গ্যাং নির্মূল করা হোক। পুলিশ সুপার মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষন করছি। 

নির্যাতিত শাফীর মা জেলা প্রেস ক্লাবের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সাংবাদিক শাহনাজ পারভীন বলেন, আমার ছেলের উপর নির্যাতনের বিচার চাই প্রশাসনের কাছে। 

কুড়িগ্রাম সদর থানার এস আই মজিদুল শাহ্ এ ঘটনার মামলার আইয়ো তিনি বিষয়টি নজর দারীতে নিবিরভাবে পর্যবেক্ষন করছেন। 

কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ খান মোঃ শাহারিয়ার বলেন,পুলিশি টহল জোরদার রয়েছে। বখাটে ও কিশোরগ্যাংদের ধরতে পুলিশ মরিয়া হয়ে মাঠে কাজ করছে।

সময় জার্নাল/এমআই


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল