স্পোর্টস ডেস্ক:
ইংলিশ ক্রিকেটার মঈন আলীর ধর্মভীরুতার কথা অজানা নয় কারোর। ইসলামী বিধান পালনের তাগিদে কোনো নারী সাংবাদিকের দিকে তাকান না তিনি। সাক্ষাৎকারের সময় কথা বলেন অন্য দিকে তাকিয়ে। রোজা অবস্থায়ই ক্রিকেট মাঠে দাপিয়ে বেড়ান মঈন। খেলার ফাঁকে আদায় করে নেন নামাজ। স্কাই স্পোর্টসের সাক্ষাৎকারে পাকিস্তান বংশোদ্ভূত এই ইংলিশ অলরাউন্ডার জানালেন, ইসলামই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তার কাছে। একইসঙ্গে ইংল্যান্ডের ড্রেসিংরুমে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের সহাবস্থানের প্রশংসা করেছেন মঈন।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে লড়ছে ইংল্যান্ড। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডের ইনিংস বিরতিতে নিজেদের ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে কথা বলতে স্কাই স্পোর্টসের ক্যামেরার মুখোমুখি হন মঈন আলী ও আদিল রশিদ। স্কাই স্পোর্টসের পক্ষ থেকে এউইন মরগান নেন সাক্ষাৎকারটি। সেখানে ধর্মবিশ্বাসের গুরুত্ব নিয়ে মঈন বলেন, ‘এটা আমার ও আমার পরিবারের সবকিছু।
আমাদের প্রথম প্রাধান্য থাকে এতে। ক্রিকেট বলুন বা অন্য কিছু বলুন, বাকি সব তার পরে আসে।’
মঈন জানান, ধর্ম পালন করতে গিয়ে ক্রিকেটে অমনোযোগী হচ্ছেন না তিনি, ‘ইসলামকে সবার আগে রাখার কারণে অন্য কিছু যেমন ক্রিকেটের প্রতি প্রাধান্যটা কমে যাচ্ছে না। এটা নেহায়েতই আমাদের ব্যক্তিগত বিষয়।’
খ্রিষ্টান অধ্যুষিত দেশ ইংল্যান্ডের ক্রিকেট দলে অনুমিতভাবেই অধিকাংশ খেলোয়াড় খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বী। মঈন আলী জানান, ইংল্যান্ডের ড্রেসিংরুমে সকল ধর্মের লোকজন সহাবস্থান করে, ‘আমাদের দলের বৈচিত্রটা বেশ ভালো যে কেউ ড্রেসিং রুমে যেকোনো পরিচয়, ভিন্নতা নিয়ে আসতে পারে। আর সবাই এখানে খুব সহজেই মানিয়ে নিতে পারে।’
পবিত্র হজ্জ পালনের জন্য ভারত সিরিজে ছিলেন না আদিল রশিদ। এজন্য ইসিবি এবং কাউন্টি দল ইয়র্কশায়ারের কাছ থেকে সহজেই ছুটি পান ইংলিশ স্পিনার। ক্রিকেট বোর্ড ও কাউন্টি দলের সানন্দে ছুটি দেয়ার বিষয়টির প্রশংসা করেছেন আদিল। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি ইসিবি এবং তোমার (অধিনায়ক মরগান) সঙ্গে কথা বলেছিলাম। ইসিবি আর ইয়র্কশায়ারের পক্ষ থেকে যে সমর্থন, যে উৎসাহটা আমি পেয়েছি তা অমূল্য। সিদ্ধান্তটা সহজ ছিল, খুব বেশি ভাবতে হয়নি আমাকে।’
এবারই প্রথ হজ্জ পালন করলেন আদিল রশিদ। প্রতি বছর ক্রিকেটের ঠাসা সূচির কারণে সুযোগ হয়ে উঠছিল না তার। এবছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আর কাউন্টি ক্রিকেটের চাপ কম থাকায় হজ্জ পালনের সিদ্ধান্ত নেন আদিল। হজ্জ পালনের অনুভূতির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অবিশ্বাস্য একটা অভিজ্ঞতা। মুসলিম হিসেবে এটা আমাদের অবশ্য কর্তব্য। যদি আপনার সামর্থ্য থাকে, শারীরিক আর মানসিকভাবে সবল থাকেন, তাহলে এটা করতে আপনাকে। অনেক দিন ধরেই হজ্জ করতে চেয়েছি। তবে ক্রিকেটের কারণে পারছিলাম না।’
আদিলের মক্কায় যাওয়ার পর হজ্জ প্রসঙ্গে ড্রেসিংরুমে উৎসুক সতীর্থদের প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন মঈন আলী। হজ্জ নিয়ে তিনি বলেন, ‘হজ্জ ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের একটি। এটা আপনাকে ধৈর্য ধরার ও আপনার যাই আছে তার জন্য স্রষ্টাকে ধন্যবাদ জানানোর শিক্ষা দেয়। ক্রিকেটার হিসেবেব আমাদের রোলমডেল আছেন অনেকে। মুসলিম হিসেবে নবী-রাসূলগণ হলেন আমাদের রোলমডেল। রোজা রাখা, নামাজ আদায় ইত্যাদি বিষয়ে আমরা তাদের যথাসম্ভব অনুসরণ করার চেষ্টা করি।’
এমআই