রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

সরকার নির্ধারিত ভাড়া মানছে না কেউ জ্বালানির দাম বাড়ায় বাসের সব রুটের ভাড়া বৃদ্ধি, ইচ্ছামতো ভাড়া আদায় যাত্রীরা অসহায়

গণপরিবহনে ভাড়া বাড়িয়ে নজিরবিহীন অরাজকতা

রোববার, আগস্ট ৭, ২০২২
গণপরিবহনে ভাড়া বাড়িয়ে নজিরবিহীন অরাজকতা




সময় জার্নাল ডেস্ক: জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির সাথে ভাড়া বেড়ে গেছে সব গণপরিবহনে। দূরপাল্লার বাসসহ রাজধানী এবং রাজধানীর সঙ্গে আশপাশের জেলায় চলাচল করা সব রুটেই বেশি ভাড়া দিয়ে টিকিট কিনতে হচ্ছে যাত্রীদের। এই টিকিট বিক্রি তথা ভাড়া আদায়ে নজিরবিহীন অরাজকতা চলছে। কেউ মানছেন না সরকার নির্ধারিত ভাড়া। পরিবহন শ্রমিকরা যাত্রীদের জিম্মি করে ইচ্ছামতো ভাড়া আদায় করছেন। ঢাকার গাবতলী, মহাখালী, সায়েদাবাদ টার্মিনালে সরেজমিন দেখা গেছে এখনও দাম বৃদ্ধির তালিকা টানানো হয়নি বাস কাউন্টারগুলোতে। অথচ ইচ্ছেমতো ভাড়া নিচ্ছে কোম্পানিগুলো। এতে বিপদে পড়ে গেছেন যাত্রীরা। রাজধানীর সায়েদাবাদের বাস কাউন্টারগুলো ঘুরে দেখা গেছে দূরপাল্লার বাসের একেক কাউন্টারে টিকিটের দাম একেক রকম।


প্রতিটি টিকিটে ২০০ টাকা পর্যন্ত বেশি নেয়া হচ্ছে। অনেক যাত্রী আবার বাসভাড়া বৃদ্ধির খবর জানতেন না, এ জন্য তারা পড়েছেন বিপাকে। রাজধানীর বিভিন্ন রুটে চলাচল করা বাস কোম্পানিগুলো সড়কে বাসের সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছে। ফলে অংসখ্য যাত্রীকে বিভিন্ন পয়েন্টে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। এর আগে ২০২১ সালের নভেম্বরে বাসভাড়া ২৬ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল। বিআরটিএ জোরালোভাবে বলেছিল, কিলোমিটার হিসেবে ভাড়া আদায় করতে হবে, বেশি ভাড়া নেয়া যাবে না। ব্যত্যয় ঘটলে তাদের রুট পারমিট বাতিলের হুমকিও দেয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে কিছুই হয়নি। এখন নতুন করে ভাড়া বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে গণপরিবহনে ভাড়া বৃদ্ধির মহোৎসব শুরু হয়েছে। পরিবহন মালিক শ্রমিকদের এই ভাড়া আদায়ের অরাজকতায় সাধারণ মানুষ নিদারুণ বিপাকে পড়ে গেছেন।


জানতে চাইলে বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মাদ মজুমদার বলেন, গতবার ভাড়া নির্ধারণ করার পর মালিক সমিতি, শ্রমিক ফেডারেশনের সদস্য বিআরটিএ পুলিশ যৌথ টিম মাঠে কাজ করেছে, যা কয়েক মাস অব্যাহত ছিল। যারা অতিরিক্ত ভাড়া নিয়েছে আমরা তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছি। এবারও নেয়া হবে।নির্ধারণ ভাড়ার চেয়ে বাস মালিকরা যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছেন এবং নির্ধারিত ভাড়া সরকার কখনোই কার্যকর করতে পারেন না কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, ভাড়া বাড়ার পরই কিন্তু সড়কে মনিটরিং শুরু হয়। গতবার ভাড়া বৃদ্ধির পর বিআরটিএ ম্যাজিস্ট্রেটরা মাঠে নেমেছিল। এবারও সড়ক মহাসড়কে শক্তভাবে মনিটর করা হবে। কোনো অনিয়ম পেলে তাৎক্ষণিক আইনানুগ ব্যবস্থা নেব। প্রত্যেক বাসে ভাড়ার তালিকা বড় করে চার্ট দেবো। যদি কেউ না টানায় তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেব।


