আব্দুন নূর তুষার : পৃথিবী আঞ্চলিক আন্তর্জাতিক সামরিক চুক্তি করে। কিন্তু স্বাস্থ্যচুক্তি করে না। বৈশ্বিক মহামারীর সাথে লড়াই করছে দেশগুলি প্রায় একা একাই। অবিলম্বে টিকা প্রস্তুত করার অনুমতি দেয়া উচিত পৃথিবীর সকল সক্ষম প্রতিষ্ঠানকে।
কাজের বিনিময়ে খাদ্য, কাজের বিনিময়ে টাকা দিতে পারলে , কাজের বিনিময়ে স্বাস্থ্য ভাউচার চালু করা উচিত। যেখানে প্রতিদিন কাজের জন্য স্বাস্থ্য পয়েন্ট জমা হবে এবং সেটা স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে সেবায় রুপান্তরীত করা যাবে।
মহামারীর আগের সময়ের চিন্তা বাদ দিয়ে নতুন চিন্তা না করলে এই মহামারীর পরেও আমরা স্বাস্থ্য নিয়ে খাবি খেতেই থাকবো।
আজকের স্বাস্থ্য দিবসের মূল প্রতিপাদ্য ফেয়ারনেস ও আরো বেশী স্বাস্থ্য অর্জন করতে হলে আমাদের দৃষ্টিভংগী বদলাতে হবে।
স্বাস্থ্য বৈষম্য এক বিরাট সমস্যা। সেটা ভ্যাক্সিন মনোপলি দিয়েই আমরা বুঝতে পারছি। ভ্যাক্সিন কেন কেবল যারা বানিয়েছে তারাই বানাবে? এই ফরমুলা উন্মুক্ত করে দেয়া হোক। প্রয়োজনে জাতিসমূহ একসাথে টাকা দিয়ে কিনে নিক পেটেন্টগুলি। সকল প্রতিষ্ঠান যারা ভ্যাক্সিন বানাতে পারে তারা এটা বানাক।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এই কথা বলেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চেষ্টা করেও পারছে না পরাশক্তিগুলির চাপে। ট্রাম্প সহ অনেকেই তাদের কি বলেছে নিশ্চয়ই আপনাদের মনে আছে?
কর্পোরেট স্বাস্থ্যসেবা বলে কিছু হয় না। কৃমি হলে আমি যে ঔষধ খাবো, বিল গেটসও সেই একই ঔষধ খাবেন। শুধু হাসপাতালটা আলাদা বা দেশ আলাদা হওয়ার কারণে হয়তো চাকচিক্যের তারতম্য হবে।
অথচ আমি ডাক্তারদেরও বলতে শুনি বিএসএমএমইউ কোরিয়ান হাসপাতাল এর নতুন ভবনগুলি থেকে কর্পোরেট স্বাস্থ্যসেবা দেবে। ভাই কর্পোরেট সেবা বলে কিছু নাই। কর্পোরেট সুবিধা বা প্রিভিলেজ হয়, সার্ভিস হয় না। সিইওর পাতলা পায়খানা হলে কি সে অন্য কোন ঔষধ খায়? নাকি সে অন্যভাবে হাগে? সে পয়সা থাকার কারনে বড় এসি বড় কেবিনে বড় টিভি দেখে। বড় কোন কৃমির ঔষধ বা বড় বস্তায় ভরা ওরস্যালাইন খায় না।
স্বাস্থ্য একটি অধিকার। এটা কারো দান না। এটা আমাদের প্রাপ্য। এটা যারা দেয় ও যারা পায় সবার জন্যই এটা দরকার। আর যারা এটা দেয় সেই স্বাস্থ্যসেবাকর্মী ও চিকিৎসকদের জন্য সামাজিক আর্থিক ও মানসিক নিরাপত্তা দরকার।
তবে রোগীরাও ভালো সেবা পাবেন। মানুষের উপকারের জন্যই স্বাস্থ্যব্যবস্থার আমূল সংস্কার দরকার।
লেখক : চিকিৎসক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব