ইসাহাক আলী, নাটোর প্রতিনিধি:
নাটোরে কলেজ ছাত্রকে বিয়ে করে ভাইরাল জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজিপুর ডিগ্রি কলেজের সেই সহকারী অধ্যাপক খায়রুন নাহারের ভাড়া বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার ভোররাতে নাটোর শহরের বলারীপাড়ার ভাড়া বাসার চার তলায় সিলিং ফ্যানের সাথে ওড়না পেচিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন বলে মামুন দাবি করেন।
তবে হত্যা না আত্মহত্যা বিষয়টি নিশ্চিত হতে ভবনের অন্য বাসিন্দারা স্বামী মামুনকে আটক করে রাখলে পুলিশে তাকেও আটক করেছে। মামুন-নাহার দম্পতি নাটোর শহরের বলারীপাড়ার হাজী নান্নু মোল্লা ম্যানশনের চারতলায় ভাড়া থাকতেন।
ওই ভবনের সিকিউরিটি গার্ড নিজাম উদ্দিন জানান, মামুন ও নাহার গত রাত ১১টার দিকে বাইরে থেকে বাসায় প্রবেশ করে। পরে রাত দুইটার দিকে মামুন গেটে নক করে একটু প্রয়োজনের কথা বলে বাইরে চলে যায়। রাতে সে আর বাসায় ফেরেনি। আজ ভোর ৬টার দিকে মামুন বাসায় প্রবেশ করে। এর কয়েক মিনিট পরেই নাইট গার্ডকে সে ডাকতে ডাকতে নিচে আসে।
পরে নাইট গার্ড গিয়ে নাহারের দেহ ফ্যানের সাথে ঝুলতে দেখে। পরে মামুন ফ্যান থেকে নাহারের মরদেহ নামায়। বিষয়টি নৈশ প্রহরী ভবনের মালিককে জানালে মালিক ওই ভবনে ভাড়া থাকা একজন বিচারককে জানালে তিনি পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেন। পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
ভবনের বাসিন্দা ও এলাকাবাসী জানান, মামুন অন্যদের জানান স্ত্রী খুবজিপুর ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক খায়রুন নাহার শেষ রাতে আত্মহত্যা করেছেন। লোকজন তার বাসায় গিয়ে খায়রুন নাহারের লাশ মেঝেতে শোয়া অবস্থায় দেখতে পেয়ে তাদের সন্দেহ হওয়ায় তারা মামুন বাসার মধ্যে আটকে পুলিশে খবর দেন। সহকারী অধ্যাপক খায়রুন নাহার গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈড় পৌর এলাকার মো.খয়ের উদ্দিনের মেয়ে। তার স্বামী মামুন হোসেন একই উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পাটপাড়া গ্রামেরর মোহাম্মদ আলীর ছেলে ও নাটোর নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারী কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
এর আগে ছয় মাসের প্রেমের পর স্বামী পরিত্যক্তা এক ছেলের জননী খায়রুন নাহার গত বছরের ১২ ডিসেম্বর কাজী অফিসে গিয়ে দুজন গোপনে বিয়ে করেন। বিয়ের ৬ মাস পর গত জুলাই মাসে ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে বেশ আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়।
নাটোর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ নাছিম আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, বিষয়টি তারা তদন্ত শুরু করেছেন। তদন্ত ও লাশের ময়নাতদন্ত হলে এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।
এ ঘটনার পর পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা, পিবিআই এর জেলা পুলিশ সুপার শরিফ উদ্দিনসহ পুলিশ ও প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
সময় জার্নাল/এলআর