সময় জার্নাল ডেস্ক:
স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালুর মধ্যে দিয়ে নতুন যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে শরীয়তপুরের মাছের খামারিরা। মাত্র এক ঘণ্টার ব্যবধানে রাজধানীর আড়তগুলোতে মাছ পাঠাতে পারবেন তারা। পদ্মা সেতুর কারণে বছরে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার মাছ ঢাকার বাজারে বিক্রি করার আশা করছে খামারি ও মৎস্য বিভাগ।
প্রমত্তা পদ্মার বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা পদ্মা সেতু কেবল একটি অবকাঠামোয় নয়, পুরো জাতির গর্ব।
স্বপ্ন সেতু রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ যেমন গড়ে তুলেবে, তেমনি সুযোগ তৈরি করবে অর্থনৈতিক ভিত্তি মজবুতের। বিশেষ করে শরীয়তপুরের মাছের খামারিরা রাজধানীর বাজার ধরতে পারবে সহজেই।
এক মৎস্য ব্যবসায়ী বলেন, পদ্মা সেতু খোলার পরে আমরা ব্যবসায়ীরা মন-প্রাণ খুলে ব্যবসা করতে পারব। দুই ঘণ্টায় শরীয়তপুর থেকে ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গার আড়তে তাজা মাছ বিক্রি করতে পারব। এর জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।
আবার এই জেলায় বয়ে চলা পদ্মা, মেঘনা ও কীর্তননাশা নদীর ১৫ হাজার ৮৪০ হেক্টর এলাকা থেকেও মাছ শিকার করা হয়। হিসাব বলছে, বছরে এখানে চাষের মাছের উৎপাদন ২৮ হাজার ৫৪৩ মেট্রিক টন। আর ইলিশের উৎপাদন সাড়ে ৫ হাজার মেট্রিক টন। নদীতে অন্যান্য মাছের উৎপাদন ২ হাজর ৯৫৩ মেট্রিক টন।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, পদ্মা সেতু হলে আমাদের আর দুর্ভোগ থাকবে না। আমরা প্রতিদিনের মাছ প্রতিদিনই বাজারজাত করতে পারব। আমরা আশাবাদী, মাছ আগের চেয়ে আরও ভালো দামে বিক্রি করতে পারব।
প্রতি বছর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার মাছ বিক্রি সম্ভব বলে মনে করে মৎস্য বিভাগ।
শরীয়তপুর জেলা মৎস্য কর্মকার বলেন, স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হলে শরীয়তপুরের মৎস্যচাষিরা ব্যাপকভাবে উপকৃত হবে। মৎস্য খাতে উৎপাদন বেড়ে যাবে, মাছ ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সহজেই পৌঁছে দিতে পারবে।
শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসান বলেন, কৃষি ও শিল্প খাতে অনেকে বিনিয়োগ করতে এসেছেন। আশা করছি, আগামী কয়েক বছরের ভেতরে শরীয়তপুর বাংলাদেশের একটি উন্নত জনপদ হিসেবে বিবেচিত হবে।
পদ্মাসেতু উদ্বোধনের খবরে শরীয়তপুরে মাছের খামারে নতুন করে শুরু হয়েছে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বধনের মধ্য দিয়ে রাজধানীতে কৃষিপণ্যের বড় একটি বাজার ধরতে যাচ্ছে মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও ফরিদপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের অধিকাংশ জেলা। আর খামারি ও কৃষকেরা বলছেন, যদি সরকার এদিকে আরেকটু নজর দেয়, তাহলে রাজধানীসহ অন্যান্য অঞ্চলে এই অঞ্চলের কৃষিপণ্য সহজেই তারা পরিবহন করতে পারবে। তাই সরকারের উদ্যোগ নিতে হবে এখনই, এই অঞ্চলের কৃষক ও খামারিদের দিকে আরেকটু সুদৃষ্টি দিতে হবে।
সময় জার্নাল/এলআর