ইসাহাক আলী, নাটোর প্রতিনিধি:
নাটোর জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী ওমর ফারুকের কক্ষে ১৪ দিন ধরে ঝুলছে তালা। দিনের পর দিন নানা কাজে এসে সেবা না পেয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে সেবা গ্রহিতা ও ঠিকাদারদের। নাটোর জেলা পরিষদের চলমান জেলার প্রায় সকল উন্নয়নমূলক কাজও বাঁধা গ্রস্থ হচ্ছে। সহকারী প্রকৌশলী ওমর ফারুকের অভিযোগ, জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সচিব) সাইদুল ইসলামের চাহিদা মতো উৎকোচ দিতে না পাড়ায় তিনিই তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন।
সরেজমিন পরিদর্শনে জানা যায়, নাটোর জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী ওমর ফারুক গত ২৮ আগষ্ঠ অফিসে এসে দেখেন তার অফিস কক্ষে তালা ঝুলছে। খবর নিয়ে তিনি জানতে পারেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম নিজেই তার কক্ষে এই তালা লাগিয়ে দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা বললে তিনি অফিসের ইলেকট্রিশিয়ান ইমরান হোসেনকে দিয়ে তালা ভেঙ্গে নতুন তালা লাগান। ইমরান হোসেন নতুন তালার চাবী সহকারী প্রকৌশলী ওমর ফারুককে না দিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুল ইসলামকে দেন।
এর পর থেকে অনেক অনুনয় বিনয় করেও নিজের কক্ষের চাবী পাননি সহকারী প্রকৌশলী ওমর ফারুক। ১৮দিন থেকে নিয়মিত তিনি নাটোর জেলা পরিষদে আসলেও কখনো নিজের কক্ষে প্রবেশ করতে পারেননি। যার কারণে তিনি কোন কাজও করতে পারেননি। ফাইল কাগজপত্র না পাওয়ায় তিনি তার দায়িত্বে থাকা নাটোর জেলা পরিষদের চলমান উন্নয়নমূলক কাজ গুলোও তদারক করতে পারেননি। তার বিভাগের সাথে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের কার্যক্রমও বন্ধ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অফিসে আগত একাধিক সেবা গ্রহিতা, ঠিকাদার ও কর্মরতরা জানান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম যোগদানের পর থেকে অফিসের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের পাশ কাটিয়ে অফিসের ইলেকট্রিশিয়ান, একজন হিসাব রক্ষক ও অফিস সহকারীদের পরামর্শে যা ইচ্ছে তাই করছেন না।
তালা ভাঙ্গার বিষয়ে কথা বললে অফিসের ইলেকট্রিশিয়ান ইমরান হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি তালা ভাঙ্গেন নি এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
তবে তালা ভাঙ্গার সময় উপস্থিত মিস্ত্রি নাটোর ষ্টেশন বাজারের তালা মিস্ত্রির মজিবুর রহমান বলেছেন অফিসের পিয়ন খলিল তাকে ডেকে নিয়ে তালা ভাঙ্গায় এবং ইমরান হোসেন দাঁড়িয়ে থেকে সেখানে নতুন তালা লাগিয়ে চাবি নিয়ে চলে যায়।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুল ইসলামের কাছে এ সব বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সহকারী প্রকৌশলী ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে অনিয়ম দূর্নীতিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। সহকারী প্রকৌশলী ওমর ফারুক সুযোগ পেলে অফিস থেকে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র সরিয়ে ফেলতে পারেন তাই জেলা পরিষদের প্রশাসক অ্যাডভোকেট সাজেদুর রহমান খান তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। তিনি সহকারী প্রকৌশলীর কক্ষে তালা ঝুলাননি। সহকারী প্রকৌশলী ওমর ফারুক কয়েকদিন থেকে নিয়মিত অফিসে আসছেন না বলে তিনি অভিযোগ করেন।
নাটোর জেলা পরিষদের প্রশাসক অ্যাডভোকেট সাজেদুর রহমান খাঁন বলছেন, তিনি তালা লাগানোর ব্যাপারে কিছুই জানেন না। কোন সরকারি দপ্তরে তালা লাগিয়ে দেয়ার পরামর্র্শ বা হুকুম তিনি কোন ক্রমেই দিতে পারেন না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
সময় জার্নাল/এলআর