আজাহারুল ইসলাম, ইবি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের নির্মাণকাজ শুরু হয় ১৯৯৪ সালে। সরকারি অর্থায়নে কাজ শুরু হলেও পরে সহায়তা আসে বিদেশ থেকেও। তবে মসজিদের জন্য বরাদ্দকৃত টাকা ভিন্ন খাতে ব্যয় করায় ও সঠিকভাবে কাজে না লাগানোয় অর্থ ফেরতও নেয় বিদেশি প্রতিষ্ঠান। ফলে দীর্ঘ ২৮ বছর পেরিয়ে কাজ সম্পন্ন হয়েছে ৫০ শতাংশ। বাজেটের অভাবে বাকি কাজ আটকে আছে বলে জানিয়েছেন প্রধান প্রকৌশলী।
প্রকৌশল দফতর সূত্র জানিয়েছে, ক্যাম্পাসের পশ্চিমদিকে দুই দশমিক ২৫ হেক্টর জায়গাজুড়ে নির্মাণকাজ চলছে মসজিদটির। ক্যাম্পাস ভিত্তিক সর্ববৃহৎ এই মসজিদটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ১৯৯৪ সালে। প্রতিষ্ঠার ১০ বছর পর ২০০৪ সালে ৩৬ শতাংশ কাজ শেষ হলে তৎকালীন ধর্মপ্রতিমন্ত্রী মোশারেফ হোসাইন শাহজাহান উদ্বোধনের মাধ্যমে নামাজের জন্য উন্মুক্ত করে দেন মসজিদটি। এরপর দীর্ঘ ১৩ বছর নির্মাণ কাজ থেমে থাকে। পরে সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. রাশিদ আসকারীর সময় দুই দফায় নির্মাণ কাজ সম্প্রসারণ করা হয়। এতে ব্যয় হয় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা।
মসজিদটির নির্মাণ কাজ শেষ করতে এখনো ৪০ কোটি টাকার প্রয়োজন। তবে বরাদ্দ না থাকায় নির্মাণ কাজ চলছে না। বাজেট পেলে ও পুরোদমে কাজ চললে এক বছরের মধ্যে মসজিদটির নির্মাণ কাজ শেষ হবে। নিমার্ণকাজ শেষ হলে মসজিদটিতে একসঙ্গে ১৭ হাজার মুসল্লি নামাজ পড়তে পারবেন। মসজিদের নিচতলার মেঝের আয়তন ৫১ হাজার বর্গফুট। চারতলার মূল মসজিদে মোট সাত হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবে। এছাড়া মসজিদের সামনের পেডমেন্টে নামাজ পড়তে পারবে আরও ১০ হাজার মুসল্লি।
মসজিদের সামনের অংশের উপরে রয়েছে ৯০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট বৃহৎ গম্বুজ। নিচতলা থেকেও ভেতর দিয়ে গম্বুজটির একদম উপরের অংশ দেখা যায়। নকশা অনুযায়ী মসজিদের প্রাচীরের চারপাশে ১৫০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট চারটি মিনার স্থাপিত হবে। মসজিদের তিনপাশ দিয়ে থাকবে প্রবেশ পথ। প্রতিটি প্রবেশপথে থাকবে একটি করে গম্বুজ। এছাড়া প্রতিটি অনুষদীয় ভবন থেকে মসজিদে আসার জন্য রয়েছে প্রশস্ত পথ। মসজিদের নিচতলায় একটি লাইব্রেরি ও রিসার্স সেন্টারের প্রস্তাবনা রয়েছে।
অনেক আগে শিক্ষাজীবন শেষ করা প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এসে মসজিদকে এখনও নির্মাণাধীন দেখার পর তাদের কণ্ঠে আক্ষেপ ঝরে পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী হুমায়ুন কবির বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত মসজিদটি নির্মাণাধীনই রয়ে গেল। প্রতিটি প্রশাসনের কাছেই প্রত্যাশা ছিল মসজিদটির নির্মাণ কাজ শেষ হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মুন্সী শহিদ উদ্দীন মো. তারেক বলেন, মসজিদের কাজ কবে শেষ হবে বলা মুশকিল। টাকা না থাকার কারণে কাজ আটকে আছে। এখনো প্রায় ৫০ শতাংশের বেশি কাজ বাকি। কাজ শেষ করতে আরো প্রায় ৪০ কোটি টাকা প্রয়োজন।
সময় জার্নাল/এমআই