স্পোর্টস ডেস্ক:
আবারো মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের নেতৃত্ব নিয়ে চলছে তীব্র আলোচনা। ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপের পর গুঞ্জন ছিল তিনি আর অধিনায়ক থাকছেন না। কিন্তু নিরুপায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড তার বিকল্প খুঁজে পাননি। দায়িত্বে বহাল থাকেন মাহমুদুল্লাহ। এরপর থেকে দেশে-বিদেশে টাইগাররা ১২টি ২০ ওভারের ম্যাচ খেলেছে। কিন্তু জয় পেয়েছে মাত্র ১টিতে। সবশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে সিরিজ হারের পর তার অধিনায়কত্ব আরও একবার প্রশ্নবিদ্ধ হয়। তার ওপর ফর্মেও নেই এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। শেষ ১৪ ম্যাচে তার ব্যাট থেকে কোন ফিফটির দেখা মেলেনি। ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ একটি ইনিংসে করেছেন অপরাজিত ৩১ রান।
বল হাতেও ব্যর্থ। সব মিলিয়ে তিনি এখন অনেকটা দলের বোঝা। ক্যারিবীয় সিরিজ শেষে দেশে ফিরেই টাইগাররা যাবে জিম্বাবুয়েতে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে। সেখানেও রিয়াদের নেতৃত্ব দেয়ার কথা। তবে গুঞ্জন রয়েছে তাকে বিশ্রাম দেয়া হবে। বিকল্প হিসেবে তরুণ কাউকে নেতৃত্ব দিয়ে পাঠনো হবে এই সফরে। আর আসন্ন এশিয়া কাপে দলের নেতৃত্বে ফেরানো হবে সাকিব আল হাসানকে। তবে রিয়াদকে এবার বিশ্রাম না দিয়ে টি-টোয়েন্টি থেকে নির্বাসন দেয়া হতে পারে।
এমনটারই জোরালো সম্ভাবনা।
যদিও জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু এখনই কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন। তিনি বলেন, ‘রিয়াদ জিম্বাবুয়ে সফরে যাবে কিনা এটি নিয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি। কাল (আজ) আমরা মিটিংয়ে বসে নিদ্ধান্ত নেবো। রিয়াদকে দলে রাখা হবে না এমন কোনো সিদ্ধান্তও হয়নি।’
অন্যদিকে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন কিছুদিন আগেই সংবাদ সম্মেলনে মাহমদুল্লাহ রিয়াদের টি-টোয়েন্টি নেতৃত্ব নিয়ে ভাবার কথা বলেছেন। জানিয়েছেন, দেশে ফিরে এলেই কথা বলবেন রিয়াদের সঙ্গে। কিন্তু এরই মধ্যে বিসিবি সভাপতি আইসিসির সভায় অংশ নিতে চলে গেছেন দেশের বাইরে। রিয়াদ আজ দেশে ফিরবেন। যদি জিম্বাবুয়ে সফরে তিনি দলে থাকেন তাহলে ২৭শে জুন ফের দেশ ছাড়বেন। বিসিবি সভাপতি বলেছিলেন, ‘টি-টোয়েন্টিতে হুট করে কিছু পরিবর্তন করে যে খুব একটা লাভ হবে তা মনে হয় না। এখানেও লং টার্মে ভাবতে হবে। অধিনায়কত্বের বিষয়ে আজ বলা কঠিন। সিদ্ধান্ত নিতে এক মাস চলে যাবে। অধিনায়ক আসবে, তাদের সঙ্গে বসতে হবে।’ শেষ পর্যন্ত যদি বিসিবি সভাপতি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনই না নিয়ে থাকেন তাহলে হয়তো এই যাত্রায় আরো একটি সুযোগ পাবেন মাহমদুল্লাহ। আর তা না হলে তার নির্বাসন অনেকটাই নিশ্চিত।
শুধু তাই নয়, গুঞ্জন রয়েছে হয়তো সদ্য বিদায়ী টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হকের মতো অদৃশ্য চাপে রিয়াদ নিজেই নেতৃত্ব ছাড়ার ঘোষণা দিতে পারেন। আর ৩ মাস পরেই অস্ট্রেলিয়ায় বসতে যাচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপ আসর। এই সল্প সময়ে নেতৃত্ব পরিবর্তন করে বিসিবি তেমন কোনো লাভ হবে না মনে করলেও রিয়াদের ফর্মহীনতা বিবেচনায় নিয়ে দায়িত্ব সাকিবের হাতেই তুলে দিতে পারে।
যদি মাহমুদুল্লাহ জিম্বাবুয়ে সফরে না যান তাহলে দলের নেতৃত্ব কে দেবেন? শোনা গেছে নুরুল হাসান সোহান কিংবা লিটন কুমার দাসকে দেয়া হতে পারে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কের দায়িত্ব। এরপর অবশ্য এশিয়া কাপে দেখা মিলতে পারে সাকিব আল হাসানের। যদি তিনি এই ফরম্যাটে নেতৃত্ব নিতে রাজি হন। অন্যদিকে জিম্বাবুয়েতে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য এরই মধ্যে ২৪ ক্রিকেটারের ‘জিও’ হয়েছে। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু মঙ্গলবার রাতেই জানিয়ে দিয়েছেন, ২১ জুলাই বৃহস্পতিবার জিম্বাবুয়ে সফরের দল ঘোষণা হতে পারে। তার আগে দল নিয়ে চলবে আলোচনা। যদিও জানা গেছে জিম্বাবুয়ে সফরে দল নিয়ে কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হচ্ছে না। সিনিয়রদের বিশ্রাম দিয়ে তরুণ ও নতুনের মিশেলে কম শক্তির দল পাঠানোর সম্ভাবনা নেই, তাও মোটামুটি নিশ্চিত। জিও করানো হয়েছে দলের সিনিয়র ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহীম ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদেরও।
আর ৩ মাস পরেই অস্ট্রেলিয়ায় বসবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আসর। এই সল্প সময়ে নেতৃত্ব পরিবর্তন করে বিসিবি তেমন কোন লাভ হবে না মনে করলেও রিয়াদের ফর্মহীনতা বিবেচনায় নিয়ে দায়িত্ব সাকিবের হাতেই তুলে দিতে পারে।
এমআই