রেজাউল করিম রেজা, কুড়িগ্রামঃ
জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী মানিক রহমান (১৬)। দুই হাত নেই, একটি পা অচল। এই প্রতিবন্ধকতা থামাতে পারেনি তার আদম্য ইচ্ছা শক্তিকে। একটি মাত্র সচল পা দিয়েই এবার বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসপি পরীক্ষা দিচ্ছে মানিক।
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি উপজেলার ফুলবাড়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এসএসপি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করেছে সে। মানিক রহমান ফুলবাড়ী জছিমিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র। ফুলবাড়ী উপজেলার চন্দ্রখানা গ্রামের মিজানুর রহমান ও মরিয়ম দম্পতি ছেলে সে। এর আগে পা দিয়ে লিখেই জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে মানিক।
এ বিষয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী মানিক রহমান জানান, আমাকে নিয়ে বাবা-মা সব সময় দু:চিন্তায় থাকেন। আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি। একইভাবে পরীক্ষা দিয়ে জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ -৫ পেয়েছি। সবার কাছে দোয়া চাই। আল্লাহ যেন আমাকে সুস্থ রাখেন। আমি লেখাপড়া শেষ করে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হতে পারি।
মানিক রহমানের মা মরিয়ম বেগম বলেন, আমার ছেলে জন্ম থেকেই শারিরীক প্রতিবন্ধী। তার জন্য দু:চিন্তা হলেও লেখাপড়ায় খুব আগ্রহ তার । আমরাও তাকে সাহস দিয়ে যাচ্ছি। ভালো ফলাফল করে সে যেন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন পুরন করতে পারে। এজন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই।
মানিকের বাবা ঔষধ ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান জানান, আমার দুই ছেলের মধ্যে মানিক বড়। জন্মের পর থেকেই সে শারীরিক প্রতিবন্ধী। ছোট থেকেই তাকে পা দিয়ে লেখার অভ্যাস তৈরি করি। যখন সে জেএসসিতে ভালো রেজাল্ট করেছে তখন থেকে তাকে নিয়ে গর্ভবোধ করি। আমি আশা করছি সে এসএসসিতেও ভালো রেজাল্ট করবে।
এ বিষয়ে ফুলবাড়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রের সুপার মোঃ মশিউর রহমান বলেন, মানিক রহমান ছাত্র হিসেবে অত্যন্ত মেধাবী। সে জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ -৫ পেয়েছে। ট্যালেন্টপুলে বৃত্তিও পেয়েছে। তার এসএসসি পরীক্ষা আমরা গুরুত্বসহকারে নেয়ার ব্যবস্থা করেছি। তার লেখা দেখে বুঝার উপায় নেই সে পা দিয়ে লিখেছে। আমরা তার প্রতি আশাবাদি। সে ভবিষ্যতে ভালো কিছু করবে।
জেলা শিক্ষা অফিসার মো: শামছুল আলম জানায়, জেলার ৯ উপজেলায় ৫৭টি কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থী ২৭ হাজার ১শ ৫১ জন। এর মধ্যে মাধ্যমিক এ ৩৪টি কেন্দ্রে ১৮ হাজার ৮শ ৩৯ জন, ভোকেশনালে ১১টি কেন্দ্রে ২ হাজার ৭শ ৫৭ জন ও মাদ্রাসায় ১২টি পরীক্ষা কেন্দ্রে ৫ হাজার ৫শ ৫৫ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছে।
এমআই