ডাঃ মোঃ রশিদুল হক:
শরীর যেমন বিভিন্ন কারণে অসুস্থ হয় তেমনি মানুষের মনও বিভিন্ন কারণে অসুস্থ হয়ে থাকে। শরীর অসুস্থ হলে আমরা চিকিৎসকের পরামর্শ নেই কিন্তু অনেকেই মনের অসুস্থতাকে গুরুত্ব দেই না এবং মনের চিকিৎসকের কাছে যাই না বা যেতে চাই না। অনেকে লোক লজ্জার ভয়ে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে যেতে চায় না পাছে সবাই তাকে পাগল বলবে বা সামাজিক ভাবে হেয় করবে।
আবার অনেকে মনের রোগ হলে প্রথাগত চিকিৎসা যেমন - ঝাড়ফুঁক, তাবিজ-কবজ বা হুজুর ফকিরের শরণাপন্ন হয়ে জ্বিন-ভুত তাড়ানো চিকিৎসা করে থেকে। এতে মনের রোগ আর জটিল আকার ধারণ করে এবং যার কারণে অনেক রোগী দীর্ঘমেয়াদী কর্মক্ষমতা বা কর্মদক্ষতা হারিয়ে ফেলে।
বিশ্বায়ন, নগরায়ন ও প্রযুক্তির বিকাশের সাথে সাথে মানুষের সাথে মানুষের যোগাযোগ বাড়ছে, বাড়ছে নানাবিধ জটিলতাও, যার প্রভাবে মানুষের উপকারের পাশা-পাশি কুফলও বাড়ছে যা দিন দিন মানুষের মধ্যে মানসিক রোগ বৃদ্ধি করছে।
২০২০ সালের গবেষণায় দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে প্রাপ্তবয়স্কদের ৫ জনে ১ জন মানসিক রোগে আক্রান্ত। ৬-১৭ বছরের শিশু কিশোরের মধ্যে ১৬.৫% মানসিক রোগে আক্রান্ত।
বাংলাদেশেও মানসিক রোগী দিন দিন বাড়ছে ২০০৫ সালের গবেষনায় বাংলাদেশে প্রাপ্ত বয়স্কদের মাঝে ১৬.১% মানসিক রোগে আক্রান্ত ছিল যা ২০১৯ সালের গবেষনায় ১৭% পাওয়া যায়। ২০০৯ সালের এক গবেষনায় দেখা যায়, ৫-১৭ বছরের শিশুদের মাঝে ১৮.৪% শিশু মানসিক রোগে আক্রান্ত।
শরীরের রোগের মতই ভিন্ন বয়সে ভিন্ন ভিন্ন মানসিক রোগ হয়ে থাকে। মানসিক রোগ প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় করা সম্ভব হলে ,রোগ নিরাময়ও বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে সহজ হয়।
তাই মানসিক রোগকে অবহেলা না করে, দ্রুত মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া একান্ত প্রয়োজন।
পাইনেল মানসিক স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে মানসিক রোগ নির্ণয়, সাইকোথেরাপী বা কাউন্সেলিং ও ঔষধ দিয়ে সকল প্রকার মানসিক রোগের বিজ্ঞানভিত্তিক সুচিকিৎসা করা হয়।
ডাঃ মোঃ রশিদুল হক
এমবিবিএস (ডিএমসি), বিসিএস (স্বাস্থ্য)
এফসিপিএস (সাইকিয়াট্রি)
মেম্বার, অ্যামেরিকান সাইকিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশন
সহকারী অধ্যাপক, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