মুহা: জিললুর রহমান, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরায় মোটা অংকের টাকার চুক্তিতে বিজিবিতে সিপাহী পদে লোক নিয়োগের নামে প্রতারণার অভিযোগে দুই দালালকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে বিজিবি। সোমবার (১৮ জুলাই) বিকালে তাদেরকে আটকের পর মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) দুপুরে শহরের তালতলাস্থ বিজিবি সদর দপ্তরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানায় বিজিবি।
আটককৃত প্রতারক চক্রের দুই সদস্য হলেন, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মুকন্দপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মোঃ ইকবাল হোসেন ও একই উপজেলার কাঠালতলা গ্রামের গোষ্ট পদ সানার ছেলে সুমাল কুমার সানা।
সাতক্ষীরাস্থ বিজিবি ৩৩ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আল মাহমুদ জানান, ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে ৯৯তম ব্যাচের সিপাহী পুরুষ পদে লোক নিয়োগ চলছে। সোমবার দুপুরের দিকে ব্যাটালিয়নের প্রধান গেটের সামনে সুমাল কুমার সানাকে সন্দেহজনকভাবে চলাফেরা করতে দেখে তাকে আটক করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে সদর উপজেলার কাশিনাথপুর গ্রামের মৃত্যঞ্জয় সরকারের ছেলে প্রার্থী ৯৯ জিডি-২৪১২৩৭, সনৎ সরকারকে বিজিবি’র সিপাহী পদে চাকরি দেওয়ার নাম করে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ইকবাল হোসেন ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকার চুক্তি করেছেন। চুক্তি মোতাবেক টাকার বিনিময়ে বিজিবিতে ভর্তির বিষয়ে সনৎ সরকারের সাথে ইকবাল হোসেন ষ্ট্যাম্পে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন এবং সনৎকে ২টি ব্লাংক চেক প্রদান করেন।
পরে সুমাল সানার দেওয়া তথ্য মতে, মুকন্দপুর গ্রামের বাড়ি থেকে আটক করা হয় ইকবাল হোসেনকে। এসময় তার কাছ থেকে ৬টি ব্লাংক স্টাম্প ও ২টি ব্লাংক চেক উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইকবাল হোসেন দীর্ঘদিন চাকরি দেওয়ার নাম করে এ প্রতারণা করে আসছেন বলে স্বীকার করেছেন। মঙ্গলবার দুপুরে আটকদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। বিজিবি অধিনায়ক আরো বলেন, বিজিবিতে সিপাহী পদে ভর্তি কেবলমাত্র সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি ও মোবাইল এসএমএসএ উল্লেখিত তারিখ ও স্থান অনুযায়ী বিজিবি রিক্রুটিং টিমের মাধ্যমেই হয়ে থাকে। বিছিন্ন কোন স্থান, সময় বা ব্যক্তিবর্গের মাধ্যমে নয়।
প্রার্থীর যোগ্যতাবলেই সিপাহী পদে নির্বাচিত হন। কোন ব্যক্তির তদবির, সুপারিশ বা অর্থের বিনিময়ে নয়। কিছুু প্রতারক (দালাল) চক্র এক শ্রেণীর প্রার্থীকে টার্গেট করে বিজিবিতে ভর্তির আশ্বাস দিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবি করে এবং চুক্তিবদ্ধ হয়। অথচ ওই প্রতারক (দালাল) চক্র বিজিবিতে লোক ভর্তির কোন ক্ষমতাই রাখে না। পরবর্তীতে রিক্রুটিং অফিসারের মাধ্যমে প্রার্থী নিজ যোগ্যতাবলে বিজিবিতে চুড়ান্ত ভাবে নির্বাচিত হলে প্রতারক (দালাল) চক্র প্রার্থীর কাছ থেকে অবৈধভাবে টাকা গ্রহণ করে থাকে। সাতক্ষীরা ব্যাটালিয়নের সকল সদস্যগণ সাতক্ষীরা জেলার সীমান্ত সুরক্ষা এবং প্রতারক (দালাল) চক্রের সদস্যদের দমনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সময় জার্নাল/এলআর