জ্বালানি তেল বৃদ্ধির প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিল হচ্ছে। গতকাল জ্বালানি তেলের রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী। তারা সারাবিশ্বের জ্বালানির দাম কমে যাওয়ার মধ্যে বাংলাদেশে দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদ করছেন। বেশ কিছু সংগঠন জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে প্রতিদিন কর্মসূচি পালন করছেন। রাজধানীর শাহবাগে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন একদল মানুষ। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা থেকে রাতভর তারা জাদুঘরের সামনে অবস্থান করেছেন। ‘বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা’ ব্যানারে সমবেত এই আন্দোলনকারীরা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিদিন দফায় দফায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামজিক সংগঠন প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন।


 জানতে চাইলে গণদলের চেয়ারম্যান এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী বলেন, শনিরআখড়া থেকে গুলিস্তানের দূরত্ব সাড়ে তিন থেকে ৪ কিলোমিটার। এ রুটে অসংখ্য কোম্পানির বাস চলাচল করে। এ রুটে আগেই ২০ টাকার ভাড়া আদায় করা হতো। নতুন ভাড়া বৃদ্ধির পর কোনো কোম্পানি ২৫ টাকা আবার কোনো কোম্পানির বাস ৩০ টাকা করে ভাড়া আদায় করছে। রাজধানীর ইস্কাটন থেকে মেরুল বাড্ডা পর্যন্ত দূরত্ব ৪ দশমিক ৩ কিলোমিটারের মতো। গত নভেম্বরে তেলের দাম বাড়ানোর পর সরকার ভাড়ার যে হার ঠিক করে দিয়েছে, তাতে এই পথের ভাড়া ১০ টাকার কম আসে। তবে সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকা হিসেবে এটাই আদায় করার কথা। কিন্তু এই পথটুকুর জন্য স্বাধীন পরিবহন আদায় করে ২০ টাকা (দ্বিগুণ)। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পর নতুন করে শনিবার বিআরটিএ যে বাসভাড়া নির্ধারণ করেছে তাতে মহানগরীতে বাড়ানো হয়েছে কিলোমিটারে ৩৫ পয়সা। ফলে এখন থেকে প্রতি কিলোমিটারে যাত্রীদের গুনতে হবে আড়াই টাকা। সরকার এই রুটের জন্য নতুন করে এবার যে ভাড়া ঠিক করে দিয়েছে, তাতে কিলোমিটার হিসেবে এই দূরত্বে ভাড়া হয় ১০ টাকা ৭৫ পয়সা। বাসগুলো এখন ২০ টাকার কম ভাড়া নিচ্ছে না। একই চিত্র অন্যান্য রুটের বাসগুলোতে।


কল্যাণপুর কাউন্টারে গিয়ে দেখা গেল, ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম নন-এসি বাসের টিকিটের দাম রাখা হচ্ছে ৬৫০ টাকা। আগে এই টিকিটের দাম ছিল ৫৮০ টাকা। এসি বাসের টিকিটের দাম ছিল ৮০০ টাকা, এখন নেয়া হচ্ছে ৯০০ টাকা। এই বাসে ঢাকা থেকে কক্সবাজার নন-এসি বাসের ভাড়া ছিল ৯০০ টাকা, এখন নেয়া হচ্ছে ১০০০ টাকা। এসি বাসের ভাড়া ছিল ১২০০ টাকা, এখন নেয়া হচ্ছে ১৩০০ টাকা। ঢাকা থেকে সিলেট নন-এসি বাসের ভাড়া ছিল ৫৭০ টাকা, এখন সকাল থেকে নেয়া হচ্ছে ৬৫০ টাকা। এসি বাসের ভাড়া ছিল ৭০০ টাকা, আজ সকাল থেকে নেয়া হচ্ছে ৮০০ টাকা। হানিফ এন্টারপ্রাইজে গিয়ে দেখা গেল, ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম নন-এসি বাসের ৫৮০ টাকার টিকিট বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা। কক্সবাজারের ৯০০ টাকার টিকিট ১০০০ টাকা এবং সিলেটের ৫৭০ টাকার টিকিট নেয়া হচ্ছে ৭০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু যাত্রীরা বলছেন তাদের কাছ থেকে আরো বেশি টাকা নেয়া হচ্ছে। যাত্রীদের কাছ থেকে ৭শ’ টাকা নিয়ে টিকিটে ভাড়া লেখা হচ্ছে ৬শ’ টাকা।


ঢাকার বাইরে রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, দিনাজপুর, সিলেটসহ বিভিন্ন জেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলা আন্তঃবাস টার্মিনালগুলোতে যাত্রীর জটলা। কিন্তু বাসের সংখ্যা কম। ভাড়া বেশি হওয়ায় যাত্রীদের সঙ্গে পরিবহন শ্রমিকদের বাগি¦তণ্ডার কারণে অনেক কোম্পানি বাসের সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছেন।রাজধানী ঢাকার ভেতরে এবং আশপাশের জেলাগুলোর বিভিন্ন রুটে চলাচল করা গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে অস্বাভাবিক হারে। সরকারের বেঁধে দেয়া ভাড়ার চেয়ে অনেক বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। গত শুক্রবার রাতে জ্বালানি তেল তথা ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ টাকা, পেট্রলের দাম ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩০ টাকা এবং অকটেনের দাম ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা করা হয়েছে। এরপরের দিনই ভাড়া বাড়ার খড়গ পড়ে পরিবহন খাতে। 


বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) প্রধান কার্যালয়ে পরিবহন মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে বিআরটিএ’র ভাড়া নির্ধারণী কমিটির বৈঠকে বাসভাড়া সর্বোচ্চ ২২ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার রুটে চলাচলকারী বাস ও মিনিবাসের ক্ষেত্রে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের প্রতি কিলোমিটারে যাত্রীপ্রতি সর্বোচ্চ ভাড়া ১ টাকা ৮০ পয়সার জায়গায় ২ টাকা ২০ পয়সা; ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে চলাচলকারী বাসের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটার যাত্রীপ্রতি ভাড়া ২ টাকা ১৫ পয়সার স্থলে ২ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। কিন্তু বাস কোম্পানিগুলো ইচ্ছেমতো ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছে। গতকাল গাজীপুর থেকে রাজধানীর ফার্মগেটে মো. শহিদুল ইসলাম নামের এক যাত্রী অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন। তিনি জানান, এ রুটে ভাড়া ৫০ টাকা। এখন নেয়া হচ্ছে ৮০ টাকা। বাধ্য হয়েই যাত্রীরা বেশি ভাড়া দিয়েই কর্মস্থলে যাতায়াত করছেন।


মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা সীমিত আয়ের মানুষ। ব্যবসা-বাণিজ্যও আগের চেয়ে খারাপ। আয়-রোজগার কমে গেছে। কিন্তু সবখানে খরচ বাড়ছে। এভাবে তো আমাদের মতো মানুষের টিকে থাকাই দায়। গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, শুধু শহিদুল ইসলাম নন, নিম্ন আয়ের প্রায় সব মানুষের মুখেই এখন একই কথা, চরম হতাশা অসহায়ত্ব। এ মানুষগুলোর আয়ের তুলনায় ব্যয় বাড়ছে। গণপরিবহনে ভাড়া বৃদ্ধি তাদের জন্য ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে এসেছে।জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, সারা দেশে প্রায় এক লাখ বাস চলে। মহানগরীতে চলে সর্বোচ্চ ৬ হাজার। এই ৬ হাজার গাড়িতে ঢাকা মহানগরীতে অনেক সময় কিছু কিছু অনিয়ম হয়। এ অনিয়ম রোধ করার জন্য আমরা মালিক শ্রমিকরা, ম্যাজিস্ট্রেটসহ দুই মাস ধরে কাজ করছি। ভাড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ভাড়ার বিষয়টি তারা (বিআরটিএ) নির্ধারণ করেছে। এখানে সাড়ে ৪২ শতাংশ তেলের দাম বেড়েছে। আর ভাড়া বৃদ্ধি করেছে ২২ শতাংশ।


রাস্তায় গণপরিবহন কম : জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পর মহানগরী ও দূরপাল্লার গণপরিবহনের ভাড়া বাড়িয়ে সমন্বয় করা হয়েছে। সরকারের বেঁধে দেয়া ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করছে বেশির ভাগ কোম্পানির বাস। গতকাল রাজধানীর সড়কগুলোতে বাসের সংখ্যা স্বাভাবিক কম। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে বাসের উপস্থিতি তুলনামূলক কম দেখা যায়। ভাড়া বাড়ানোর পরও সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে ভোগান্তিতে পড়েছেন অফিসগামী যাত্রীরা। গণপরিবহনে বর্ধিত নতুন ভাড়া নিয়ে যাত্রী ও বাসকর্মীদের মধ্যে বাগি¦তণ্ডার ঘটনা ঘটছে। নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি আদায়ের অভিযোগও করেছেন অনেক যাত্রী। এর আগে, শুক্রবার জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির পরদিন শনিবার রাজধানীতে গণপরিবহনের সঙ্কট ছিল প্রকট। হাতেগোনা কিছু বাস চললেও বেশিরভাগই নামেনি সড়কে। পরিবহন সঙ্কটে চরম ভোগান্তিতে পড়েন রাজধানীবাসী। শনিবার রাতে বিআরটিএ ও পরিবহন মালিকদের বৈঠক থেকে ভাড়া বাড়ানোর ঘোষণা আসে। রোববার থেকে নতুন ভাড়া কার্যকরের কথাও জানানো হয়। তবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, রাজধানীতে পরিবহনের সঙ্কট নেই। তেলের কারণে সড়কে বাসের সংখ্যা কিছুটা কম থাকতে পারে, অন্য কোনো কারণ থাকার কথা নয়।


বাসভাড়া বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন : আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার রুটে চলাচলকারী বাস ও মিনিবাসের ক্ষেত্রে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের প্রতি কিলোমিটারে যাত্রীপ্রতি সর্বোচ্চ ভাড়া ১ টাকা ৮০ পয়সার জায়গায় ২ টাকা ২০ পয়সা; ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে চলাচলকারী বাসের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটার যাত্রীপ্রতি ভাড়া ২ টাকা ১৫ পয়সার স্থলে ২ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। গতকাল রোববার প্রেসিডেন্টের আদেশক্রমে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের উপসচিব মো. মনিরুল আলম ওই প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন।বাস ও মিনিবাসের সর্বোচ্চ ভাড়া পুন: নির্ধারণ করা প্রজ্ঞাপনে সরকার সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ- সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮-এর ৩৪ (২) ধারা অনুসারে এ প্রজ্ঞাপন জারি করে।


প্রজ্ঞাপন থেকে জানা যায়, ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে চলাচলকারী মিনিবাস এবং ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) আওতাধীন জেলার (নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ ও ঢাকা) অভ্যন্তরে চলাচলকারী বাস ও মিনিবাসের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটারে যাত্রীপ্রতি ভাড়া ২ টাকা ৫ পয়সার স্থলে ২ টাকা ৪০ পয়সা; ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে চলাচলকারী বাস ও মিনিবাসের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ভাড়া যথাক্রমে ১০ টাকা ও ৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।প্রজ্ঞাপনে আরো বলা হয়, বিআরটিএ কর্তৃক অনুমোদিত আসন সংখ্যা কমিয়ে আরামদায়ক ভ্রমণের জন্য বাস/মিনিবাসের আসন সংখ্যা পুনর্বিন্যাস করা হলে উপরিউক্ত অনুচ্ছেদ ‘ক’ অনুযায়ী আনুপাতিকভাবে ভাড়ার হার নির্ধারিত হবে। সেক্ষেত্রে রুট পারমিট অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ বিআরটিএ কিংবা যাত্রী ও পণ্য পরিবহন কমিটি থেকে আনুপাতিকভাবে ভাড়ার হার অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে। তবে ভাড়া বৃদ্ধি গ্যাসচালিত মোটরযানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। ডিজেলচালিত বাস ও মিনিবাসের ভাড়া নির্ধারণ সংক্রান্ত ইতঃপূর্বে জারিকৃত সকল প্রজ্ঞাপন ও আদেশ রহিত করা হলো। ভাড়ার হার প্রতিটি বাস ও মিনিবাসের দৃশ্যমান স্থানে আবশ্যিকভাবে টানিয়ে রাখতে হবে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ ভাড়ার হার ৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রামে গণপরিবহনের ভাড়া প্রায় দ্বিগুণ করা হয়েছে। এখন নতুন করে ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন নগরবাসী। কর্মজীবী ও শ্রমজীবীদের আয়ের বিরাট অংশ যাতায়াত খাতে ব্যয় হয়ে যাচ্ছে। পরিবহন ভাড়ার সাথে অন্যসব পণ্য ও সেবাখাতেও মূল্যবৃদ্ধির হিড়িক পড়েছে। এতে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে শঙ্কিত স্বল্প ও সীমিত আয়ের মানুষ। মহানগরীর বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী বাস-মিনিবাস, হিউম্যান হলার ও টেম্পোর ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগের শেষ নেই। ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বর্ধিত ভাড়ার গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। তবে এখনও ভাড়া সমন্বয় করে নতুন তালিকা দেয়া হয়নি।


রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহীতে বাসের ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন দুরপাল্লার যাত্রীরা। রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী বাসের ভাড়া নন-এসিতে ১২০ টাকা এবং এসিতে ২০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য আন্তঃজেলা বাসেও প্রায় ২২ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজশাহী থেকে ঢাকার নন-এসি বাসে প্রতি আসনে ভাড়া ৬০০ টাকা থেকে ২০% বাড়িয়ে ৭২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। দাম বৃদ্ধিতে ক্ষোভ জানিয়ে এক যাত্রী বলেন, আমরা সাধারণ জনগণ কোথায় যাবো।


যশোর ব্যুরো জানায়, ২৪ ঘণ্টার জন্য যশোরসহ খুলনা বিভাগের ১০ জেলা ও বৃহত্তর ফরিদপুরের চার জেলায় তেল পরিবহন বন্ধ থাকবে। এ সময় ডিপো থেকে তেল উত্তোলন ও বিপণন বন্ধ থাকলেও পাম্প থেকে তেল বিক্রি বন্ধ থাকবে না। বাংলাদেশ ট্যাংকলরি ও জ্বালানি মালিক সমিতির মহাসচিব ফরহাদ হোসেন এ তথ্য জানান। এছাড়াও বিভিন্ন দাবিতে আজ থেকে ধর্মঘট চলবে। এদিকে, জ্বালানির দাম বৃদ্ধিতে যশোরের বাজারে বাইসাইকেলের দাম বেড়ে গেছে। বেড়েছে বিক্রিও। ক্রেতারা বলছেন বাইসাইকেল যেন তেলে চলে। তবে বিক্রেতারা বলছেন, বাইসাইকেলের কাঁচা মালের মূল্য বিশ্ব বাজারে বৃদ্ধি পাওয়া এবং কিছু পার্টস আমদানি কমে যাওয়ার কারণে বাইসাইকেলের দাম বেড়েছে এক হাজার থেকে দুই হাজার টাকা বা তারও বেশি।




এসএম












Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল