ডা. সাখাওয়াত হোসাইন সায়ন্থ :
করোনা যে কারো হতে পারে।
সেটা অনেকে পাবলিক করেন। আবার কেউ জানাতে পছন্দ করেন না।
করোনা বা যে কোন রোগ হলে তার গোপনীয়তা রক্ষার এই অধিকার রোগীর আছে।
রোগীর অনুমতি ছাড়া তার রোগের বিষয়ে অন্য কেউ তা প্রকাশ করতে পারে না। এমন কী চিকিৎসকও না।
একমাত্র রোগীই সিদ্ধান্ত নেবেন, তিনি তার রোগের বিষয়ে অন্যকে জানাবেন কী না। জানানোর জন্য কাউকে অনুমতি দেবেন কি না, সেটাও তার একান্ত ইচ্ছা।
রোগী অনুমতি দেওয়ার মতো অবস্থায় না থাকলে তখন তার পরিবারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি রোগের বিষয়ে অন্য কাউকে বা সংবাদমাধ্যমে জানাবেন কি না। এ প্রসঙ্গে সাবেক মেয়র আনিসুল হক লন্ডনে আইসিইউতে থাকাকালীন পরিস্থিতির কথা স্মরণ করা যেতে পারে। কোন সংবাদমাধ্যম সেখানকার চিকিৎসকদের কাছ থেকে একটি শব্দও জানতে পারেনি।
অথচ বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার করোনা হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমে নিশ্চিত করছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম প্রধান!
বেগম খালেদা জিয়ার রিপোর্টে যে ফোন নম্বরটা দেওয়া হয়েছে, সেটি বিএনপি চেয়ারপারসনের মেডিকেল টিমের টেকনোলজিস্ট মো. সবুজের। তিনি পর্যন্ত খালেদা জিয়ার করোনা শনাক্ত হওয়া বা না হওয়া বিষয়ে কিছু জানেন না বলে লিখেছে প্রথম আলো।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, তিনিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই খালেদা জিয়ার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট দেখেছেন। পরিবারের কেউও এখনো জানাননি খালেদা জিয়ার করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর।
অথচ অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয় থেকে বেগম খালেদা জিয়ার টেস্টের কথাই শুধু জানানো হয়নি, রিপোর্টের কপিও দিয়ে দেওয়া হয়েছে সংবাদমাধ্যমে। তা ভাইরাল করা হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এটি শুধু অসৌজন্যই নয়, এর মাধ্যমে সরকার বেগম খালেদা জিয়ার অধিকারও ক্ষুন্ন করেছে।
লেখক : খ্যাতিমান ডেন্টাল সার্জন, কলমিস্ট ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক।
অ্যাসিসটেন্ট প্রফেসর, ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জারি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।