সময় জার্নাল প্রতিবেদক:
পৃথিবী এখন একটা অর্থনৈতিক মন্দার ব্লাক হোলের দিকে যাচ্ছে বা ঢুকে গেছে। এটা নিয়ে কারো কোনো সন্দেহ নেই। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীও এবিষয়ে সতর্ক বানী দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ২০২৩ এর এপ্রিলের দিকে আমাদের দেশে একটা খাদ্যাভাব দেখা দেবে। অর্থনৈতিক মন্দা'র ভালো-খারাপ নিয়ে সময় জার্নালের সাথে কথা বলেছেন অর্থনীতিবিদ, শেয়ার বাজার এবং ব্যাংকিং বিশ্লেষক এনবিইআর চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ।
বাংলাদেশের অর্থনীতি সচল রাখতে কৃষিতে গুরুত্ব দেয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি। প্রফেসর পারভেজ বলেন, আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা কম থাকার কারণ, আমরা অনেক জিনিশ আমদানি করেছি। আমদানি ব্যয় মেটাতে হয়েছে। আমরা ঋণ করেছি উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য। সেই ঋণ শোধ দিতে হবে সে কারণে বাংলাদেশ একটা বিপদজনক জায়গায় আছে। তা না হলে, বাংলাদেশর যে প্রভূত উন্নয়ন হয়েছে। আমরা যদি আরো ৩ বছর কোন উন্নয়ন প্রজেক্ট না নিয়ে বরং কৃষির দিকে মন দেই তাহলে অনেক শ্রমিক আবার মাঠের কাজে ফিরে যাবে। অনেক বেকার কৃষিকাজের দিকে মনোযোগী হবে।
যারা কৃষিকাজ ছেড়ে শহরে এসে রিক্সা, ভ্যান, ঠেলা চালাচ্ছিলো তারা আবার পূর্বের পেশায় ফিরে যাবে। যারা বিভিন্ন বাসায় কাজ করত, যারা কারখানায় কাজ করত সকলে গ্রামে ফিরে যাবে। বড় কারণ শহরে টিকে থাকাটা অনেক ব্যয়বহুল হয়ে যাবে। জীবনযাপনের নূন্যতম মান বজায় রেখে খরচ চালানো কঠিন হয়ে যাবে। সে কারণে মানুষ পরিবার নিয়ে গ্রামে ফিরে যেতে চাইবে। সুতরাং কৃষি পণ্য উৎপাদনের দিকে সরকার মনোযোগী হতে হবে।
অধ্যাপক আহসানুল আলম পারভেজ মনে করেন, এই অর্নৈতিক মন্দা বিশ্ব অর্থনীতিকে বিশ্ববাসীকে একটা বড়ধরনের আঘাত করবে। তিনি বলেন, এটা সত্য যেকোন আঘাতে গরীবরাই আগে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তবে এই আঘাতে অনেক বড় বড় দেশ, বিশেষ করে যারা কালো টাকার মালিক, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপষোকতায় যারা ধনী হয়েছে তারাও বিপদে পড়বে। বিদেশের ব্যাংকে থাকা অনেকের টাকা ফ্রিজ হয়ে যাবে, সুইস ব্যাংকের টাকা ভোগ করার আগেই মারা যাবে। তাই আমি মনে করি এই ঝড় বড়দের ও কেউ কেউ আঘাত করবে।
তিনি আরো বলেন, আবার মার্কেট না থাকলে পণ্য তৈরি করলেও বিক্রি হবে না। যেমন ফাইভ স্টার হোটেল, দামি বাড়ি, বিভিন্ন ধরনের উন্নত সেবা মানুষের হাতে টাকা না থাকলে ভোগ করবে কে। আবার এই ধরনের সেবা দেয়ার জন্য লোক দরকার হয়। এটাকে ভূমিকম্পের সাথে তুলনা করা যায়।
বর্তমান বিশ্বে যে অর্থনৈতিক মন্দা ঘটছে তা অর্থনৈতিক ভূমিকম্পের সাথে তুলনা করা যায়। এই ভূমিকম্পে যারা কৃষি, পেট্রোলিয়াম, গ্যাস, তেল, খনি থেকে পণ্য উৎপাদনকারী দেশ অপেক্ষাকৃত নিরাপদে থাকবে। কারণ এগুলো লাগবেই। তাই আমি মনে করছি আগামী ২-৩টা বছর বিশ্ব অর্থনীতিতে একটা সুনামী আসবে। সুনামী একটা জনপদের উপর যা করে, সভ্যতার ক্ষেত্রে তাই করবে। বিশ্ব অর্থনীতিকে এই অর্থনৈতিক মন্দা একদম সুনামীর মত আঘাত করবে।
সময় জার্নাল/এমআই