ঈদগাহে এসে মেলে
- শেখ ফাহমিদা নাজনীন
উঁচু,নিচু আর ধনী, দরিদ্র
এক হলো এসে ঈদগাহে,
সার্বজনীন ভালোবাসা যেন
উছলিয়ে পড়ে হৃদগাহে।
কেউ পরে আছে ঝালর দোলানো
জরিদার বুটি সালোয়ার,
কারও বা পরনে সস্তা দামের
মোটা চাদর আর পুঁতির হার।
কারও বা মাথায় চকচকে রঙা
ঝকঝকে টুপি হাসছে,
কারও মাথা ছেঁড়া পাগড়িতে বাঁধা
তবু যেন খুশি ভাসছে।
সৈয়দ বাড়ির দহলিজ ঘরে
কোরমা, পোলাও গন্ধ,
এক মুঠো ভাত, বাতাসা, সেমাই
কারও ঘরে আনে ছন্দ।
কোনো ঘরে আসে ঈদের সওদা
জামা, জুতো, শাড়ি, কম্বল,
কারও বা আবার বছরের এদিনে
যাকাত, ফিতরা সম্বল।
রাত, ভোর হতে রান্নার ঘরে
মা-বউদের হৈচৈ,
বড়ো বড়ো বাড়ি, বড়ো বড়ো হাঁড়ি
চাকরে-বাকরে থৈথৈ।
কেউবা রাঁধছে, কেউবা বাটছে,
আনছে মিঠাই বস্তা,
ছোট কুঁড়ে ঘরে এতো তাড়া নেই
সময় এখানে সস্তা।
তবু্ও সময় সংকেত দিলে
ঈদগাহে ছোটে সব্বাই,
সামাজিক ভেদ ভুলে গিয়ে যেন
মিলে যায় এক রাস্তায়।
একই সাথে তারা সিজদায় যায়
একসাথে করে মুনাজাত,
এক আল্লাহই সবার স্রস্টা
তাঁর কাছে নেই জাত-পাত।
রাজা-প্রজা বুকে বুকটি মিলায়
কুশলাদি করে বিনিময়,
ঈদগাহে হয় নতুন করে
ভাতৃত্বের পরিচয়।
হিসাব-নিকাশ, দেনা-পাওনা
সব কিছু ঘরে ফেলে,
মুহাম্মাদের উম্মত যারা
ঈদগাহে এসে মেলে।
শেখ ফাহমিদা নাজনীন
২২ নভেম্বর ২০২১।