স্পোর্টস ডেস্ক : ৭১৯ দিন পর আইপিএলে খেলতে নেমে ব্যাট হাতে ভালো করতে পারেননি সাকিব আল হাসান। ৫ বলে মাত্র ৩ রান করে আউট হয়ে গেলেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদের পেসার ভুবনেশ্বরের বলে।
তবে বল হাতে প্রথম ডেলিভারিতেই সাফল্য পেলেন। হায়দরাবাদের ওপেনার ঋদ্ধিমান সাহাকে ৭ রানের বেশি করতে দেননি সাকিব।
ব্যাট হাতে সাকিব ব্যর্থ হলেও কলকাতা নাইট রাইডার্সের ওপেনার নীতিশ রানা ও তিনে নামা রাহুল ত্রিপালি খেলেছেন অসাধারণ ইনিংস।
বিশেষ করে প্রথম ম্যাচেই নীতিশ রানা নিজের জাত চিনিয়েছেন। ৫৬ বলে করেছেন ৮০ রান।
এই দুই ব্যাটসম্যানের দুর্দান্ত ইনিংসে ভর করে হায়দরাবাদকে ১৮৮ রানের বিশাল লক্ষ্য দেয় কলকাতা।
যা পূরণ করতে পারেনি ডেভিড ওয়ার্নারের দল। নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৭৭ রানে থেমে যায় হায়দরাবাদের ইনিংস।
ফলে আইপিএলের ১৪তম আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিপক্ষে ১০ রান জয় পেল সাকিবের কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর)।
রোববার রাতে চেন্নাইয়ের চিদাম্বরাম স্টেডিয়ামে টসে জিতে নাইটদের ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান হায়দরাবাদের ডেভিড ওয়ার্নার।
নীতিশ ও রাহুলের যথাক্রমে ৮০ ও ৫৩ রানের ইনিংসে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৮৭ রান তোলে কেকেআর।
১৮৮ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ব্যাট করতে নেমে শুরুটা মোটেই ভালো হয়নি হায়দরাবাদের। স্কোরবোর্ডে ১০ রান তুলতেই দুই ওপেনারকে হারায় হায়দরাবাদ। অধিনায়ক ওয়ার্নারকে ৩ রানে সাজঘরে ফেরান প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা। ঋদ্ধিমান সাহাকে ৭ রানে ফেরান সাকিব।
তবে দলের হাল ঠিকই ধরেন মনীষ পাণ্ডে ও ইংলিশ তারকা জনি বেয়ারস্টো। এ জুটি কোনে বিপদ না ঘটিয়ে ১০২ রানে নিয়ে পৌঁছায় দলকে।
দুর্দান্ত এই জুটিতে ভাঙন ধরান প্যাট কামিন্স। আউট হওয়ার আগে বেয়ারস্টো খেলেন ৪০ বলে ৫৫ রানের একটি প্রয়োজনীয় ইনিংস।
বেয়ারস্টোর পর হায়দরাবাদের বাকি ব্যাটসম্যানরা মনীষের সঙ্গে ছোটা ছোট পার্টনারশিপ গড়েন।
আফগান তারকা মোহাম্মদ নবী ১১ বলে ১৪ রান করে আউট হন প্রসিদ্ধর বলে। বিজয় শংকরকে ১১ রানে থামান আন্দ্রে রাসেল। এরপর আবদুল সামাদকে নিয়ে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যান মনীষ পাণ্ডে।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য হায়দরাবাদের প্রয়োজন ছিল ২২ রানের।
টি-টোয়েন্টির ধুমধারাক্কা মঞ্চে এটি অসম্ভবের কিছু নয়। কারণ ৪২ বলে ৫৪ রানে অপরাজিত মনীষ। ওদিকে মাত্র ৪ বলে ১৫ রান করে ছক্কা হাঁকানোর জন্য মুখিয়ে সামাদ।
হাতে রয়েছে ৫টি উইকেট। রান বেশি হলেও এমন পরিস্থিতিতে ম্যাচ বের করা খুব একটা কষ্টসাধ্য নয়।
শেষ ওভারটি করতে ক্যারিবীয় পেসার আন্দ্রে রাসেলের হাতে তুলে দেন কেকেআর অধিনায়ক এইউন মরগ্যান।
কিন্তু হতাশ করেন সামাদ। প্রথম ৪ বলে মাত্র ৪ রান নেন তিনি। ফলে খেলা কেকেআরের ভাগ্যে চলে যায়। শেষ ২ বলে প্রয়োজন পড়ে ১৮ রানে। যা নো বল ছাড়া অসম্ভব।
শেষ বলে মনীষ পাণ্ডে ছক্কা হাঁকালে সর্বসাকুল্যে ১৭৭ রান জমা হয় স্কোরবোর্ডে। অর্থাৎ ১০ রানে জয়ী কলকতা নাইট রাইডার্স।
এর আগে কেকেআরের প্রথম ইনিংসে ৭ ওভারে দলের ৫৩ রান তোলার সময় ফেরেন ওপেনার শুভমন গিল (১৫)। এরপর তিনে ব্যাটিংয়ে নামা রাহুল ত্রিপাঠিকে সঙ্গে নিয়ে ব্যাটিং তাণ্ডব শুরু করেন নীতিশ রানা। দ্বিতীয় উইকেটে ৫০ বলে ৯৩ রানের জুটি গড়েন তারা।
১৫.১ ওভারে এক উইকেটে ১৪৬ রান করে বড় স্কোর গড়ার আভাস দিয়েছিল কেকেআর। কিন্তু এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় তারা। দলীয় ১৪৬ রানে দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরেন ত্রিপাঠি। তার আগে ২৯ বলে ৫টি চার ও দুই ছক্কায় ৫৩ রান করেন।
বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ইনিংস শুরু করা আন্দ্রে রাসেল ফেরেন ৫ বলে মাত্র ৫ রান করে। ইনিংসের শুরু থেকে একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে যাওয়া নীতিশ রানা ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন। তার আগে ৫৬ বলে ৯টি চার ও চারটি ছক্কায় করেন দলীয় সর্বোচ্চ ৮০ রান। ৩ বলে ২ রানে ফেরেন অধিনায়ক ইয়ন মরগান।
ইনিংস শেষ হওয়ার ১৪ বল আগে নেমে সুবিধা করতে পারেননি সাকিব। ইনিংসের শেষ বলে আউট হওয়ার আগে ৫ বলে করেন মাত্র ৩ রান। শেষ দিকে ৯ বলে দুই চার ও এক ছক্কায় অপরাজিত ২২ রান করেন দিনেশ কার্তিক। শেষ দিকে তার বিধ্বংসী ইনিংসে ৬ উইকেটে ১৮৭ রান করে কেকেআর।
সময় জার্নাল/আরইউ