মো: জীবন হক, ঠাকুরগাঁও : “উম্মাহ হালাল শপ”। নামটি ভিন্ন হলেও কার্যকলাপ যেন চোখে লাগার মতো। দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির অবনতির কারণে দেয়া হয়েছে লকডাউন। এ পরিস্থিতিতে বাসার বাইরে বের হতে না পারা মানুষদের একটি ফোনেই তাদের বাসায় গিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিয়ে আসছেন তারা।
জেলা সর্বস্থরের মানুষের সুবিধার্থে অনলাইনে সেবা চালু করেছেন এক তরুণ। নাম দিয়েছেন “উম্মাহ হালাল শপ”। তবে ফ্রি চার্জে চাহিদা অনুযায়ী পণ্যসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন ক্রেতাদের বাড়িতে।
ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগ গ্রহণ করা তরুণ হলেন “উম্মাহ হালাল শপ” এর প্রতিষ্ঠাতা রোকন হাসান। এক সপ্তাহ আগেই শুরু করেন এই অনলাইন সেবাটি।
যানা যায়, লকডাউনে কারনে ঘরবন্দি মানুষের কথা চিন্তা করে তরুণ উদ্যোক্তা রোকন চালু করেন উম্মা হালাল শপ নামের একটি অনলাইন সেবা। করা হয়েছে একটি ফেসবুক পেজে। যেটিকে নিয়ন্ত্র করছে সেই তরুণ উদ্যোক্তা সহ আরো বেশ কয়েকজন। সেখানেই দেয়া হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের ছবি। সেই সথে দেয়া হচ্ছে তাদের ফোন নাম্বার। ফোন করলেই অল্প সময়ের মধ্যে ক্রেতার বাসায় পৌঁছে যাচ্ছে পণ্য। প্রতিদিনি প্রায় ২৫ থেকে ৩৫টি অর্ডায় পোঁছে দেয়া হচ্ছে ক্রেতাদের বাসায়।
শহরের সরকার পাড়া এলাকার বাসিন্দা রাকিব আল রিয়াদ বলেন, যেদিন থেকে লকডাউন শুরু হয়েছে বাহিরে সেভাবে যাওয়া হয়না। কারন নিজের সহ পরিবারের সকলের স্বাস্থ্যের দিকটি ভাবতে হয়। ফেসবুকে একটি “উম্মাহ হালাল শপ” নামের একটি পেজে দেখলাম যেখানে অর্ডার করা হলে একদল তরুণ বাসায় এসে সব দিয়ে যাচ্ছেন। বিষয়টি অনেক ভালো।
হাজীপাড়া এলাকার বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, গতকাল ফেসবুকের মাধ্যমে দেখলাম অনলাইনের মাধ্যমে আমাদের জেলায় একদল তরুণ বাসায় বাসায় পণ্য পৌঁছে তিচ্ছেন। আমিও অর্ডার দিয়েছি। সময় মতো এসে তারা ফ্রেস খাবার দিয়ে গেছেন। আমি ধন্যবাদ জানাই এই উদ্যোক্তাকে যিনি এই করনোর মধ্যে জনগনের কথা চিন্তা করে অনলাইন সেবা চালু করেছে।
ঠাকুরগাঁও “উম্মাহ হালাল শপ” এর উদ্যোক্তা রোকন হাসান বলেন, দেশে দিনের পর দিন করোনার প্রকোপ বেড়েই চলছে। সেই সাথে আমরা দেখছই এখন আমাদের ঠাকুরগাঁওয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। অপরদিকে সরকার লকডাউন ঘোষণা দিচ্ছে। সব মিলে যেন একটা অস্থিশীল পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে।
প্রতিটি বিষয় বিবেচনা করে ভাবলাম নিজ জেলার মানুষের যদি কোনভাবে হেল্প করা যায়। তাই একটি অনলাইন সেবা চালু করলাম। যেখানে আমাদের সকল পণ্যের ছবি দেয়া হচ্ছে। ক্রেতারা তাদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্যগুলো অর্ডার দিলেই আমরা সেটি তাদের বাসায় দিয়ে আসছি। এখানে কোন সার্ভিস চার্জ আমরা নিচ্ছিনা।
এই উদ্যোক্তা আরো বলেন,আমাদের এখানে আমি সহ মোট ১৬ থেকে ১৭জন মিলে এই উম্মাহ হালাল শপ নামের পেইজ টি পরিচালনা করে আসছি। এর মধ্যে কখনো কেউ পেজে পণ্যের ছবি আপলোড করছে, কখনো বা কেউ ক্রেতার বাসায় গিয়ে পণ্য দিয়ে আসছে। চেষ্টা করে যাচ্ছি যাতে অনলাইন এই সেবাটি আরো উপরের দিকে নিয়ে যেতে পারি।
উম্মাহ হালাল শপের এই কার্যকলাপকে সাধুবাধ জানিয়েছেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি বলেন,সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এই তরুণ যে উদ্যোগ গ্রহন করেছে সেটি সত্যি ভালো একটি উদ্যোগ। শুনেছি তারা এখানে কয়েকজন কাজ করে আসছে। বাসায় বাসায় ফ্রিতে পণ্য পৌঁছে দিচ্ছেন। আমি ধন্যবাদ জানাই তাদের।
সময় জার্নাল/এমআই