সর্বশেষ সংবাদ
সাক্ষাৎকার
সময় জার্নাল ডেস্ক: গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগ ওঠে ছাত্রলীগের চার কর্মীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনার ১০ মাস পর গত ২৫ জুলাই ওই চার কর্মীকে বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বহিষ্কার শুধু নামেই। আজ বুধবার বহিষ্কৃত দুজন চূড়ান্ত পরীক্ষায় বসেছেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে হেনস্তার দায়ে বহিষ্কার হওয়া কর্মীরা শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হকের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। তাঁরা হলেন আরবি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. জুনায়েদ, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রুবেল হাসান, দর্শন বিভাগের একই বর্ষের ইমন আহাম্মেদ এবং রাকিব হাসান (আর এইচ রাজু)। আজ থেকে দর্শন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সরেজমিন দেখা যায়, রাকিব হাসান ও ইমন আহমেদ, দুজনেই পরীক্ষা দিচ্ছেন।বহিষ্কার হয়েও কীভাবে পরীক্ষা দিচ্ছেন, জানতে চাইলে দর্শন বিভাগের সভাপতি মো. আবদুল মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা রেজিস্ট্রার কার্যালয় থেকে বহিষ্কারের কোনো চিঠি পাননি। এমনকি এ দুই ছাত্রকে যে বহিষ্কার করা হয়েছে ,তা–ও বিভাগকে জানানো হয়নি। যতক্ষণ পর্যন্ত বহিষ্কার আদেশ তাঁরা না পাবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত দুই ছাত্রের পরীক্ষা দেওয়া বৈধ। তাই তাঁরা পরীক্ষায় বসার অনুমতি দিয়েছেন। জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম মনিরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত সভা করে নেওয়া হয়েছিল। এ সভার লিখিত কোনো আদেশ এখনো তৈরি হয়নি। তাই তিনি বিভাগে পাঠাননি। শিগগিরই পাঠানো হবে। তবে যাঁরা পরীক্ষা দিচ্ছেন, তাঁদের পরীক্ষা আপনা-আপনি বাতিল হবে বলে জানিয়েছেন মনিরুল হাসান। তিনি বলেন, সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরদিন থেকেই তাঁদের বহিষ্কার আদেশ কার্যকর হবে। তাই এর মধ্যে যদি কেউ পরীক্ষা দিয়েও থাকেন, তাঁদের পরীক্ষা বাতিল হবে। কর্তৃপক্ষের এমন গাফিলতির কারণেই ক্যাম্পাসেই বারবার ছাত্রী হেনস্তা ও যৌন নিপীড়নের মতো ঘটনা ঘটছে বলে মনে করেন আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া অন্যতম শিক্ষার্থী আশরাফী নিতু। তিনি বলেন, দাবি মেনে নেওয়ার কথা বলে শিক্ষার্থীদের শান্ত করা হয়েছে। কিন্তু সেগুলো আদতে বাস্তবায়ন করা হয়নি। বহিষ্কৃতরা কীভাবে পরীক্ষা দিচ্ছেন? বিভাগে এখনো কেন চিঠি পৌঁছায়নি?— প্রশ্নগুলো কর্তৃপক্ষের দায়সারা ভাবের প্রমাণ করে। গত ১৭ জুলাই ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনার পর ক্যাম্পাসে যে পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, তা ঠান্ডা করতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বলে মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাবেক আইন অনুষদের সম্পাদক জাকির হোসেন। তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষ যে তাঁদের বহিষ্কার করেছেন, তা যথাযথ আইন মেনে করেননি। কাউকে বহিষ্কার করলে তাঁকে আগে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে হয়। কর্তৃপক্ষ এমনটা করেননি। ১৭ জুলাই রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পাঁচ তরুণের হাতে এক ছাত্রী যৌন নিপীড়ন ও মারধরের শিকার হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় পাঁচ তরুণ ওই ছাত্রীকে বেঁধে হেনস্তা করে মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা এক বন্ধু প্রতিবাদ করলে তাঁকেও মারধর করা হয়। এ ঘটনায় ১৯ জুলাই প্রক্টরের কাছে অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী। এর এক দিন পর, ২০ জুলাই মামলা করেন হাটহাজারী থানায়। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ২০ জুলাই থেকেই উত্তাল হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। রাতেই ছাত্রীরা হল থেকে বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। গত বছর ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে দুই ছাত্রী হেনস্তার হওয়ার ঘটনার বিচার চান। ওই দিন দিবাগত রাত একটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এস এম মনিরুল হাসান ঘটনাস্থলে গিয়ে চার কার্যদিবসের মধ্যে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার ঘোষণা দেন। এরপর ২৫ জুলাই সংবাদ সম্মেলন করে রেজিস্ট্রার এস এম মনিরুল হাসান জানান, গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর হেনস্তার ঘটনায় জড়িত চারজনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এসএম
Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.
উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ
কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল