শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়াকে এক দিনের সিরিজে হারাল শ্রীলঙ্কা

মঙ্গলবার, জুন ২১, ২০২২
ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়াকে এক দিনের সিরিজে হারাল  শ্রীলঙ্কা

স্পোর্টস ডেস্ক: আশাহীন লঙ্কাতে প্রাণের সঞ্চার করলেন চরিত আশালঙ্কা। তার শতরানে ভর করে মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়াকে চতুর্থ এক দিনের ম্যাচে চার রানে হারাল শ্রীলঙ্কা। পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিরুদ্ধে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই শ্রীলঙ্কা সিরিজ জিতে নিলো ৩-১ ফলে। গত ৩০ বছরে এই প্রথম ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কা এক দিনের সিরিজে হারাল অস্ট্রেলিয়াকে। এই ইতিহাস রচনার থেকেও ভয়াবহ অর্থনৈতিক সঙ্কটে থাকা শ্রীলঙ্কার এই সিরিজ জয়ের তাৎপর্য অনেক বেশি।

প্রায় দেউলিয়া হয়ে যাওয়া একটি দেশে যেখানে চালের দাম কেজিতে ২২০ রুপি এবং গমের দাম ১৯০ রুপিতে এসে ঠেকেছে, আপেল যেখানে হাজার রুপিতে কেজিতে বিকোচ্ছে, সেখানে এই সিরিজ হওয়া নিয়েই বিরাট প্রশ্ন তৈরি হয়েছিল। নারকেলের দেশে যেখানে নারকেল তেলের দাম লিটারে ৮৫০ রুপিতে এসে ঠেকেছে, সেখানে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন, আদৌ শ্রীলঙ্কার পক্ষে ক্রিকেট সিরিজ আয়োজন করা কি সাজে? যেখানে গোটা দেশ জ্বালানির অভাবে অন্ধকারে ডুবে রয়েছে, সেখানে আলো জ্বেলে দিন-রাতের ক্রিকেট ম্যাচ করা কি উচিত? আশালঙ্কা, ধনঞ্জয় ডিসিলভারা দেখিয়ে দিলেন, খেলাধুলাই পারে বিপদ থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখাতে। প্রেমদাসা স্টেডিয়ামের বাতিস্তম্ভগুলোই দেখিয়ে দিলো, সে দেশে আবার একদিন আলো জ্বলবে।

১৯৯৬ সালে বিশ্বকাপ জিতে ইতিহাস তৈরি করা অর্জুনা রানাতুঙ্গার দলের অন্যতম সফল সেনাপতি রোশন মহানামা হয়ত নেপথ্যে থেকে আশালঙ্কাদের উদ্বুদ্ধ করেছেন। মাত্র দু’দিন আগে তাকে দেখা গেছে পেট্রোল পাম্পের লম্বা লাইনে দাঁড়ানো সাধারণ মানুষের মধ্যে চা এবং বান রুটি বিতরণ করতে। হয়ত এক মাত্র ক্রিকেটই পারে রূপকথার মতো এই দেশের সব দুঃখ ভুলিয়ে দিতে।

অ্যারন ফিঞ্চ টস জিতে শ্রীলঙ্কাকে ব্যাট করতে পাঠান। শ্রীলঙ্কা পুরো ৫০ ওভার খেলতে পারেনি। ৪৯ ওভারে তারা ২৫৮ রানে শেষ হয়ে যায়। জবাবে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস একেবারে শেষ বলে এসে ২৫৪ রানে শেষ হয়ে যায়।

শ্রীলঙ্কা ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকে বিপদে পড়ে। ১০ ওভারের মধ্যে নিরোশন ডিকওয়েলা (১), কুশল মেন্ডিস (১৪), পাথুম নিশঙ্কার (১৩) উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। এর পর ডিসিলভা এবং আশালঙ্কা চতুর্থ উইকেটে ১০১ রান যোগ করেন। আশালঙ্কা ১০৬ বলে ১১০ রানে করেন। তার ইনিংসে ১০টি চার, একটি ছয়। ডিসিলভা ৬১ বলে ৬০ রান করেন। তিনি সাতটি চার মারেন। আর কেউ ভাল রান পাননি। প্যাট কামিন্স, মিচেল মার্শ এবং ম্যাথু কুহনেমান দু’টি করে উইকেট নেন।

রান তাড়া করতে নেমে ফিঞ্চ (০) শুরুতেই ফিরে যান। সমস্যায় পড়ে অস্ট্রেলিয়া। ডেভিড ওয়ার্নার এক দিক ধরে রাখেন। মাত্র এক রানের জন্য শতরান পাননি। তাঁর ১১২ বলের ইনিংসে ১২টি চার রয়েছে। আর কেউ রান তোলার গতি বাড়াতে পারেননি।

এই ম্যাচে দাসুন সনকা মোট আট জন বোলার ব্যবহার করেন। আশালঙ্কা ছাড়া প্রত্যেকে উইকেট পান। ১২ বলে ১৫ রান করা বিপজ্জনক কুহেনমানকে যখন শনকা ফেরান, তখন ৫০ হাজারির প্রেমদাসা আনন্দে উদ্বেল। ১৪ হাজার রুপি দিয়ে এই ম্যাচ দেখতে আসা মানুষ তখন চাল, ডাল, নারকেল তেলের দাম ভুলে গিয়েছেন। গল ফেস গ্রিনের প্রতিবাদী মানব-প্রাচীরই তখন প্রেমদাসায় চলে এসেছে। ক্রিকেট মাঠে তৈরি হওয়া সাত-আট ঘণ্টার উন্মাদনাই তখন কয়েক হাজার মানুষকে তাদের ঘোর অনিশ্চিত ভবিষ্যত ভুলিয়ে দিয়েছে।

শ্রীলঙ্কার অবস্থা যেখানে বিপজ্জনক উইকেটে বড় রান তাড়া করতে গিয়ে ৯ উইকেট চলে যাওয়ার মতো, একটা ছোট ভুল যেখানে ম্যাচ হারিয়ে দিতে পারে, সেখানে আশালঙ্কা, শনকারা দেখালেন কী করে শেষ বল পর্যন্ত দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করতে হয়।

সময় জার্নাল/এলআর


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল