ইসাহাক আলী, নাটোর:
নাটোরের হয়বতপুর গোলাম ইয়াছিনিয়া ডিগ্রি ফাজিল মাদরাসার ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জাফর বরকতকে (৫২) মারপিট ও ইউনিয়ন পরিষদে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগে করা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান কালুকে (৬০)
গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত মধ্যরাতে তাকে নাটোর শহরের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে রাতেই জাফর বরকত বাদি হয়ে লক্ষ্মীপুর খোলাবাড়ীয়া ইউপি চেয়ারম্যান কালু, তার ছেলে জয়সহ ৭ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ৮ জনের বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলা দায়েরের পরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে কালুকে গ্রেপ্তার করে।
এদিকে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পূর্ব নির্ধারিত মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করতে দেয়নি প্রশাসন। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন রয়েছে এলাকায়। এদিকে নূরুজ্জামান কালুকে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ।
সকাল ১০ টার দিকে হয়বতপুর বাজারে মানববন্ধন আহবান করে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক এবং এলাকাবাসী। মানববন্ধনে যোগ দেয়ার জন্য মাদরাসায় জড়ো হলে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা গিয়ে তা বন্ধ করে দেয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভের
চেষ্টা করে। পরে পুলিশ ও প্রশাসন এবং মাদরাসা কর্তৃপক্ষের অনুরোধে তারা ক্লাসে ফিরে যায়। এদিকে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে চেয়ারম্যানকে আটকের প্রতিবাদে মানববন্ধন করে চেয়ারম্যান সমর্থকরা।
এর আগে জাফর বরকতের করা মামলায় অভিযোগ করা হয়, মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটি পরিবর্তনের দাবি নিয়ে কালু ও তার ছেলে জয় সহ প্রায় ১৫ জনের একটি দল বুধবার সকালে ওই মাদ্রাসায় গিয়ে অধ্যক্ষকে খুঁজতে থাকেন। অধ্যক্ষকে না পেয়ে
শিক্ষকদের গালাগালি করতে থাকে। এ সময় মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জাফরের কক্ষে ঢুকে তার সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন তারা। একপর্যায়ে তারা তার ওপর চড়াও হয়ে মারধর শুরু করেন। তারা জাফরকে টেনে হেঁচড়ে বাইরে বের করে আনেন এবং তাকে প্রায় অর্ধ উলঙ্গ অবস্থায় টানতে টানতে মাদ্রাসার পাশে অবস্থিত ইউপি কার্যালয়ে নিয়ে আটকে রাখেন। সেখানেও ওই শিক্ষককে নির্যাতন করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জাফরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
নাটোর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাছিম আহমেদ শিক্ষককে মারধরের মামলায় কালুকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ছাড়া একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে
মাদ্রাসায় ক্লাস চলছে। মামলার অন্য অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এমআই