সময় জার্নাল ডেস্ক : ভোর ৪ টা ৩৮ মিনিট। হঠাৎ লকডাউন শব্দটিতে এক ধরনের মানসিক অস্বস্তি শুরু হলো। ঘুমাতে না পেরে বসে বসে ভাবছিলাম, মনে হচ্ছিল একসপ্তাহর জন্য হাত-পা বেঁধে গৃহবন্দি করার আয়োজন শুরু হচ্ছে। সমস্যা নেই, এর আগেও এমন অভিজ্ঞতা তো আছে। কিন্তু, আবার ভাবি সব দায় কী জনগণের? এখন পর্যন্ত করোনায় সারা বিশ্বে ২৯ লাখ মানুষের মৃত্যু হলো, বাংলাদেশে পরিচিত বন্ধু-স্বজন বিশিষ্টজনসহ মারা গেলেন প্রায় সাড়ে ৯ হাজার।
২/১ জনের জন্য তো নিজেও কেঁদেছি।। সংবাদপত্রে আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অবস্থা নিয়ে রীতিমতো ভয়ংকর ও উদ্বেগজনক অবস্থায় নাগরিকরা।
আইসিইউ সাপোর্টসহ বেডের অপ্রতুলতা, বেসরকারি হাসপাতালগুলোর ব্যবসায়িক মনোবৃত্তি, আর দালালদের রোগী নিয়ে ব্যবসা-চিকিৎসার অধিকারকে অনেক আগেই পণ্যে পরিণত করেছে।
২০১৩ থেকে ২০১৫ মায়ের ভালো চিকিৎসার জন্য বেশ কটি হাসপাতাল ঘুরে ধারণা পরিষ্কার হয়ে গেছে, তাই হাসপাতাল আর ডাক্তার এ দুটো বিষয়ে আমি বরাবরই নীরব।
চাই, কারো যেন এসব জায়গায় রোগী হয়ে যেতে না হয়।। বলছিলাম, লক ডাউন নিয়ে, চলমান যে লকডাউন ৫-১১ এপ্রিল, এটাকে তো ওপেন লকডাউন বলা যায়, যেমনটা আমরা ওপেন সিক্রেট বলে থাকি।
এ লকডাউনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আর আন্তঃনগর বাস ছাড়া অলমোস্ট ওপেন।। তবে এবার পরিবহন শ্রমিক, মার্কেট কর্মী এদের রাস্তায় নেমে মানুষের গাড়ি ভেঙ্গে দাবি আদায় করতে দেখা গেছে।। গত একবছরে ঔষধ ও মুদি মনোহারি, নগদ, বিকাশ, হাসপাতাল বা করোনা প্রতিরোধক সামগ্রীর ব্যবসা ছাড়া সব ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত। পথে বসে গেছে অনেকে।
প্রভাবশালী ছাড়া সরকারের প্রণোদনা পেয়েছেন খুব কম সংখ্যক ব্যবসায়ী। এখন প্রশ্ন, করোনা এত বাড়লো কিভাবে? আর এ থেকে জনগনের জীবন ও জীবিকা দুটোই বাঁচানোর কোন উপায় কী সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের আছে? না কী ওটি থেকে কেউ বের হয়ে বলবেন অপারেশন সাকসেসফুল, কিন্তু রোগী মারা গেছে।।
সারা বছর জনগন যে ট্যাক্স দেয়, সেখান থেকে কী জনগনকে ঘরে বসে খাওয়ার জন্য কিছু যোগান দেয়া যায় না!! আমেরিকায় গত বছর অগাষ্ট মাস থেকেই প্রণোদনা দেয়া শুরু হয়েছে। মাসে ৫০০ ডলার দিয়ে পরে অ্যাসেসমেন্ট করে নাগরিকদের আয় অনুযায়ী সেটা পরে আরো বাড়িয়ে দ্বিগুন করা হয়েছে, এবং নাগরিকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সময়মতো টাকা চলে যায়।
খবরে দেখলাম, বাংলাদেশে ৫ হাজার বেডের করোনা হাসপাতাল তৈরি হলেও করোনার প্রকোপ বাড়ার আগেই হাসপাতাল গায়েব হয়ে যায়। সত্যিই, অদ্ভূত একটা সিস্টেমের মধ্যে আমরা বেড়ে উঠছি, আপনার টাকা, ক্ষমতা থাকলে সিস্টেম আপনার, আর না থাকলে, জীবন বাঁচাবেন না জীবিকা, সে সিদ্ধান্ত ও আপনার!!!
লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক ও সাবেক সহ-সভাপতি, ঢাকা রিপোর্টারস ইউনিটি।
(ফেসবুক থেকে সংগৃহিত)
সময় জার্নাল/আরইউ