মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

মানসম্মত ফার্নিচার পেয়ে উচ্ছ্বসিত কুবির শেখ হাসিনা হলের শিক্ষার্থীরা

শুক্রবার, আগস্ট ১৯, ২০২২
মানসম্মত ফার্নিচার পেয়ে উচ্ছ্বসিত কুবির শেখ হাসিনা হলের শিক্ষার্থীরা

মাহমুদুল হাসান, কুবি প্রতিনিধি:

উদ্বোধনের কিছুদিন পরেই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা হলের শিক্ষার্থীরা পেয়েছে নতুন আসবাবপত্র। সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বন শিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএফআইডিসির) এ আসবাবপত্রগুলোর গুনগত মান ভাল হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছে শিক্ষার্থীরা। প্রশাসনের দাবি এযাবতকাল যত ফার্নিচার এসেছে সেসবের মাঝে সবচেয়ে ভাল ফার্নিচার দিয়েছে এ প্রতিষ্ঠান। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ার দপ্তর এবং পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তর সূত্রে জানা যায়, বিএফআইডিসির রাবার কাঠের এ আসবাবপত্রগুলোর টেকসই হতে পারে প্রায় ২৫-৩০ বছর। এর আগে কুবিতে এতো মজবুত ও মোটা কাঠের আসবাবপত্র কোনো ঠিকাদারই দেয়নি বলে জানায় এ দপ্তর। এছাড়াও, এ হলের আসবাবপত্রের জন্য প্রথমে মেসার্স আবু জাহের মৃধা নামে যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করেছে তাদের দেওয়া আসবাবপত্রের গুনগত মান ভাল না হওয়ায় ও নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ না করায় টেন্ডার বাতিল করে দিয়ে বিএফআইডিসির শরণাপন্ন হয় কুবি প্রশাসন। 

চলতি বছরের ২৭ এপ্রিল ১ কোটি ১০ লাখ ৮ হাজার ৭৭ টাকা টাকায় বিএফআইডিসিকে কাজ দেয়া হলে ১৫ আগস্ট থেকে আসবাবপত্র ধাপে ধাপে ঢাকার তেজগাঁও থেকে কুবি ক্যাম্পাসে দেয়া শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

এদিকে, আসবাবপত্র পেয়ে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন। তবে শিক্ষার্থীদের রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী আতিফা লিয়া বলেন, ফয়জুন্নেসা হলের আসবাবপত্রের তুলনায় এ হলের নতুন আসবাবপত্র মানসম্মত মনে হয়েছে। কারণ ঐ হলের টেবিল গুলোতে সমস্যা হতো। এগুলো আগের গুলোর চেয়ে মজবুত। সব মিলিয়ে ভালো লাগছে কম সময়ে জিনিস গুলো আমরা পেয়েছি।

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সোনিয়া আক্তার বলেন, যেই ফার্নিচারগুলো এসেছে সবগুলো ফার্নিচার খুব ভালো মানের মনে হচ্ছে। ফার্নিচার গুলো পেয়ে আমি খুবই সন্তুষ্ট এবং ফার্নিচার এর মান ঠিক রাখার জন্য হল প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই।

নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফাতেমা তুজ জহুরা মীম বলেন, বেড এবং টেবিল পেয়েছি আমরা। খুবই ভালো লেগেছে টেবিল ও বেড। দুটোর মান যথেষ্ট ভালো মনে হয়েছে। কিন্তু ডাবলিং করার জন্য বেডগুলো ছোট হয়েছে।

ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া ইসলাম বলেন, হলের বেড, টেবিল এসেছে দেখে ভালো লেগেছে যে, হল উদ্বোধনের অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা ফার্নিচারগুলো পেয়ে গেছি। তবে বেড গুলোর সাইজ দেখে একটু হতাশ হয়েছি। কারণ সিঙ্গেল যারা থাকবে তাদের জন্য বেডগুলো যথাযথ হলেও ডাবলিং এর জন্য বেড গুলো সামঞ্জস্য না। এ ব্যাপারে হল কর্তৃপক্ষের বিশেষ বিবেচনা কামনা করছি।

এ বিষয়ে শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট মো. সাহেদুর রহমান বলেন, আমরা চেয়েছি একটা সিটে একজনকে দিতে। তবে আমাদের কাছে সিট অনুযায়ী আবেদন অনেক বেশি এসেছে। অনেক মেয়ে এসে জানিয়েছে মেসে থাকতে আর্থিক সমস্যা ও নিরাপত্তার সমস্যা হয়। এ সকল বিষয় বিবেচনায় জুনিয়রদের ডাবলিং এর মাধ্যমে তাদেরকে সুযোগ দিয়েছি। আর মেয়েদের অন্য হলেও এরকম সাইজের সিটে দুইজন থাকে।

তিনি আরো বলেন, উপাচার্য মহোদয়ের নির্দেশক্রমে আমরা ফার্নিচারগুলো রঙ করার আগেই ফ্যাক্টরিতে গিয়ে পরিদর্শন করেছি। যে কাঠ দিয়ে কাজ করার কথা ছিল তা ঠিক দিচ্ছে কি না তদারকি করেছি। ফার্নিচারের মান দেখে আমাদের তদারকির টিম সন্তুষ্ট হয়েছে।

ইঞ্জিনিয়ার দপ্তরের তত্ত্বাবধারক প্রকৌশলী এস. এম. শহিদুল ইসলাম বলেন, একটি টেন্ডার যথাসময়ে বাস্তবায়িত না হলে বিশ্ববিদ্যালয় যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয় তেমনি শিক্ষার্থীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আগের ঠিকাদারের বিরুদ্ধে এই ক্ষতির জন্যে টেন্ডারের বিধান অনুযায়ী যে সকল পেনাল্টি প্রযোজ্য সব গুলো ধার্য করার নির্দেশ দিয়েছেন ভিসি স্যার। ঠিকাদারদের ১০% টাকা আমাদের কাছে জমা থাকে। সেটা আমরা বিধি অনুযায়ী বাজেয়াপ্ত করে দিচ্ছি। টেন্ডারের বিবরণ অনুযায়ী শর্তগুলো আগের ঠিকাদার মানেন নি। তাই তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ বন শিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশন থেকে যেসব আসবাবপত্র এসেছে, সেগুলো স্ট্যান্ডার্ট মান বজায় রেখেছে।কোয়ালিটির চেয়ে ওভার কোয়ালিটির মালামাল তারা দিয়েছে। খাটের এঙ্গেল সাইজ ৫ মি.মি. বলা ছিলো, সেখানে ৬ মি.মি. দিয়েছে। এভাবে প্রতিটি জিনিসের ক্ষেত্রেই ১ ইঞ্চি বেশি ছিলো।

আসবাবপত্র ক্রয় ও বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন,  তারা যে ফার্নিচার দিয়েছে আমি বলতে পারি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে গুনগত মানের দিক দিয়ে সবচেয়ে ভাল ফার্নিচার পেয়েছি। এটি যেহেতু একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান আবার আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় তাই টেন্ডারের প্রয়োজন হয়নি। সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে সরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে সরাসরি চুক্তির মাধ্যমে কাজ হয়েছে। আর এতো ভাল ফার্নিচার পাওয়ার সম্পূর্ণ অবদান আমাদের উপাচার্য স্যারের। তিনি আগের ঠিকাদারের কাজ গুণগত মান ভাল না থাকায় কমিটির সুপারিশে কাজ বাতিল করে বন শিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশনকে দিয়েছেন।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, আগের ঠিকাদার যেসব ফার্নিচার দিয়েছে তা দেখে আমি খুবই হতাশ হয়েছিলাম। যেমন মানের ফার্নিচার দেয়ার কথা ছিল তেমন দেয়া হয়নি। অনেক বেশি অনিয়ম করা হয়েছিল। ফার্নিচারগুলোও বেশিদিন টেকসই হতো না। তাই আমরা সেই ঠিকাদারকে বাদ দিয়ে প্রথমবারের মতো বন শিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশনের সাথে যোগাযোগ করি। বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকায় কেউ দুই নাম্বার জিনিস দিবে আর আমরা সেটি নিব বিষয়টা এতো সহজ নয়। এখন তারা আমাদের যেসব ফার্নিচার দিচ্ছে সেগুলোর মান খুবই ভাল।

সময় জার্নাল/এলআর


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল