শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

চবিতে যৌন নিপীড়ন

রেজিস্ট্রার সবাইকে নিয়ে পদত্যাগ করবেন যদি চার কার্যদিবসের মধ্যে শাস্তি না হয়

বুধবার, জুলাই ২০, ২০২২
রেজিস্ট্রার সবাইকে নিয়ে পদত্যাগ করবেন যদি চার কার্যদিবসের মধ্যে শাস্তি না হয়



সময় জার্নাল ডেস্ক:চার কার্যদিবসের মধ্যে শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করার ঘোষণা দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম মনিরুল হাসান। এটা করতে না পারলে প্রক্টর ও প্রক্টোরিয়াল বডির সদস্যদের নিয়ে পদত্যাগ করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। তাঁর এই প্রতিশ্রুতির পর বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিক্ষোভ থামিয়ে হলে ফিরেছেনছাত্রীরা।তিন দিন আগে ক্যাম্পাসে এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে আন্দোলন করছিলেন শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্রীদের রাত ১০টার মধ্যে হলে ফেরার সময়সীমা বেঁধে দেয়।



এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন করে ক্ষোভ দেখা দেয়। বুধবার দিনে ক্যাম্পাসে বিভিন্ন কর্মসূচিতে এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানানো হয়। সেখানে বলা হয়, যৌন নিপীড়নের মতো অপরাধের সঙ্গে জড়িত কাউকে শনাক্ত না করে উল্টো ছাত্রীদের চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার ও ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি নিয়ে রাতে প্রীতিলতা হলের একদল ছাত্রী উপাচার্য শিরীণ আখতারের কাছে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।


রাত পৌনে ১০টার দিকে ৩০–৩৫ জন ছাত্রী উপাচার্যের বাসভবনের দিকে যাত্রা করলে প্রক্টোরিয়াল বডির সদস্যরা এসে তাঁদের পথ আটকান। একপর্যায়ে ক্ষুব্ধ ছাত্রীরা ওই হলের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁরা অবিলম্বে প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়ার পদত্যাগ দাবি করেন। পরে হল থেকে বেরিয়ে অপর ছাত্রীরা বিক্ষোভে যোগ দেন। রাত ১১টার পর ছাত্রীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। শতাধিক ছাত্রী সেখানে বিক্ষোভে অংশ নেন।


ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নে জড়িতদের শাস্তি, ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা। একপর্যায়ে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মনিরুল হাসান ঘটনাস্থলে এসে তাঁদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। পরে তিনি লিখিতভাবে চার কার্যদিবসের মধ্যে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত, আর তা না করতে পারলে পদত্যাগ করার প্রতিশ্রুতি দেন। এরপর রাত ১২টা ৩৫ মিনিটের দিকে হলে ফিরে যান ছাত্রীরা।


গত রোববার রাত সাড়ে নয়টায় ক্যাম্পাসে পাঁচ তরুণের হাতে এক ছাত্রী যৌন নিপীড়ন ও মারধরের শিকার হন। ওই ছাত্রীর ভাষ্যমতে, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের পোশাক ও কথাবার্তা শুনে মনে হয়েছে, তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় পাঁচ তরুণ ওই ছাত্রীকে বেঁধে বিবস্ত্র করে মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা এক বন্ধু প্রতিবাদ করলে তাঁকেও মারধর করা হয়। পরে মুঠোফোন ও মানিব্যাগ রেখে দুজনকে ছেড়ে দেন ওই তরুণেরা।


চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের যৌন হয়রানি ও হেনস্তার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। এর আগে গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর ক্যাম্পাসের ভেতরে দুই ছাত্রীকে হেনস্তার শিকার হয়েছিলেন।ক্যাম্পাসে ছাত্রীদের যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী স্বাগতমী বড়ুয়া বলেন, ‘হলের পাশেই আমরা নিরাপদ নই। তাহলে নিরাপদ কোথায়? বারবার হেনস্তা থেকে শুরু করে ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা পর্যন্ত ঘটছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসন এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। এসব ঘটনায় আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’রোববারের যৌন নির্যাতনের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা পাঁচজনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন ভুক্তভোগী ছাত্রী। তবে এখন পর্যন্ত ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে চিহ্নিত করতে পারেনি পুলিশ।


হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, বুধবার বিকেলে ওই মামলা হয়েছে। তবে তাঁরা আগে থেকেই বিষয়টি নজরে রেখেছিলেন। ইতিমধ্যে তদন্তও শুরু করেছেন।ছাত্রলীগ সভাপতিকে শোকজ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি রেজাউল হককে শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। মঙ্গলবার রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের স্বাক্ষর করা এ নোটিশ দেওয়া হয়। 


তবে রেজাউল হককে শোকজের সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করেননি কেন্দ্রীয় নেতারা।এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ নেতা রেজাউল হক প্রথম আলোকে বলেন, তাঁকে কেন কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে তা তিনি জানেন না৷ এ বিষয়ে জানতে ও জবাব দিতে তিনি ঢাকা যাচ্ছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় শাখাছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াস বলেছেন, যৌন নিপীড়নের ঘটনায় ওই ছাত্রী গত সোমবার লিখিত অভিযোগ দিতে গেলে রেজাউল হক বাধা দিয়েছেন বলে তিনি শুনেছেন। 


এর আগে গত বছর ২১ সেপ্টেম্বর তাঁর চার অনুসারীর বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে সংগঠন পরিপন্থী বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তাই তাঁকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ শোকজ করে থাকতে পারে।যৌন নিপীড়নের শিকার ছাত্রীকে বাধা দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রেজাউল হক বলেন, ওই ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনার পর তাঁকে ফোন করে জানিয়েছিলেন। তিনি তাঁর সাহায্যের জন্য গিয়েছিলেন। কোনো বাধা দেননি। তিনি প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়াকে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত শনাক্ত করতে বলেছেন বলে দাবি করেন।


সময় জার্নাল/এসএম







Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল