কৃষ্টির সৎকার
- শেখ ফাহমিদা নাজনীন
অবাক সে একদিন, পথভুল করে, অহেতুক ঘুরে
গিয়ে দাঁড়ালাম ঠাঁই,
শতশত কত মানুষের ভীড়ে, হৈচৈ জুড়ে,
পাথুরে দু'খানা পায়।
কত মানুষের খিলখিল হাসি, ওঠে উদ্ভাসি,
উৎসব ভরা দিনে,
টকটকে লাল, জোরে করতাল, ঢোল-তবলায়
কালসাপ নাচে বীণে।
পাড়াগাঁ, শহরে,গঞ্জে, নগরে, মেলায়, মেলায়
বিকিকিনি চলে ঢের,
মানুষের মন ভেসে যায় স্রোতে, অজ্ঞাত মতে
ভুলেও পায়না টের।
সে ছিলো বোশেখে চড়কের মেলা, পয়সার খেলা,
কৃষ্টির সৎকার,
যাত্রা গানের অযাত্রা রূপ, পান্তার স্যুপ,
সুরুচিতে ফুঁৎকার।
বিহ্বল আমি ঘুরে ঘুরে মরি, পথ খুঁজে ফিরি
মেলার আবর্তে,
দুটি পায়ে যেন মোহের শিকড়, দাঁড়িয়ে অনড়
ভোজবাজি শর্তে।
ধবধবে সাদা, লাল রঙে মিশে ভারি অনায়াসে
ভুলে যায় নিজ রূপ,
ভিন দেশি সুরে বাজে সুমধুরে, মনের মুকুরে
নিজ পরিচয় চুপ।
বাজি পটকার অসহ শব্দে, নতুন অব্দে
বুক করে ধড়ফড়,
বৈশাখী মেলা, উল্লাসী ভেলা, আমিই একেলা
সুপ্রাচীন, সুঅনড়।
প্রাচীনপন্থী ঘরকুণো মন, ভাবে অকারণ
ভুল হয়ে গেলো নাকি?
মানুষের দেহে শেয়াল, কুকুর, প্যাঁচা, শুকর
ঘোরে ফেরে চারিদিকি।
এ পোড়া দু'চোখ, শুধু খাবি খায়, পেতে হাতরায়
সুস্থ মানবশিশু,
পহেলা বোশেখ নিয়ে আসে হায়, সেরে-গণ্ডায়
মানুষ নামের পশু।
পশুর এ মুখোশ খুলে ফেলে যদি ফেরে নিরবধি
মানুষ নামের দলে,
সর্বশ্রেষ্ঠ পরিচয় তার, যেন মনিহার
মুক্ত আকাশ তলে।
শেখ ফাহমিদা নাজনীন
৭ এপ্রিল ২০২২।