মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪

হুমায়ূন কীভাবে বাজে!

মঙ্গলবার, জুলাই ১৯, ২০২২
হুমায়ূন কীভাবে বাজে!

ইমরান মাহফুজ:

হুমায়ূনকে নিয়ে এতো প্রশংসা তিনি বেঁচে থাকলে নিজেও লজ্জা পেতেন। তিনি খুবই লেখক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ তা জানা মানুষ মাত্রই বলবেন। বিশেষ করে তার আয়ত্তের মধ্যে থেকেই  লিখেছেন সারাজীবন। আর আয়ত্তের বিষয় আসা মানেই তার সীমাবদ্ধতা আছে। তা নিয়ে আলাপ নেই কেন?  শিল্প সমাজের কাণ্ডজ্ঞান থাকা এই ক্ষেত্রে জরুরি। সেটাই ধরার চেষ্টা করব... 

শৈশবে গ্রামের মাদ্রাসা স্কুলে দেখতাম ঘন্টা বাজিয়ে ক্লাস শুরু আবার শেষ হতে। কখনো কখনো মেঘ দেখলেই শুনতাম বাজছে ছুটির ঘন্টা। মোলায়েম এক ছেলেবেলা ছিলো। তারপর শৈশব হারাতে হারাতে- একটা গান প্রিয় হয়ে যায়। প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ‘আমি মেলা থেকে তালপাতার এক বাঁশি কিনে এনেছি, বাঁশি তো আর আগের মতো বাজে না। মন আমার কেমন কেন সাজেনা, তবে কি ছেলেবেলা অনেক দূরে ফেলে এসেছি।’ 

সে সময় গানের কথা ঠিকঠাক না বুঝলেও, এইটুকু অনুভব করতাম কত স্মৃতি কত সময় ফেলে এসেছি- অগণিত। সময়ের পরিক্রমায় অনুভূতি বেশ গাঢ় হয়েছে। যেন আমার দেখা জীবন ও হুমায়ূনের চেনানো বইয়ের পৃথিবী দু’টো ‘মম হৃদি যন্ত্র বাজে, পরশে তোমার’ কিংবা ‘শ্যামের-ও বাঁশি বাজে’ এমন।

হুমায়ূন এমনি যাদুকর। ঝংকার তোলে পাঠক হৃদয়ে। যা বাংলাদেশের অনেক পড়ুয়ার শৈশবের সঙ্গে মিশে আছে, থাকবে। বিনি সুতরা টানে ধরে রাখবে! পাঠকের পাঠশালায় নেশার নাম হুমায়ূন। যিনি মোহগ্রস্থ করে রাখে চরিত্রের ক্যানভাসে। গল্পে গল্পে পাঠক হেঁটে চলে ঘরে বাইরে। কী মধুর যন্ত্রণা। হূমায়ূনকে এড়ানো যায় না, আজও যাচ্ছে না।

কথাসাহিত্য ছাড়া বিশেষ করে তাঁর গান শুনতে ও নাটক দেখতেই ইচ্ছে করে সব বয়সীদের। তাঁকে নিয়ে অনেক আলাপ- অনেক বাদানুবাদ। লেখনি ও চরিত্র নিয়ে বন্ধুদের মাঝে ভাগ হয়ে যাওয়া। প্রকাশকদের মধ্যে এখনো আকর্ষণীয়। নানান রঙে নানান আলপনায় সাজায় মেলার বিভিন্ন স্টল। তাঁর উৎসাহে যেন অন্য বইগুলো অন্তত পাঠক দেখে সংগ্রহ করেন।
আর পাঠক মাত্র জানেন বঙ্কিম, রবীন্দ্রনাথ ও শরৎচন্দ্রের পরে সবচেয়ে জনপ্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদ। আর কতটা জনপ্রিয় হলে একটি নাটকের চরিত্র, যাঁকে নাটকেই ফাঁসি দেওয়া হবে জেনে হাজার হাজার দর্শক রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করে, সে দিন ঢাকা কলকাতার গণমাধ্যমে সে খবর বড় করে প্রকাশ হয়েছিল। ব্যাপারটা বিস্ময়কর আজও। তাছাড়া আশি আর নব্বইয়ের দশকে ইন্টারনেট আর স্যাটেলাইট টিভির প্রচলন খুব ছিলো না বলেও; সুস্থ্য বিনোদনের মাধ্যম বই বেশি ছড়িয়ে পড়েছে।

ফলত বাংলাদেশের জন্ম ও হুমায়ূন আহমেদের লেখক জীবনের কীর্তি পারস্পরিক আনন্দের। দেখা যায়- রাষ্ট্রের অবকাঠামো তৈরী হচ্ছে- ভাষা আন্দোলন মুক্তিযোদ্ধের চেতনায়, ইতিহাস ঐতিহ্য নিমার্ণ হচ্ছে; একই সাথে বইপড়ুয়ারা দেশীয় লেখককের দেশী ভাষায় চারপাশকে জানছে- সামাজিক পারিবারিক অনুভূতি নিয়ে ভাবনার সুযোগ পাচ্ছে। ফলে পাঠক নন্দিত লেখক আজ হয়তো নেই কিন্ত রাষ্ট্র আছে থাকবে- যেমন আছে তাঁর অগণিত পাঠক ও সৃজন মায়ার সংসার। বহমান থাকবে কাল থেকে কালান্তর- বাংলাদেশ ও রাষ্ট্রভাষা যতদিন।

আমরা বিশ্বাস করি শিল্প ও শিল্পী টিকে থাকে সম-আলোচনায়। কালজয়ী হুমায়ূন নিয়ে অনেক মৌখিক সমালোচনা হয়েছে। লিখিত সমালোচনা থাকুক- সেই প্রেক্ষিতে উদ্যাগ। সূচিবদ্ধ প্রবন্ধগুলো তাঁর সাহিত্যভাবনা ও চিন্তাচর্চার ধারাক্রম স্পষ্ট করবে। আলোচকরা নতুন দিগন্ত উন্মোচন করার চেষ্টা করেছেন। এতে হুমায়ূনের লেখালেখির উপকরণ, প্রকরণ ও সীমাবদ্ধতা নিয়েও আলোচনা করেছেন। বিচিত্র চিন্তাসমৃদ্ধ প্রকাশনাটি পাঠক মাত্রই উপকৃত হবেন।

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল