সময় জার্নাল ডেস্ক: জেসমিন আক্তার এমনি এক সফল নারী উদ্যোক্তা। বিরামপুর উপজেলা থেকে ১৫ কিলোমিটার পশ্চিমে থেকে জোতবানী ইউনিয়নের শিবপুর বাজারের পাশে তার বাড়ির দেখা মিলবে। বাড়ির প্রবেশ মুখ দেখলে কিছু মনে না হলেও খানিকটা ভেতরে গেলে দেখা মিলবে শতাধিক গরুর একটি বিশাল খামার, যেখানে রয়েছে বিভিন্ন জাতের গরু।
সফল নারী উদ্যোক্তা জেসমিন আক্তার ১১৫ শতক জমিতে কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তুলেছেন গরু, ছাগল ও হাঁসের খামার। যা থেকে প্রতিমাসে তার আয় ১ লাখ টাকা।
জীবনের পথচলার শুরুতে কিছুটা হোঁচট খেলেও ইউটিউব দেখে, পরিবারের পরামর্শ নিয়ে দুটি গরু দিয়ে শুরু করেন খামারের কার্যক্রম। একটি একটি করে এখন তার খামারে গরু সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০০ টির মতো।
শুধু গরু লালন-পালন নয় ১১৫ শতাংশ জমিতে গড়ে তুলেছেন ছাগল হাঁস ও মাছের খামার। যেখান থেকে তার প্রতি মাসে আয় লাখ খানেক টাকা। অন্যদিকে খামারটিতে কর্ম করে অনেকটাই ভালোভাবে জীবনযাপন করছেন স্থানীয় কয়েকজন বেকার যুবক।
জেসমিন আক্তার বলেন, স্বামীর সংসারের শুরুটা অনেকটাই ধোঁয়াশার মধ্যে দিয়ে শুরু হলেও স্বামীর অনুপ্রেরণা ও নিজের চেষ্টায় খামার গড়েছি। এখন আমি সফল, আমার খামারে আরও কয়েকজন কর্ম করতে পারছে। এটার ফলে বদলে গেছে আমার ও পরিবারের চিত্র। আমাকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি।
খামারে কর্মরত শ্রমিকরা বলেন, সীমান্তবর্তী এলাকায় কর্ম নেই, তারপর সেখানে বাড়ির পাশে একটা খামার গড়ে উঠেছে সেখানে আমরা কাজ করতে পারছি। কেউ গরু খামারে কাজ করছে আবার কেউ পুকুরের মাছ চাষ ও হাঁস পালনে ব্যস্ত। সবমিলিয়ে সবাই এখানে আমরা কর্মের মধ্যে ব্যস্ত থাকি।প্রতিমাসে এখানে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা করে বেতন পাই, তা দিয়ে আমাদের সংসার খুব ভালো চলে।
স্থানীয়রা জানান, একজন নারী হয়ে একটা প্রত্যন্ত অঞ্চলে এত সুন্দর খামার তৈরি করেছেন যেখানে স্থানীয় অনেক বেকার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। তাছাড়াও আমরা এখান থেকে ভেজালমুক্ত দুধ কিনতে পারি, এটা আমাদের জন্য খুব ভালো।
বিরামপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এ আর এম আল মামুন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমিষের চাহিদা মিটানোর জন্য এই উপজেলার দুগ্ধ খামারের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছি। জেসমিন আক্তার যে খামার করেছে তাকে আমরা সবধরনের সহযোগিতা দিচ্ছি। এধরনের উদ্যোগ যদি আরও কেউ নিতে চায় আমরা তাদের সবধরনের সহযোগিতা করবো।
বিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান খায়রুল আলম রাজু বলেন, আমাদের উপজেলায় বেকারত্ব দূরীকরণের জন্য সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে, তারই ধারাবাহিকতায় বিরামপুরে কোনো বেকার যুবক বা যুবতী এধরনের উদ্যোগ নিতে চায়, তাহলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবধরনের সহযোগিতা করা হবে।
সময় জার্নাল/এলআর