এম.পলাশ শরীফ, বাগেরহাট : বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ধান কাটা শুরু করেছে কৃষক। ৬৬শতক বিঘা প্রতি জমিতে ৫০ মন ধান পাচেছন কৃষক। উৎপাদিত কৃষকের মুখে হাসি, মাঠজুড়ে এখন সোনালী ফসলের সমারোহ। বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আনন্দে শনিবার কৃষকের সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে ধান কাটলেন পঞ্চকরণ ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক মজুমদার।
এ বছর পঞ্চকরণ ইউনিয়নে শতাধিক কৃষক সর্বপ্রথম বোরো বিভিন্ন প্রজাতের ধানের ১শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে উৎপাদন করেছে। এর মধ্যে দেবরাজ, খারইখালী, পঞ্চকরণ, মহিষ চরণী ও কুমারিয়া জোলা গ্রামে মাঠের পর মাঠ জুড়ে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে এপ্রিল সাড়ে ৩ মাসে সল্প সময়ে এ প্রজাতের ধানের ক্ষনজন্মকাল। অধিক ফসল পাচ্ছেন কৃষক।
কথা হয় দেবরাজ গ্রামের কৃষক আক্কাস হাওলাদার(৬৫), শওকত হাওলাদার (৫৭), জাহাঙ্গীর শেখ (৫৫), ইলিয়াস শেখ (৫০), রেজাউল শেখ (৪৬), নজির মোল্লা(৫০)সহ একাধিক কৃষকরা জানান, দেশীয় আমন ধান কাটার পরবর্তীতে তাদের এসব জমি পতিত অবস্থায় পড়ে থাকত। একটি মাত্র ফসল ছিলো তাদের সারা বছরের আয়ের উৎস। সে জমিতে এখন তারা ব্যাপক হারে উপজেলা কৃষি দপ্তরের পরামর্শ অনুযায়ী বোরো মৌসুমে বোরো ধানের চাষ শুরু করে।
১১০-১২০ দিনের ব্যবধানে অধিক ফসল পেয়ে কৃষক অনেক খুশি। অনেকে ২ থেকে ৩ বিঘা জমিতে ধান ফসল ফলিয়েছে প্রতি কৃষক। বিঘা প্রতি ৫০ মন ধান ঘরে তুলতে পারবেন বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। প্রতি মন ধান ৯৫০ টাকা করে বাজারে বিক্রি করতে পারছেন তারা। অতিরিক্ত লবণাক্ততার কারনে ফসল উৎপাদনে রয়েছে প্রতিবন্ধকতা। পাশাপাশি পলি পড়ে ঝালমেলা খাল ও শুভরাজকাঠি খালের শাখা দুটি ভরাট হওয়ার কারনে নির্দিষ্ট সময়ে সফলে তারা পানির চাহিদা মিটাতে কষ্ট হয়েছে। এ খাল দুটি পুনঃখনন করলে আরো ব্যাপক ফসল উৎপাদন হবে বলে একাধিক কৃষকরা ধারনা করছেন।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা দিপংকর সমাদ্দার বলেন, এক সময়ের পঞ্চকরণ ইউনিয়নের এক ফসলী জমিতে এখন তারা কৃষি অধিদপ্তরের পরামর্শ অনুযায়ী তিনটি সফল উৎপাদনের পরিকল্পনা করছেন। এবারে প্রথম বোরো প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সঠিক সময়ে জমিতে সার বীজ কীটনাশক দিতে পারায় পোকামাকড় কম দেখা দিয়েছে, ফলে কৃষক বোরো ধানের বাম্পার ফলন পেয়েছে। নতুন করে আউশ প্রণোদনার আওতায় আনা হয়েছে ২০ জন কৃষককে।
এ সর্ম্পকে ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক মজুমদার বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এর নির্দেশনা অনুযায়ী কোন জমি অনাবাদি থাকবে না। সে লক্ষে তার ইউনিয়নে কৃষকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নতুন নতুন পদ্ধতিতে চাষাবাদ করছেন। বোরো উৎপাদন হয়েছে ব্যাপক হারে। এ বাম্পার ফলন হওয়ায় আগামিতে কৃষকদের মধ্যে আরো চাষাবাদে আগ্রহ বাড়বে।
তবে পানি সমস্যার সমাধানে ভরাট হয়ে যাওয়া খাল দুটি সরকারিভাবে পুনঃখননের জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কৃষি দপ্তরের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের প্রতি জোর দাবি জানান তিনি।
সময় জার্নাল/এমআই