মনদীপ ঘরাই:
এই গত পরশু জানতে পারলাম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বিবিসি বাংলার রেডিও ব্রডকাস্ট। দূরদেশের রেডিও সার্ভিস বন্ধ হলে আমাদের কী? এ প্রশ্নের জবাব এক বাক্যে দেয়া কঠিন।
শৈশবের পুজোর ছুটিগুলোর কথা মনে পড়ে। সকালে ঘুম ভাঙ্গতো দাদুর রেডিওর শব্দে। কানে বাজতো কিছু শব্দ: বিবিসি বাংলা সংবাদ...
একটু বড় হতেই মামার বাড়িতেও দেখতাম মেজো মামাও বিবিসি শুনছে।
আর ব্যস্ততার মাঝে বাবাও রেডিওতে বিবিসি বাংলা টিউন করতেন মাঝে মাঝে।
অভ্যাসটা তাই পরিবার থেকেই শুরু। এরপর থেকে অভ্যাস আর হয়নি কখনো বিবিসি বাংলার। হয়েছিলো অমোঘ এক নেশা। মাতৃভাষায় সারাবিশ্বের তথ্য আর সাম্প্রতিক বিষয় জানার নেশা।
সহপাঠী অন্যদের চেয়ে কতটা এগিয়ে গিয়েছিলাম সে সময়টাতে তা সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতাগুলোয় টের পেতাম।
এমনকি পেশাগত জীবনে এসেও অন্যরকম এক সংযোগ তৈরি হয়েছিলো। একটা নামী দৈনিক পত্রিকায় কাজ করার সময় প্রতিদিন নিয়ম করে বিবিসি বাংলা শুনতে হতো এবং নোট করতে হতো। আর বিসিএস এর প্রস্ততির ক্ষেত্রে এর গুরুত্ব যে কতটা ছিলো...
এখনও কেউ বিসিএস এর টিপস চাইলে বলি, " বিবিসি বাংলার খবর শোনো"
এরপর কী বলবো? যুগ বদলে যাচ্ছে। বদলে যাচ্ছে বিনোদনের মাধ্যম। শুধু আমার মতো সেকেলে মানুষের কানে বেজে যাবে কিছু শব্দ...
প্রত্যুষা, প্রভাতী, প্রবাহ, হাসান মাসুদ, নবনীতা চৌধুরী, আকবর হোসেন, কাদির কল্লোল এবং স্টিং এর সুর।
সম্ভব হলে বিবিসি বাংলাকে থামিয়ে দেবেন না, প্লিজ।
লেখক: অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, বরিশাল।
সময় জার্নাল/এমআই