আকতার ইবনে ওয়াহাব:
আসন্ন মন্দা মোকাবেলায় কৃষিখাতকে গুরুত্ব দিতে হবে। দেশীয় কৃষিখাতকে গুরুত্ব দিয়ে ডিজেল এবং সারের দাম কমিয়ে দিতে হবে। কৃষকদের কৃষি প্রণোদনা দিয়ে আকৃষ্ট করতে হবে। তবে কৃষকের নামে যেন অন্য কেউ না পায় সেটা খেয়াল রাখতে হবে। সার উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে হবে। ন্যায্যতার বিষয়ে নজরদারি বাড়াতে হবে। প্রযুক্তি এবং আধুনিকায়ন কৃষি গবেষণায় মনযোগ দিতে হবে। বন্ধ হওয়া ৫টি সার কারখানা চালু করতে হবে। তাহলে কৃষি বিপ্লব ঘটবে। এবং কৃষিজ পণ্য রপ্তানি প্রক্রিয়া বাড়িয়ে দেশের ডলার আয় বাড়ানো সম্ভব।
আমাদের গার্মেন্টস শিল্পের অর্ডার সামনে অনেকাংশ হ্রাস পাবে। বন্ধ হবে কয়েকশো গার্মেন্টস। কর্মসংস্থান হারিয়ে বেকারত্ব হবে হাজারো শ্রমিক। এখনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামার ইঙ্গিত নাই। তাই ইউরোপ এবং পশ্চিমা বিশ্ব অর্ডার কমিয়ে দিবে। তারা খাদ্য সংকটে পড়লে জীবন মান ব্যয় কমিয়ে দিবে।
গার্মেন্টস বিকল্প আমাদের কৃষি উৎপাদন কাজে লাগানোর এখনি মোক্ষম সময়। যুদ্ধাকালীন অবস্থায় বিশ্ব খাদ্য সংকটে পড়বে। এ খাদ্য সংকট রপ্তানি কাজে লাগাতে পারলে বাংলাদেশ নিজেদের খাদ্য জোগানের পাশাপাশি ডলার আয়ের মাধ্যমে অর্থনীতি মন্দা কাটিয়ে উঠতে পারবে।
বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের শিক্ষিত তরুণরা কৃষি এবং খামারের দিকে ঝুকেঁ পড়ছে। ব্যাংকগুলোর উচিত মোটা লোকের তেলের মাথায় তেল না দিয়ে তরুণদের উদ্যেক্তা বাড়াতে একাজে স্বল্প মুনাফায় ঋণের সহযোগীতা করা। এক্ষেত্রে বেকারত্ব ঘুচবে। দেশের অর্থনীতিরও সংকট কাটবে।
অপরদিকে পর্যটনের অপার সম্ভাবনাময় একটি দেশ বাংলাদেশ। আমাদের পর্যটন শিল্প বিশাল একটা খাত বলা যেতে পারে। এ খাতেও সরকার দেশী বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে পারে। এতে অর্থনীতির চাকা আরো সচল হবে।
এছাড়া, আমদানি নির্ভরতা কমাতে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলে প্রযুক্তি উদ্ভাবন ক্ষমতা বাড়াতে হবে। দেশের প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলনে জোর দিতে হবে। এলএনজির নামে দুর্নীতির ব্যবসা বন্ধ করতে হবে। পরনির্ভরতা কিংবা আমদানি কমাতে হবে। স্বনির্ভরতা বাড়াতে হবে।
মূলকথায়, মন্দা প্রতিরোধ করতে হলে কৃষিখাতকে গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি প্রযুক্তি গবেষণা বাড়াতে হবে। আমদানি নির্ভরতা কমাতে হবে। স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা বাড়াতে হবে। দুর্নীতি কিংবা বড় মাথাওয়ালাদের ডলার পাচার বন্ধ করতে হবে।
লেখক, রিসার্চ সহকারী- এনবিইআর, তরুণ উদ্যেক্তা এবং সংগঠক।