সর্বশেষ সংবাদ
প্রতিষ্ঠার ৪৬ বছর:
ম্যাথুজের সেঞ্চুরি :
বাংলাদেশের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনই সেঞ্চুরি করলেন শ্রীলংকার সাবেক অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ। ম্যাথুজের সেঞ্চুরিতে প্রথম দিন শেষে ৯০ ওভারে ৪ উইকেটে ২৫৮ রান করেছে শ্রীলংকা। দু’বার জীবন পেয়ে সেঞ্চুরি তুলে ১১৪ রানে অপরাজিত আছেন ম্যাথুজ। ২ উইকেটে নিয়ে প্রথম দিন বাংলাদেশের সফল বোলার অফ-স্পিনার নাইম হাসান।
দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথমটি টেস্টে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ফিল্ডিং করতে নামে স্বাগতিক বাংলাদেশ। করোনা ইস্যুতে খেলা নিয়ে শঙ্কা থাকলেও, একাদশে রাখা হয় সাকিব আল হাসানকে। সাকিবসহ পাঁচ বোলার নিয়ে একাদশ সাজায় বাংলাদেশ। সাকিবসহ স্পিন বিভাগে আছেন তাইজুল ইসলাম ও নাইম হাসান। আর পেস বিভাগে আছেন খালেদ আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম। একাদশে সুযোগ হয়নি আরেক পেসার এবাদত হোসেনের। এ বছরের শুরুতে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট জয়ের নায়ক ছিলেন এবাদত।
বল হাতে ইনিংস শুরু করেন শরিফুল ও খালেদ। দিনের পঞ্চম ওভারে রিভিউ হারায় বাংলাদেশ। শরিফুলের ডেলিভারিতে পরাস্ত হন শ্রীলংকার ওপেনার ওশাদা ফার্নান্দো। লেগ বিফোর আউটের আবেদনে সাড়া দেননি নন-স্ট্রাইকের আম্পায়ার। এতে রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। কিন্তু রিভিউতে বেঁচে যান ওশাদা।
দিনের এই প্রথম ৭ ওভারে বাংলাদেশের পেসারদ্বয় শ্রীলংকার উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গতে না পারলে, হঠাৎ করেই অষ্টম ওভারে অফ-স্পিনার নাইম হাসানকে আক্রমনে আনেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মোমিনুল হক।
প্রথম চার বলে কোন রান দেননি নাইম। তবে পঞ্চম বলে করুনারতেœকে লেগ বিফোর আউট করেন নাইম। রিভিউ নিয়েও উইকেটে টিকতে পারেননি লংকান অধিনায়ক। ৯ রানে আউট হন তিনি।
দলীয় ২৩ রানে প্রথম উইকেট পতনের পর জুটি বাঁেধন ওশাদা ও কুশল মেন্ডিস। সর্তকতার সাথে খেলে উইকেটে সেটও হয়ে গিয়েছিলেন তারা। কিন্তু প্রথম সেশন শেষ হবার আগ মুর্হূতে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় সাফল্যও এনে দেন নাইম। নাইমের দারুন এক ডেলিভারিতে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ওশাদা। ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ৭৬ বলে ৩৬ রান করেন ওশাদা। দ্বিতীয় উইকেটে ওশাদা ও কুশল ৮১ বলে ৪৩ রান যোগ করেন।
মধ্যাহ্ন বিরতিতে যাওয়ার ১৬ বল আগে বিদায় নেন ওশাদা। ফলে প্রথম সেশনে ২৪ ওভারে ২ উইকেটে ৭৩ রান তুলতে পারে শ্রীলংকা।
বিরতি থেকে ফিরে দলের রানের চাকা ঘুড়ান কুশল ও অভিজ্ঞ অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ। ৩১তম ওভারে শ্রীলংকার রান ১শতে নিয়ে যান তারা।
উইকেটের সাথে মানিয়ে নিয়ে বাংলাদেশের বোলারদের উপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে থাকেন কুশল ও ম্যাথুজ। ৩৫তম ওভার পর্যন্ত চার বোলার ব্যবহার করেছিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মোমিনুল হক। তখনও আক্রমনে আনা হয়নি সাকিবকে। অবশেষে ৩৬তম ওভারে বল হাতে আক্রমনে আসেন সাকিব।
৪৩তম ওভারে টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৩তম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন কুশল। এজন্য ৯৩ বল খেলেন তিনি।
কুশলের হাফ-সেঞ্চুরির পর স্পিনার তাইজুলের বলে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান ম্যাথুজ। তখন ৩৮ রানে ছিলেন এই ডান-হাতি ব্যাটার।
