শাহিনুর ইসলাম প্রান্ত,লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ তুলে স্থানীয়দের মানববন্ধন ও গনপিটিশনের পর অবশেষে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেই চিকিৎসক ডা. তৌফিক আহম্মেদকে বদলি করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
শনিবার(১ অক্টোবর) ছিল তার দায়িত্ব বুঝে দেয়ার শেষ সময়। রোববার(২ সেপ্টেম্বর) থেকে সরাসরি অবমুক্ত হিসেবে গন্য হবেন।
এর আগে বুধবার(২৮ সেপ্টেম্বর) ডা.তৌফিক আহম্মেদকে বদলির আদেশ দিয়ে পত্র পাঠান স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের পক্ষে পরিচালক (প্রশাসন) শফিউল ইসলাম।
বদলি সংক্রান্ত চিঠি সুত্রে জানা গেছে, আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.তৌফিক আহম্মেদকে বদলি করে পঞ্চগড় সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার পদে যোগদানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের পক্ষে পরিচালক(প্রশাসন) শফিউল ইসলাম স্বাক্ষরীত ৫৭২ নং স্মারকের চিঠিতে দুই কর্মদিবসের মধ্যে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় ৩য় কর্মদিবসে সরাসরি তিনি অবমুক্ত হবেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
গত তিন মাস আগেও স্থানীয়দের নানান অভিযোগের কারনে তাকে বদলির আদেশ জারি করে স্বাস্থ্য বিভাগ। টাকা আর ক্ষমতার জোরে সকল কিছু ম্যানেজ করে বদলি আদেশ স্থগিত করেন ডা. তৌফিক আহম্মেদ। চলতি আদেশ হাতে পেয়ে আবারও বদলি ঠেকাতে মরিয়া হয়েছে উঠেছেন।
এজন্য উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের প্রায় সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের স্বাক্ষর নিয়ে কাগজপত্র তৈরী করে বিভিন্ন দফতরে পাঠিয়েছেন। শুধু তাই নয় শনিবার(১ অক্টোবর) সকল কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ রেখে কর্মচারীদের নিয়ে বদলি ঠেকাতে বিভিন্ন দফতরে ঘুরছেন বলেও নির্ভরযোগ্য সুত্র নিশ্চিত করেছে।
এর আগে ২৪ জুলাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌফিক আহমেদের অপসারণ দাবি করে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গেটে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেন সাধারণ রোগী ও স্থানীয়রা। এ সময় ঘুষসহ তার বিরুদ্ধে নানান তুলেন ভুক্তভোগিরা।
এ ছাড়াও ডা.তৌফিকের বিরুদ্ধে অর্থ,অনিয়ম,দুর্নীতি আর স্বেচ্ছাচারীতাসহ নানান অভিযোগ তুলে স্থানীয় ও সাধারন রোগীরা গনপিটিশন দায়ের করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বরাবরে পাঠান।
ডা.তৌফিকের আচরনে ক্ষুব্ধ হয়ে কর্মস্থল অনিরাপদ দাবি করে হাসপাতালের ৭জন কর্মচারী স্বেচ্ছায় গণবদলির আবেদন করেন। সব মিলে হাসপাতালে সেবার মান নিম্নমুখি হতে থাকে। কর্মকর্তা কর্মচারীরা প্রকাশ্যে দুইটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়ে।
এ পরিস্থিতে স্বাস্থ্যসেবার মান ফেরাতে এবং ঘটে যাওয়া সব ঘটনা তদন্তে সরেজমিন তদন্ত করেন লালমনিরহাট সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায়। তদন্ত শেষ তদন্ত প্রতিবেদন স্বাস্থ্য অধিদফতরে পাঠানো হয়।
এ তদন্ত প্রতিবেদন পৌছলে আলোচিত সেই চিকিৎসক ডা. তৌফিক আহম্মেদকে বদলি করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। শুধু তাই নয়, তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা পদ থেকে পঞ্চগড় সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে পদায় করা হয়েছে।
দুই দিন গোপন থাকলেও শনিবার(১ অক্টোবর) বদলির বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়রা স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সমালোচিত এ চিকিৎসককে দ্রুত কর্মস্থল ত্যাগেরও দাবি জানান স্থানীয় ভুক্তভোগিরা। আবারও বদলির আদেশ ঠেকালে বৃহত্তর কর্মসুচি ঘোষনার দাবি স্থানীয়দের।
এসএম