মো: মাইদুল ইসলাম : কবির উদ্দিন পরিবারসহ ইকোনো বাসে করে রাজধানীর সায়েদাবাদ থেকে নোয়াখালী যাচ্ছেন। তিনি জানালেন ভাড়া ৭০০ টাকা হলেও তাঁর কাছ থেকে নেয়া হয়েছে ১ হাজার টাকা। বাসে অর্ধেক যাত্রী নেয়ার নির্দেশ থাকলেও এ বাসে দেখা গেছে পাশাপাশি সিটে যাত্রী বসে আছেন। ভাড়া ৬০% বেশি নিলেও বাস ভর্তি যাত্রী নিচ্ছেন তাঁরা। বাসের সুপারভাইজারকে জিগ্যেস করলে তিনি বলেন, মালিক তাদের পূর্ণ যাত্রী নিতে বলেছেন।
একই অবস্থা দেখা গেছে সায়েদাবাদ থেকে ছেড়ে যাওয়া ইউনিক পরিবহণ, শুরমা সুপার, তিশা এক্সক্লুসিভসহ কিছু পরিবহণ নির্দেশনা না মেনে পূর্ণ যাত্রী নিয়ে যাচ্ছেন।
তবে শ্যামলী, হানিফ সহ বেশীরভাগ গাড়িতে দেখা গেছে এক সিট ফাকা রেখে যাত্রী নিয়ে বাস ছাড়ছেন সায়েদাবাদ থেকে।
যাত্রাবাড়ী মোরে গিয়ে দেখা যায় মাওয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া ইলিশ পরিবহণের বাস নিয়ম মেনে অর্ধেক যাত্রী নিচ্ছেন এবং ভাড়া ৬০% বেশি নিচ্ছেন।
আগামীকাল থেকে ৭ দিনের লকডাউন শুরু হচ্ছে দেশে। এদিন থেকেই বন্ধ থাকবে সকল গণপরিবহন, যাত্রীবাহী নৌযান, ট্রেন। এছাড়াও অভ্যন্তরীণ সকল ফ্লাইট বাতিলের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে রাজধানীতে আঁটকে পড়ার ভয়ে তড়িঘড়ি করে ঢাকা ছাড়ছেন সকলে।
একদিকে আগামীকাল গণপরিবহন বন্ধ হওয়ায় ঢাকা ছাড়ার হিড়িক মানুষের ,অপরদিকে করোনা রোধে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী অর্ধেক যাত্রী নিতে হচ্ছে পরিবহনে। এর ফলে তৈরি হচ্ছে তীব্র পরিবহণ সংকট।
একই অবস্থা রাজধানীর মহাখালী বাসস্ট্যান্ড, গাবতলী বাসস্ট্যান্ড, কমলাপুর রেল স্টেশন ও সদর ঘাটে। রাজধানী ঘুরে দেখা গেছে, বাস, ট্রেন ও লঞ্চে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়।
সায়েদাবাদের শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টারে দায়িত্বরত ব্যাক্তি জানালেন, গতকাল সকালে লকডাউন দিতে পারে এমন ঘোষণা আশার পরই শুরু হয় ফোন এবং সরাসরি টিকিট বুকিং। আজকে রাত ১২ টা পর্যন্ত সকল গাড়ির টিকিট ইতোমধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে। অর্ধেক যাত্রী নেওয়ায় অনেকেই টিকিট না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
আগামীকাল থেকে গনপরিবহণ বন্ধের ঘোষণা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হানিফ কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা ব্যাক্তি জানালেন , সরকারি নির্দেশনা তো মানতেই হবে। মালিকরা যদি গাড়ি বন্ধ করতে বলেন তাহলে তারা টিকিট বিক্রি করবেন না।
তবে হঠাৎ বন্ধের ঘোষণায় লোকসানে পড়বে হবে তাদের। গত লকডাউনে তাদের প্রস্তুতি থাকলেও এবার কোন প্রস্তুতি ছাড়াই বাস বন্ধ রাখতে হচ্ছে তাদের।
ঢাকার বাহিরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া বাসগুলোর মত একই অবস্থা রাজধানীতে চলা বাসগুলোরও।
যাত্রাবাড়ী-সায়েদাবে দেখা যায় ট্রান্সসিল্ভা, রাইদা, অনাবিল ইত্যাদি সেটিং সার্ভিস বাসগুলো নির্দেশনা মেনে অর্ধেক যাত্রী নিচ্ছেন। অপর দিকে তুরাগ, শিখড়, বাহদুরশাহ পরিবহণ, বিয়ারটিসি সহ বেশ কিছু লোকাল বাস নিয়ম না মেনে প্রত্যেক সিটে যাত্রী নিয়ে যাছেন। কোন কোন বাসে যাত্রীদের দাঁড়িয়ে থাকতেও দেখা গেছে।
উল্লেখ্য, দেশে করোনার সংক্রমণ রোধে আগামীকাল থেকে এক সপ্তাহের জন্য লকডাউনের ঘোষণা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। আজ রবিবার (৪ এপ্রিল) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। লকডাউনের এই ৭ দিন বন্ধ থাকবে গণপরিবহন, রেল ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট এবং যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল ।
সময় জার্নাল/এমআই