জীবন পেয়ে দ্বিতীয় সেশনের শেষ ওভারে ৯৪ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে ৩৮তম হাফ-সেঞ্চুরি করেন ম্যাথুজ। ১১১ বলে হাফ-সেঞ্চুরিতে পা রাখেন তিনি। কুশল ও ম্যাথুজের জোড়া হাফ-সেঞ্চুরিতে ৫৬ ওভারে ২ উইকেটে ১৫৮ রান তুলে বিরতিতে যায় শ্রীলংকা। দ্বিতীয় সেশনে কোন উইকেট পায়নি বাংলাদেশ।
তবে হতাশার সেশন কাটানোর পরও মুষড়ে পড়েনি বাংলাদেশ। বিরতি থেকে ফিরেই প্রথম ডেলিভারিতে কুশলের বিদায় নিশ্চিত করেন তাইজুল। তাইজুলের শর্ট ডেলিভারিটি লেগ সাইডে খেলতে গিয়েছিলেন কুশল। কিন্তু ব্যাট-বলের মিলটা ঠিক-ঠাক হয়নি। মিড উইকেটে কুশলের ক্যাচ নেন নাইম। ১৩১ বল খেলে ৩টি চারে ৫৪ রান করেন কুশল। তৃতীয় উইকেটে ম্যাথুজের সাথে ২০৯ বলে ৯২ রান তুলেছিলেন কুশল।
কুশলকে বিদায়ের পরের ওভারে আবারও উইকেট শিকারে মেতে উঠতে পারতো বাংলাদেশ। কিন্তু পেসার খালেদের বলে ম্যাথুজের লেগ সাইডের কঠিন ক্যাচ নিতে পারেননি উইকেটরক্ষক লিটন দাস।
লিটনের জন্য কঠিন হলেও, মাহমুদুল হাসান জয়কে সহজ ক্যাচ দিয়েছিলেন ম্যাথুজ। ৬৫তম ওভারে তাইজুলের তৃতীয় ডেলিভারিটি বুঝতে পারেননি ম্যাথুজ। ফলে তার ব্যাটের কানা ছুঁয়ে সেটি স্লিপে চলে যায়। ঝাপিয়ে পড়েও, ক্যাচ নিতে পারেননি জয়। ফলে ৬৯ রানে জীবন পান ম্যাথুজ।
তবে পরের ওভারে বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেন সাকিব। সাকিবের ডেলিভারি ডিফেন্স করতে গিয়েছিলেন নতুন ব্যাটার ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। বল ব্যাটে লেগে প্যাড ছুঁয়ে ক্যাচ উঠে। তখন প্রথম স্লিপে ছিলেন জয়। প্রথম স্লিপ থেকে সামান্য সামনের দিকে দৌঁড়ে ড্রাইভ দিয়ে ক্যাচ নেন জয়। এবার আর ভুল করেননি তিনি। তবে ক্যাচ আউটের আবেদনের সাড়া দেননি আম্পায়ার। তাই রিভিউ নেন মোমিনুল। রিভিউতে বিদায় হয় ডি সিলভার। ৬ রান করেন তিনি। ১১তম ওভারে এসে প্রথম উইকেট পান সাকিব।
ডি সিলভার আউটের পর ক্রিজে ম্যাথুজের সঙ্গী হন দিনেশ চান্ডিমাল। ব্যাট হাতে সতর্ক থাকলেও, বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারি ঠিকই আদায় করে নেন দুই সাবেক অধিনায়ক। সাকিব-তাইজুলকে ১টি করে ছক্কা মারেন চান্ডিমাল। নাইম-তাইজুলকে তিনটি চার মারেন ম্যাথুজ।
৮১তম ওভারে শরিফুলকে মিড উইকেট দিয়ে চার মেরে টেস্ট ক্যারিয়ারের ১২তম সেঞ্চুরিতে পা রাখেন ম্যাথুজ। বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম সেঞ্চুরিতে পেতে ম্যাথুজের লাগলো ১৮৩ বল। টাইগারদের বিপক্ষে ম্যাথুজের এটি সপ্তম টেস্ট।
সেঞ্চুরির পর দিন শেষে অপরাজিত থকেন ম্যাথুজ। চান্ডিমালের সাথে অবিচ্ছিন্ন ৭৫ রান যোগ করেন ম্যাথুজ। ১৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ২১৩ বলে অপরাজিত ১১৪ রান করেছেন ম্যাথুজ। ২টি ছক্কায় ৭৭ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত আছেন চান্ডিমাল।
বাংলাদেশের নাইম ৭১ রানে ২টি, তাইজুল-সাকিব ১টি করে উইকেট নেন।
স্কোর কার্ড (টস-শ্রীলংকা) :
শ্রীলংকা প্রথম ইনিংস :
ওশাদা ক লিটন ব নাইম ৩৬
করুনারতেœ এলবিডব্লু ব নাইম ৯
কুশল ক নাইম ব তাইজুল ৫৪
ম্যাথুজ অপরাজিত ১১৪
ধনাঞ্জয়া ক জয় ব সাকিব ৬
চান্ডিমাল অপরাজিত ৩৪
অতিরিক্ত (বা-৪, নো-১) ৫
মোট (৪ উইকেট, ৯০ ওভার) ২৫৮
উইকেট পতন : ১/২৩ (করুনারতেœ), ২/৬৬ (ওশাদা), ৩/১৫৮ (কুশল), ৪/১৮৩ (ধনাঞ্জয়া)।
বাংলাদেশ বোলিং :
শরিফুল : ১৩-১-৩৮-০,
খালেদ : ১১-১-৪৫-০ (ও-১),
নাইম : ১৬-২-৭১-২,
তাইজুল : ৩১-৮-৭৩-১,
সাকিব : ১৯-৭-২৭-১।
সময় জার্নাল/ইএইচ
Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.
উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ
কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল