নিজস্ব প্রতিবেদক:
সব জায়গায় কৃচ্ছ্রসাধনের অংশ হিসেবে জ্বালানি তেল সাশ্রয়ে মন্ত্রীদের গাড়ি কম ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনার কথা জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সেতুমন্ত্রী।
এ সময় আমদানি করা ডিজেলের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা চিন্তা করছি এটা নিয়ে। সব জায়গাতেই কৃচ্ছ্রসাধন করতে হবে। যেমন পরিবহন বলতে মন্ত্রীদেরও তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন গাড়ি নিয়ে অত ছোটাছুটির দরকার নেই। এ কথা একটু আগেও বলেছেন।
পরিবহন ভাড়া বাড়ছে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ কথা এখন বলতে পারব না। যখন বাড়বে তখন বলতে পারব।
একটা ছোট কথা থেকে অনেক বড় কথা হয়ে যেতে পারে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন আমাদের কথাবার্তাও সতর্কভাবে বলতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর বিএনপিকে চা খাওয়ার দাওয়াত সংলাপের ইঙ্গিত করে কি না জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, পলিটিক্যাল হিউমার আছে। যেমন বেগম জিয়াকে কি নেত্রী টুস করে ফেলে দিতে বলেছেন? এটা তো একটা হিউমার (রসিকতা)।
তিনি বলেন, তারা ঘেরাও করবে, আন্দোলন করবে, অভ্যুত্থান করবে, এটারই একটা জবাব। হিউমারের দিক থেকে উনি বলেছেন যে ঠিক আছে, আসেন। অবশ্য এটাও ঠিক তারা যদি কোনো ঘেরাও টেরাও নিয়ে আসে প্রধানমন্ত্রী বলতেও পারেন নেতাদের নিয়ে আসেন, এটা উনি করতেও পারেন। আসলে এটা ওনার রুচিবোধের মধ্যে আছে। এটা নিয়ে অন্য কিছু ভাবার কোনো কারণ নেই। ফখরুল সাহেবরা ঘেরাও করতে আসলে তাদের চা খাওয়ালে অসুবিধা কী?
জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য গত সপ্তাহে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমানো, সারা দেশে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং এবং সপ্তাহে একদিন পেট্রোল পাম্প বন্ধ রাখাসহ নানা পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।
এর মধ্যে সরকারি দপ্তরগুলোতে বিদ্যুতের ব্যবহার ২৫ শতাংশ কমিয়ে আনাসহ বেশ কিছু উদ্যোগ রয়েছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের অংশ হিসেবে রাত আটটার পর সারা দেশে দোকান, শপিংমল, মার্কেট, বিপণিবিতান, কাঁচাবাজার বন্ধ রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
বিদ্যুৎ ও গ্যাস পরিস্থিতি পর্যালোচনা প্রসঙ্গে এক জরুরি সভায় গত ৭ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। জাপানের আয় আমাদের চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি। সেখানেও লোডশেডিং হচ্ছে, তাদের সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে, বিদ্যুৎ-জ্বালানি সাশ্রয়ের ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়াসহ সারা পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতেও লোডশেডিং হচ্ছে। তারাও সাশ্রয়ে মনোযোগী হচ্ছে। তাদের তুলনায় আমরা অনেক ভালো আছি। তবে আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, চলমান এই পরিস্থিতি একটি যুদ্ধের মতো। সবাই মিলে যদি চেষ্টা করি, তাহলে পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে পারব। এজন্য প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সবাইকে সাশ্রয়ী হতে হবে। যার যার ঘরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবহার কমাব। এসি ২৫ ডিগ্রির নিচে রাখা যাবে না, আলোকসজ্জা হবে না, বিয়েসহ নানা অনুষ্ঠান যেগুলো রাতে হয়, সেগুলো সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে শেষ করতে হবে।
এমআই