স্টাফ রিপোর্টারঃ
ঈদ ও বর্তমান কোভিড পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে এবং যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে আজ সকালে কারওয়ান বাজারস্ত পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে “বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস-২০২২” পালিত হয়েছে। জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (UNFPA) কর্তৃক নির্ধারিত এবারের প্রতিপাদ্য ছিল A world of 8 billion: Towards a resilient future for all-Harnessing opportunities and ensuring rights and choice for all যার বাংলা ভাবান্তর হলো ‘৮০০ কোটির পৃথিবী: সকলের সুযোগ, পছন্দ ও অধিকার নিশ্চিত করে প্রাণবন্ত ভবিষ্যৎ গড়ি’। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের আওতাধীন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর উপজেলা, জেলা, বিভাগ ও জাতীয় পর্যায়ে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে অত্যন্ত আড়ম্বরপূর্ণভাবে দিবসটি উদযাপন করেছে। আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণ ও সেবাকেন্দ্রে বিশেষ সেবা প্রদান ছিল উল্লেখযোগ্য। জাতীয়ভাবে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আইইএম ইউনিট কনফারেন্স কক্ষে আয়োজিত এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চ্যুয়ালি উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক, এমপি।
এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অনলাইন জুম প্লাটফর্ম থেকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, বিশ্বে এখন ৭৯৬ কোটি মানুষ রয়েছে, আগামী নভেম্বরেই বিশ্বের জনসংখ্যা ৮০০ কোটি হবে। বিশ্বে জনসংখ্যার ধারণ ক্ষমতা এক হাজার থেকে ১২’শ কোটি। সুতরাং জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে বিশ্ববাসীকে এখনই ভাবতে হবে। বাংলাদেশে এখন ১৬ কোটি ৫০ লাখের মত জনসংখ্যা আছে। ১৯৭৪ সালের ১ম আদম শুমারির সময় ৭ কোটি ১৫ লাখ মানুষ ছিল। গত ৫০ বছরের কম সময়ে দেশের জনসংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রতি বছর এখন ২০ লাখের মতো কর্মজীবী হবার উপযুক্ত মানুষ আমাদের সমাজে প্রবেশ করছে। এই বিরাট সংখ্যক নতুন কর্মহীন মানুষের জন্য কর্মসংস্থান নিয়ে সরকারকে ভাবতে হচ্ছে। একই সঙ্গে দেশের সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের স্বাস্থ্য সেবা, পুষ্টির নিশ্চয়তা নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। করোনায় গোটা বিশ্বের অর্থনীতি ভেঙ্গে পড়েছে। বাংলাদেশ করোনা মোকাবিলায় বিশ্বে ৫ম হয়েছে ঠিকই, কিন্তু বিশ্বের অন্য দেশগুলোর অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব এখন বাংলাদেশেও পড়তে শুরু করেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে গোটা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও তেল, গ্যাস ও বিদ্যুৎসহ অন্যান্য অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বর্তমানে ১ কোটির বেশি বাংলাদেশী জনশক্তি কর্মরত থাকলেও তাদের অধিকাংশই প্রশিক্ষিত না থাকায় তারা বিদেশে বেশি বেতনে কাজ করতে পারছে না। তার উপরে গত ৩ বছরের করোনার প্রভাবে অনেক দেশেই এখন জনশক্তি নিতে আগ্রহী নয়। এসব কারণে আমাদের বর্তমান সরকারকে জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি দেশের মানুষকে কর্মমূখী করার উদ্যোগ হাতে নিতে হচ্ছে। আমাদের সম্পদ সীমিত। এই সীমিত সম্পদ দিয়েই দেশের মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে, শিক্ষা সুবিধাসহ স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেবা দিতে হবে। অনুষ্ঠানে শ্রেষ্ঠ পরিবার পরিকল্পনা কর্মী, শ্রেষ্ঠ সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠান এবং পরিবার পরিকল্পনা মিডিয়া এওয়ার্ড-২০২২ পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে পুরস্কার ও ক্রেস্ট তুলে দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ জনসংখ্যা দিবস-২০২২ এর প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে পরিবার পরিকল্পনা এবং মা ও শিশু স্বাস্থ্য সেবাসহ কোভিড পরবর্তী সচেতনতা বাড়ানোর গুরুত্ব তুলে ধরে বক্তব্য প্রদান করেন।
এমআই