মো: মিরাজুল ইসলাম, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়:
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে (খুবি) আদিবাসী ছাত্রকল্যাণ সংস্থা কর্তৃক 'সম্প্রীতির সুর' নামে আদিবাসী সাংস্কৃতিক উৎসব ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানটি বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা স্কুল প্রাঙ্গণে শুরু হয়।
এতে আদিবাসী চাকমা,মারমা,মুন্ডা,ডালু,ত্রিপুরা, ওরাও'দের সাংস্কৃতি, তাদের অবদান, তাদের অধিকার নিয়ে আলোচনা সভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন এগ্রোটেকনোলোজি ডিসিপ্লিনের শিক্ষক প্রফেসর ড. মোঃ মনিরুল ইসলাম। উদ্বোধনী পর্বে তিনি বলেন, আমাদের আসল পরিচয় মানুষ। কিন্তু আমাদের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের ভালো লাগা, ভালোবাসা, সাংস্কৃতিক পার্থক্য রয়েছে। আমাদের সবার উচিত ভালো লাগা, ভালোবাসা, সাংস্কৃতি ইত্যাদির এই বৈচিত্রকে শ্রদ্ধার সাথে দেখা।
এরপর অতিথিবৃন্দ মঞ্চে মঞ্জল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেন।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সভাপতি নিহার রঞ্জন উরাও। তিনি আদিবাসীদের যেন অন্য চোখে না দেখা হয় এবং ক্যাম্পাসের কোথাও যেনো চাইনিজ,কোরিয়ান ইত্যাদি বলে হেনস্তা না করা হয় তার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান।
মুখ্য আলোচক ইংরেজি ডিসিপ্লিনের শিক্ষক প্রফেসর মোঃ সামিউল হক বলেন, বাংলাদেশে আদিবাসীদের অবদান কম নয়। তারা মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের উন্নয়নে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে চলেছেন। তিনি শিক্ষাজ্ঞনে ভাষাগত সমস্যার বিষয় সকলের সামনে তুলে ধরার পাশাপাশি আদিবাসী নিয়ে তার বিভিন্ন গবেষণার অভিজ্ঞতা বর্ননা করেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কে এই অনুষ্ঠান আয়োজনে সার্বিক সহায়তা করার জন্য ধন্যবাদ জানান।
আদিবাসী সংস্কৃতি ও তাদের অধিকার নিয়ে আলোচনা করেন ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের শিক্ষক প্রভাষক অবুল বাশার নাহিদ। তিনি বলেন, ৫৬ হাজার বর্গমাইল এর দেশে নানা রকম জাতিসত্তার মানুষ বসবাস করে।যখন দেশে বহিঃশত্রুর আক্রমণের শিকার হয় তখন সকল জাতি সত্বার কাধেকাধ মিলিয়ে এগিয়ে এসেছে। অথচ বাংলাদেশে বসবাসরত আদিবাসীর স্বাস্থ্য, জীবনমান, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সুরক্ষা নিশ্চিত হচ্ছে না। বিভিন্ন সময় আমরা তাদের হেয় করি, বিভিন্ন ভাবে মানসিক হেনস্তা করি। এতে করে তারা তাদের ন্যায্য অধিকার বঞ্চিত হচ্ছে। কিন্তু সম্প্রতির সোনার বাংলা বাস্তবায়নে আমাদের সকলের স্বাধীনতা নিশ্চিত , সকলের মাঝে সম্প্রতি স্থাপন করা আমাদের দায়িত্ব। আমরা সকলে এক হয়ে এসকল প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবেলায় এগিয়ে আসবো।
আলোচনা শেষ হওয়ার পর মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। চাকমা,মারমা, ত্রিপুরা ভাষায় গান, কবিতা, নাচ, নেপালি নাচ সহ বিভিন্ন আদিবাসীদের সংস্কৃতি উপাস্থাপন করা হয়। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠন তাদের সাংস্কৃতিক অংশগ্রহণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সৌন্দর্যবর্ধন করে।
এমআই