শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

লক্ষ্মীপুরের চররমনী মোহনে কৃষি প্রণোদনা বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ

বুধবার, এপ্রিল ৭, ২০২১
লক্ষ্মীপুরের চররমনী মোহনে কৃষি প্রণোদনা বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ

মো. নিজাম উদ্দিন, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি :

লক্ষ্মীপুরের চররমনী মোহন ইউনিয়নের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রদর্শনী কৃষকের জন্য বরাদ্দকৃত নির্দিষ্ট পরিমানের সার কৃষকদের না দিয়ে তা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে দায়িত্বরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ইয়াসিন আরাফাতের বিরুদ্ধে।

প্রদর্শনীর কৃষকদের নামমাত্র সার দিয়ে বাকী সার কালোবাজারে বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ কৃষকদের। এছাড়া চলতি মৌসুমে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের জন্য বিভিন্ন সময়ে বরাদ্দকৃত বীজ এবং সার বিতরণেও অনিয়ম করেছেন ইয়াসিন আরাফাত।

প্রণোদনাভূক্ত কৃষকরা বীজ এবং সারের নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পর্কে সু-নির্দিষ্টভাবে অবগত না থাকার কারণে পরিমাণের চেয়ে কম বিতরণ করে তা সহজে আত্মসাৎ করতে পেরেছেন কৃষি কর্মকর্তা। ফলে কোন কৃষক এর প্রতিবাদও করেনি বা সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেনি। তবে সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট দফতরের প্রণোদনার প্রাপ্ত তালিকার সাথে মাঠ পর্যায়ে প্রণোদনাভূক্ত কৃষকদের সাথে কথা বলে বীজ-সার আত্মসাৎ এবং অনিয়মের বিষয়টি জানা গেছে।  

অভিযোগ রয়েছে, কৃষি প্রধান এ অঞ্চলের কৃষকরা প্রয়োজনীয় কোন পরামর্শ পাচ্ছে না এ কৃষি কর্মকর্তার কাছ থেকে। ইউনিয়নের কৃষি জমি বিস্তৃর্ণ দুর্গম চরগুলোতে তার দেখা পাচ্ছেনা চাষীরা। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে এবং কৃষকদের সুবিধার্থে সৎ এবং নীতিবান একজন কৃষি কর্মকর্তাকে যেন এ অঞ্চলে দায়িত্ব দেওয়া হয়- এমনটাই দাবি জানিয়েছে কৃষকরা। 

জানা গেছে, ‘নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, চট্রগ্রাম ও চাঁদপুর কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প প্রদর্শনী’র আওতায় চররমনী মোহন ইউনিয়নে বিভিন্ন ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৩ জন কৃষককে প্রদর্শনী প্রকল্প বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ সব প্রদর্শনীর মধ্যে রয়েছে, সয়াবিন, ভুট্টা, বোরো ধান, সরিষা, চীনা বাদাম, মিষ্টি কুমড়া, ফেলন ডাল, মরিচ, বেগুন বরবটি ইত্যাদি। প্রদর্শনীতে ফসল উৎপাদনের জন্য ফসল ভেদে নগদ অর্থের পাশাপাশি বিনামূল্যে বীজ এবং ইউরিয়া. টিএসপি, ড্যাপ, এমওপি, জিপসাম, বোরন এবং জিংক সার কৃষকদের মাঝে প্রদান করা হয়। কিন্তু চররমনী মোহন ইউনিয়নের দায়িত্বরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ইয়াসিন আরাফাত কৃষক প্রতি বরাদ্দকৃত নির্দিষ্ট পরিমান সার বিতরণ না করে অর্ধেক সার বিতরণ করেছেন।  

প্রদর্শনীর কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সয়াবিন চাষের জন্য তারা ২০ কেজির বদলে প্রায় ১৫ কেজি করে ইউরিয়া, ১৫ কেজি টিএসপি, পটাশ (এমওপি) ১৫ কেজি, এবং এক প্যাকেট জিপসাম সারের বদলে আধা কেজি, বোরন সার ২ প্যাকেটের বদলে এক প্যাকেট পেয়েছেন। একই অবস্থা অন্যান্য বরাদ্দকৃত ফসল চাষীদের ক্ষেত্রেও। 

কৃষকরা জানান, কৃষি অফিস থেকে প্রতি কৃষক এবং ফসল ভেদে সরকারীভাবে কি পরিমাণ সার এবং বীজ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা তারা জানতেন না। ফলে কৃষি কর্মকর্তা বরাদ্দ থেকে আত্মসাৎ করতে পেরেছেন। 
ইউনিয়নের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ চর মেঘা এলাকার কয়েকজন কৃষক জানান, নদী থেকে জেগে উঠা চরে ধান এবং সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ করা হচ্ছে। এ সব এলাকায় কৃষি কর্মকর্তার দেখা মেলে না। তাই তারা ফসল উৎপাদন বৃদ্ধিতে সঠিক পরামর্শ নিতে পারেন না। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২০-২১ মৌসুমে চররমনী মোহন ইউনিয়নে কৃষি পুনর্বাসন ও কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও রাসায়নিক সার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। একই অর্থবছরে রবি মৌসুমে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ২২০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে দুই কেজি করে বিনামূল্যে বোরো ধানের হাইব্রিড জাতের বীজ বরাদ্দ প্রদান করা হয়। তবে মাঠ পর্যায়ের এসব বরাদ্দে অনিয়ম করেছেন কৃষি কর্মকর্তা ইয়াসিন আরাফাত।  

অভিযোগের ব্যাপারে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ইয়াসিন আরাফাত কৃষকদের সার কম দেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, সারের বস্তায় ঘাটতি থাকে। তাই দুই-এক কেজি কম দিয়ে ঘাটতি পূরণ করতে হয়। এছাড়া আমরা কৃষকের বাড়ি পর্যন্ত সার পৌঁছে দিই, এজন্য ভাড়া বাবদ খরচ হয়। 

দুর্গম এলাকাতে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, যাতায়াতের অসুবিধার কারণে দুর্গম চরগুলোতে যাওয়া হয়না। তবে কৃষকরা আসলে তাদের পরামর্শ দিয়ে থাকি।  


সময় জার্নাল/ইএইচ


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল