এহসান রানা, ফরিদপুর : ফরিদপুর শহর সংলগ্ন পদ্মা নদীর পাড়, সিএন্ডবি ঘাট, মদনখালী ও ধলার মোর এলাকা থেকে রাতের আঁধারে অবৈধ ভাবে বালু ও মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করছে একটি প্রভাবশালী মহল। প্রভাবশালী মহলটি এতই শক্তিশালী আশে পাশের কেউ এদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস রাখে না।
সরেজমিনে, ঐ এলাকায় গেলে এলাকাবাসীরা জানান, অদ্য এলাকার বাদশা মিয়ার ছেলে আজম, দুলাল, বাবু ( কুমড়া বাবু ), তন্ময়, যুব, বদর উদ্দিন ও তার ছেলে জাহাঙ্গীর, লক্ষীপুর এলাকার রাজু , রানা, তানীম, রুহুল সহ প্রায় ৫০ জন ব্যক্তিরা প্রশাসনের চোখ ফাকি দিয়ে এবং বিভিন্ন প্রভাবশালী লোকদের ম্যানেজ করে প্রতি রাতে ঐ সকল এলাকা থেকে প্রায় ১৫-২০ লক্ষ টাকার বালি ও মাটি বিক্রয় করে থাকে।
তারা আরো জানান, জনৈক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ঢাকায় বসবাসকারী ব্যবসায়ী, রাজনীতিবীদ ও ফরিদপুরের চরাঞ্চলের কৃতী সন্তান নামে পরিচিত তার নাম ব্যবহার করে প্রতিদিন রাত ১২টার পর থেকে ভোর রাত পর্যন্ত শহর সংলগ্ন পদ্মা নদীর পাড়, সিএন্ডবি ঘাট, মদনখালী ও ধলার মোর এলাকা থেকে রাতের আঁধারে অবৈধ ভাবে বালু ও মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করিতেছে। এতে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ইতিপূর্বে উপজেলা নির্বাহী পরিষদ , পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বি আই ডাব্লিউ টি এ পদ্মা নদী ড্রেজার দিয়ে খনন করার জন্য টেন্ডারের মাধ্যমে ৮ জন ঠিকাদারকে বালু ও মাটি বিক্রি করার অনুমতি দিলে ও উপরোক্ত ঐ বালু দস্যুরা প্রশাসনের অনুমোদন ব্যতীত অবৈধভাবে বীর বাহাদুরের মতো বালু ও মাটি উত্তোলন করে দেদারছে বিক্রয় করে যাচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অবৈধ বালু ব্যবসায়ী জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সিএ, মো কামাল হোসেনের মাধ্যমে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে আমরা এই বালু ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছি।
তিনি আরো জানান, এসি ল্যান্ডের ড্রাইভারকে ও আমরা ম্যানেজ করে রেখেছি যাতে অভিযানে নামলেই আগেই আমাদেরকে ড্রাইভার ফোনের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়। আমরা তখন দ্রুত বালু কাটা বন্ধ রেখে অন্যত্র চলে যাই, তারা অভিযানে এসে আমাদেরকে পায় না তবে মাঝে মাঝে আমাদের দুই এক জন গাড়ির ড্রাইভারকে পেয়ে যায় এবং এদেরকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।
এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সিএ কামাল হোসেন জানান, আমার সাথে অবৈধ বালু ও মাটি উত্তোলনকারীদের কোন সম্পৃক্ততা নেই। যারা বলছে আমাকে টাকা দেয় এই বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
অবৈধ বালু উত্তলোনের বিষয়ে ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুম রেজা জানান, আমরা নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রেখেছি এবং সাম্প্রতি মদনখালী এলাকা থেকে এক ট্রাক ড্রাইভারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ২ টি ভেকু পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো জানান, অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা এতো চতুর; রাতের আঁধারে বালু কাটে ঐ মুহূর্তে আমরা খবর পাই না ও যেতে ও পারি না ।
অবৈধ বালু উত্তোলনের বিষয়ে (পদ্মা নদী এলাকা সংলগ্ন) ডিগ্রীচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান মিন্টু ফকির সত্যতা স্বীকার জানান, কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এই অবৈধ বালু ও মাটি ব্যবসার সাথে জড়িত বলে আমি শুনেছি কিন্তু আমি তাদেরকে চিনি না ।
ফরিদপুর শহর সংলগ্ন পদ্মা নদীর পাড়, সিএন্ডবি ঘাট, মদনখালী ও ধলার মোর এলাকাবাসীদের দাবি আজম গং সহ সংশ্লিষ্ট আশ্রয়দাতা ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও ফরিদপুর শহরকে রক্ষা করার।
সময় জার্নাল/এমআই