ক্যাম্পাস প্রতিনিধি: গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিস্টার ও পরীক্ষা সংক্রান্ত জটিলতা এখনো কাটে নি। ফলে প্রায় তিন সেমিস্টারের ফি ঘাড়ে নিয়েই শিক্ষাজীবন চালিয়ে যেতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। শুধু বর্তমান শিক্ষার্থীরাই নয়, শিক্ষা সংশ্লিষ্ট ফি নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য স্নাতক শেষ করা শিক্ষার্থীরাও। স্নাতক সম্পন্ন করা একাধিক শিক্ষার্থী জানান, চাকরি, বিদেশ গমনসহ বিভিন্ন কারণে সনদ উত্তোলন করতে গেলে তাদেরকে জটিলতায় পরতে হচ্ছে ।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের পদত্যাগের প্রায় ১০ দিন আগে রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ১৪ দফা দাবি মেনে নেয়া হয়, যার মধ্যে অন্যতম একটি দাবি ছিল শিক্ষা সংশ্লিষ্ট ফি কমানো। কিন্তু পরবর্তীতে ২০২১ সালের ২৫ অক্টোবর ফি না কমিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলে ২৬ অক্টোবর থেকে প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা।২০২১ সালের ২৬ অক্টোবর শিক্ষা ও আবাসন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ফি কমানোর দাবিতে প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে আন্দোলন শুরু করে বশেমুরবিপ্রবি’র সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে ২৯ অক্টোবর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মুক্ত আলোচনায় বসেন উপাচার্য ড. একিউএম মাহবুব।
মুক্ত আলোচনা সভায় বেশ কয়েকটি খাতে ফি কমানোর ঘোষণা দেন তিনি এবং আশ্বাস দেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করে বাজেট বৃদ্ধি সাপেক্ষে শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী অন্যান্য ফি পুনঃনির্ধারণ করা হবে।
পরবর্তীতে এ বছরের ২৩ মে ফি পুনঃ নির্ধারণ করা হলেও শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় করোনাকালীন বিবেচনায় পরিবহন ফি সহ কয়েকটি ফি মওকুফের। পরবর্তীতে করোনাকালীন সময় বিবেচনায় রেজিস্ট্রার কর্তৃক ফি মওকুফের বিজ্ঞপ্তি দেয়া হলেও জটিলতা কাটছেই না। শিক্ষা সংশ্লিষ্ট ফি সুস্পষ্ট পুনঃনির্ধারণ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আহ্বান থাকলেও তা এখনো করা হয় নি। ফলে প্রায় তিনটি সেমিস্টারের শিক্ষা সংশ্লিষ্ট ফি মাথায় নিয়েই শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
এ নিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শিমুল সরদার বলেন, কয়েক সেমিস্টারের ফি আটকে রয়েছে। সুস্পষ্ট ঘোষণা ব্যতীত ফি প্রদান করতে পারছি না। অন্যদিকে কয়েক ধাপে ফি প্রদান করলেও তা আগে থেকে জানিয়ে দেয়া প্রয়োজন। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিব চৌধুরী বলেন, তিন সেমিষ্টারের ফি একসাথে আমাদের মত নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানের পক্ষে প্রদান করা অনেক কঠিন হয়ে পরবে। এদিকে এখন থেকেই শিক্ষার্থীরা ফি প্রদান করতে পারবে বলে জানান রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ মোরাদ হোসেন। তিনি বলেন , শিক্ষার্থীরা চাইলে আজ থেকেই ফি প্রদান করতে পারবে। নির্ধারিত ফি এর বিষয়ে সুস্পষ্ট চিঠি বিভাগে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে রেজিস্ট্রারের বক্তব্যের সাথে দ্বিমত পোষণ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিক বিভাগীয় চেয়ারম্যান।
পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান মোঃ রাজিব হোসেন বলেন, আমাদের মেইল করে পুনঃনির্ধারণ ও পরিবহন, চিকিৎসা ইত্যাদি ফি করোনাকালীন সময়ে মওকুফের বিষয়ে জানানো হয়েছে। কিন্তু ঠিক কত টাকা মওকুফ করা হবে, তা সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয় নি। অনেকবার জানতে চাইলে বলা হয়েছে বিভাগ থেকে বিষয়টি নির্ধারণ করতে। তবে সুস্পষ্টভাবে ঠিক কত টাকা শিক্ষার্থীদের দিতে হবে, তা এখনো জানানো হয় নি।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মোঃ আবু সালেহ বলেন, এমন কোনো নির্দেশনা এখনো আমার কাছে আসে নি।
সময় জার্নাল/এলআর