ধর্ম ডেস্ক:
ইয়ারমুকের যুদ্ধের পর মুসলিমরা বৃহত্তর সিরিয়াসহ আশেপাশের অনেক অঞ্চল জয় করে নেয়। যুদ্ধের পর হযরত উমর (রা.) আশারায়ে মুবাশশারা সাইদ ইবনে জায়েদকেই রা. দামেস্কের গভর্নর হিসেবেও নিয়োগ দেন। কিন্তু রাজা-বাদশাহ হওয়ার মতো ন্যূনতম মানসিকতাও তার মাঝে ছিল না।
হযরত সাইদ ইবনে জায়েদ রা. সবসময় রাস্তায় থাকতে পছন্দ করতেন, কাজ করতে করতে ধুলোয় মলিন হয়ে যাওয়াই ছিল তার পছন্দ। তাই দামেস্কের মতো জায়গায় তিনি ঠিক খাপ খাওয়াতে পারছিলেন না। কেননা, তৎকালীন সময়ের দামেস্ক ছিল বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত ও প্রসিদ্ধ শহর। এই শহরে তখুনি অনেক বড়ো বড়ো স্থাপনা, দালান কোঠা ছিল। সুন্দর সুন্দর বাগান ছিল। দামেস্ক তখনো তার উন্নতি ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য বিখ্যাত ছিল। আর এই শহরের কেন্দ্রস্থলে থাকা সম্রাট সিজারের পরিত্যাক্ত প্রাসাদটিকেই হযরত সাইদের (রা.) জন্য ঠিক করা হলো।
হযরত সাইদ বিন জায়েদ (রা.) কোনোভাবেই নিজেকে সেই বিলাসিতার সাথে খাপ খাওয়াতে পারছিলেন না। যুদ্ধক্ষেত্রে আর দ্বীনের ময়দানে অবাধ বিচরণ করা যার অভ্যাস, বিলাসী প্রাসাদে তিনি নিজেকে কীভাবে সামাল দেবেন? হযরত সাইদ বিন জায়েদ (রা.) প্রতিদিন প্রাসাদের ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে অস্থির মনে পায়চারি করতেন। তিনি নিজের সাথে কথা বলতেন আর ভাবতেন, “এই সব কাজ আমার জন্য নয়। আমি কাজ করতে চাই। দ্বীনের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দিতে চাই।”
এই প্রেক্ষিতে হযরত সাইদ বিন জায়েদ (রা.) খলিফা উমরকে (রা.) চিঠি লিখলেন, “হে আমীরুল মুমিনিন। আমি এই প্রাসাদে বসে থেকে নিজেকে দ্বীন ইসলামের, আপনার এবং অন্যন্য সম্মানিত সাহাবিদের সেবা থেকে বঞ্চিত করতে চাই না। তাই আপনি যখন এ চিঠিটা হাতে পাবেন, মনে করবেন যে আমি আপনার কাছে আসার জন্য রওয়ানা হয়ে গিয়েছি। তাই অবিলম্বে দামেস্কের দায়িত্ব নেয়ার জন্য আপনি সঠিক ব্যক্তিকে প্রেরণ করুন।”
এমনই মানুষ ছিলেন হযরত সাইদ বিন জায়েদ (রা.)। তিনি সবসময় দ্বীনের খাদেম হিসেবেই থাকতে চেয়েছেন। বিলাসিতা, আরাম আয়েশ বা অভিজাত প্রাসাদকে তিনি কখনোই নিজের জন্য ঠিক মনে করেননি।
(মুসলিম সুপারস্টার বই থেকে)