শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

১০২ এ পদার্পণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের

বৃহস্পতিবার, জুন ৩০, ২০২২
১০২ এ পদার্পণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:

শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র এবং জাতীয় আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) প্রতিষ্ঠার ১০১ পেরিয়ে ১০২ বছরে পদার্পণ করেছে আজ। শিক্ষা-গবেষণার বিস্তার, মুক্তচিন্তার উন্মেষ এবং সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নতুন ও মৌলিক জ্ঞান সৃষ্টির লক্ষ্যে পথচলা শুরু হয় ঢাবির। এবারের প্রতিপাদ্য– গবেষণা ও উদ্ভাবন : ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া সহযোগিতা।

৩ অনুষদ, ১২ বিভাগ, ৬০ জন শিক্ষক, ৮৪৭ শিক্ষার্থী এবং ৩ আবাসিক হল নিয়ে ১৯২১ সালের ১ জুলাই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়েছিল। বর্তমানে ১৩ অনুষদ, ৮৪ বিভাগ, ১৩ ইনস্টিটিউট, ১৯৮৬ জন শিক্ষক, প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষার্থী এবং ১৯টি আবাসিক হল ও ৪টি হোস্টেল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের ইতিহাসের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে আছে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৯ এর গণ-অভ্যুত্থান এবং ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং ১৯৯০ এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এই প্রতিষ্ঠানটি। এসব আন্দোলনে অসংখ্য শিক্ষক-শিক্ষার্থী নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। এ ঐতিহাসিক প্রতিষ্ঠানের আনাচকানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ইতিহাস, রচিত হয়েছে ইতিহাসের নানা অধ্যায়।

দিবসটি উপলক্ষে ঢাবির কর্মসূচি

সকাল ১০টার পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল হল ও হোস্টেল থেকে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ শোভাযাত্রা সহকারে শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের খেলার মাঠে সমবেত হবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও হলসমূহের পতাকা উত্তোলন, পায়রা উড়ানো, কেক কাটা এবং সংগীত বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে থিম সং পরিবেশিত হবে।

সকাল ১১টায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে ‘গবেষণা ও উদ্ভাবন : ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া সহযোগিতা’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করবেন। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে উপাচার্য ভবন, কার্জন হল, কলা ভবন ও ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে আলোকসজ্জা করা হয়েছে।

হচ্ছে না গবেষণা-প্রকাশনা মেলা

প্রতিপাদ্যের সাথে মিল রেখে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ১-৩ জুলাই গবেষণা-প্রকাশনা মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলে তা আপাতত হচ্ছে না। আগামী অক্টোবরে এটি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল বলেন, বিভিন্ন ফ্যাকাল্টির প্রস্তুতির ঘাটতি রয়েছে। আমরা যেভাবে মেলাটা করতে চেয়েছি এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে তুলে ধরতে চেয়েছি, সেভাবে প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হয়নি। আমরা চেষ্টা করছি, মেলাটা শুষ্ক মৌসুমে করতে, যাতে লোকজন সহজে আসতে পারে। এর মধ্যে আমাদের বই, জার্নাল ও গবেষণা প্রকল্পগুলো সিংহভাগ সম্পন্ন হয়ে যাবে। এসব বিবেচনা করেই আমরা এটা পিছিয়েছি। আগামী অক্টোবরে এটি অনুষ্ঠিত হবে বলে আমরা আশা করছি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পূর্ব কথা 

বাঙালির আর সব অর্জনের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাও নানা প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়েছিল। বাঙালি নাগরিক সমাজের সঙ্গে ব্রিটিশ সরকারের দীর্ঘ বোঝাপড়ার ফসল এই বিশ্ববিদ্যালয়। বঙ্গভঙ্গ রদের অল্প কিছুদিন পরেই ব্রিটিশ ভারতের তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ ১৯১২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। এই ঘোষণা পূর্ব বাংলার মানুষের মধ্যে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি করে। শিক্ষা, সংস্কৃতি, দর্শন, মননশীলতায় নিজেদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতে থাকে বাঙালি শিক্ষিত সমাজ।

১৯১২ সালের ২৭ মে গঠিত হয় ১৩ সদস্যবিশিষ্ট নাথান কমিশন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাইয়ের দায়িত্ব অর্পিত হয় নাথান কমিশনের ওপর। ১৯১৩ সালে নাথান কমিশনের ইতিবাচক রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। সে বছরের ডিসেম্বর মাসেই রিপোর্টটি অনুমোদিত হয়। এর ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পথ আরও সুগম হয়। কিন্তু এর পরের বছরেই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের দামামা বেজে ওঠে। দীর্ঘদিনের স্বপ্ন-পূরণের পথে শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়ায় এই যুদ্ধ। তবে এত সব প্রতিকূলতার মধ্যেও নাগরিক সমাজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যান।

১৯১৭ সালে স্যাডলার কমিশন ইতিবাচক রিপোর্ট দিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার চূড়ান্ত ধাপ তৈরি হয়ে যায়। অবশেষে ১৯২০ সালের ১৩ মার্চ ভারতীয় আইন সভায় ‘দ্য ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যাক্ট ১৯২০’ পাস হয়। ২৩ মার্চ গভর্নর জেনারেল এই বিলে সম্মতি দেন। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সব সন্দেহের অবকাশ ঘটে। এই আইনকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আইনটির বাস্তবায়নের ফলাফল হিসেবে ১৯২১ সালের ১ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’।

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল