স্পোর্টস ডেস্ক:
ডেভিড মিলার আর রাসি ফন ডার ডুসেন যেন অসম্ভবকেই সম্ভব করলেন! টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আগে ব্যাটিং করা দল স্কোরবোর্ডে দুইশ’র অধিক রান তুলতে পারলে কিছুটা নিশ্চিন্তেই থাকে। কারণ রান তাড়া করতে নেমে দুইশ রান টপকে যাওয়ার ঘটনা তো আর রোজকার দৃশ্য নয়। তবে সেই অসম্ভব ঘটনাটাকেই বাস্তবে রুপ দিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ব্যাটসম্যান।
ভারতের দেওয়া ২১২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৮১ রানের মাঝে প্রথম তিন উইকেট হারিয়ে বসে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে চারে নামা ডুসেন (৭৫*) এবং মিলারের (৬৪*) ঝড়ো ইনিংসে শেষ পর্যন্ত সাত উইকেট ও ৫ বল হাতে রেখেই সেই লক্ষ্যে টপকে যায় প্রোটিয়ারা। তাতে নিজেদের ১৫ বছরের পুরোনো রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে দলটি। ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতর ফরম্যাটে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড এখন এটিই।
দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথম ভারতকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় দক্ষিণ আফ্রিকা। দুই ভারতীয় ওপেনার ঈশান কিষান এবং রুতুরাজ গায়কোয়াড় সেই আমন্ত্রণ সাদরেই গ্রহণ করেন। তাদের দুজনের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে পাওয়ারপ্লেতেই ৫১ রান তোলে ভারত। পাওয়ারপ্লে শেষের পরপরই ওয়েন পারনেলের বলে আউট হয়ে ফিরে যান রুতুরাজ (২৩)।
সঙ্গী হারিয়েও অপরপ্রান্তে ঈশান নিজের সহজাত ব্যাটিং করে গেছেন। তিনে নামা শ্রেয়াস আইয়ারের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে গড়ে তোলেন ৮০ রানের জুটি। এই জুটিতেই ম্যাচে বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় ভারত। দলীয় ১৩৭ রানে ঈশান (৭৬) ফিরে গেলেও ভারতের রানের চাকা সচল রাখেন চার ও পাঁচে নামা অধিনায়ক ঋষভ পন্ত (২৯) এবং সদ্য গুজরাট টাইটান্সকে আইপিএল জেতানো হার্দিক পান্ডিয়া (৩১*)। তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২১২ রানের বড় লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় ভারত। তিন বছর পর দলে ফেরা দীনেশ কার্তিক এদিন অপরাজিত ছিলেন এক রানে।
তবে শেষ পর্যন্ত ওই লক্ষ্যও ম্যাচ জয়ের জন্য যথেষ্ট হয়নি। তার আভাস মিলছিল দক্ষিণ আফ্রিকা ইনিংসের শুরু থেকেই। পাওয়ারপ্লেতে অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা আর ডোয়েইন প্রিটোরিয়াসকে হারালেও তুলে বসেছিল ৬১ রান। তবে পরের চার ওভারে কুইন্টন ডি ককের উইকেটের বিনিময়ে ২৫ রান তুলে কিছুটা বিপাকেই পড়ে গিয়েছিল দলটি। শেষ দশ ওভারে তাই সফরকারীদের প্রয়োজনটা দাঁড়ায় ১২৬ রান।
মিলার-ডুসেনের লড়াইয়ের শুরু সেখানেই। শুরুতে মিলার ছিলেন স্বরুপে। ইনিংসের ১২তম ওভারের শেষ দুই বলে হারশাল পাটেলকে এক ছক্কা আর চার মেরে শুরু, ১৫তম ওভারে ফিফটি পূরণ করেন ২২ বল খেলে। অন্যদিকে ডুসেন অবশ্য চুপচাপই ছিলেন। এ পর্যন্ত ৩০ বল খেলে করেছিলেন ২৯ রান। ভয়ঙ্কর রূপ নিলেন ইনিংসের ১৭তম ওভারে। হারশালের এক ওভারে ২২ রান তুলে আস্কিং রেটটা ১৪ থেকে এক ধাক্কায় নামিয়ে আনেন ১১.৩৩ এ। সঙ্গে সঙ্গে মোমেন্টামটাও ফিরিয়ে আনেন নিজেদের দিকে।
এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি দক্ষিণ আফ্রিকাকে। মিলার আর ডুসেন মিলে ১৮তম ওভারেও তোলেন ২২ রান। তাতে দুই ওভারে ১২ রান প্রয়োজন পড়ে দলটির। সেটা তুলতে দুজন মিলে আর বল খরচ করেন ৭টি। তাতে পাঁচ বল হাতে রেখেই নিজেদের সর্বোচ্চ রান তাড়া করার রেকর্ডটা গড়ে বসে দক্ষিণ আফ্রিকা।
এমআই