বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪

ইভিএমের প্রচারে উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন ২০৬ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব

বুধবার, অক্টোবর ১৯, ২০২২
ইভিএমের প্রচারে উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন ২০৬ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব

সময় জার্নাল ডেস্ক:


দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারে ব্যাপক প্রচার চালানোর উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়।সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইভিএমের পক্ষে প্রচার চালানো হবে।ফেসবুক, ইউটিউব, গুগল, টিকটক, ইমো, হোয়াটসঅ্যাপে চলবে প্রচার। ইভিএমবিরোধীদের মোকাবিলায় জনপ্রিয় ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের কাজে লাগানো হবে। ‘নির্বাচনী ব্যবস্থায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের ব্যবহার বৃদ্ধি এবং টেকসই ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এ প্রচার চালানো হবে। প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য গতকাল বুধবার পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে।


ইভিএম প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৭১২ কোটি টাকা। এ প্রকল্পের আওতায় নতুন করে ২ লাখ ইভিএম কেনা হবে। প্রতিটির একক দর ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। বর্তমানের নির্বাচন কমিশনের (ইসি) হাতে ১ লাখ ৫০ হাজার ইভিএম রয়েছে।


নতুন ভোটার, নারী ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে ইভিএমে ভোটদানে উদ্বুদ্ধ করতে এবং গণমাধ্যমে প্রচারে আরও ১৩ কোটি টাকা খরচ হবে। অডিও–ভিডিও কনটেন্ট তৈরিতে তিন কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। গণপরিবহনের টিকিট কাউন্টারের পাশাপাশি চায়ের দোকান, সেলুন, সুপারশপ ও ওষুধের দোকানে ব্যানার–ফেস্টুন টাঙানো হবে। ব্যয় হবে ৫৫ লাখ টাকা।


আগামী নির্বাচনে সর্বোচ্চ ১৫০টি আসনে ইভিএমে ভোট হবে বলে নির্বাচন কমিশন আগেই ঘোষণা দিয়েছে। তবে ইভিএম ব্যবহারে প্রবল আপত্তি জানিয়ে আসছে বিএনপিসহ বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল।

প্রকল্পের নথি থেকে জানা যায়, ভোটার শিখন, ইভিএম নিয়ে জনসচেতনতা ও দেশব্যাপী ইভিএমের ব্যবহার বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রচার চালাতে ২০৬ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। নির্বাচন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ইভিএমে ভোট গ্রহণে দক্ষতা বাড়াতেও এ অর্থ ব্যয় করা হবে।


প্রকল্পের প্রচারসংক্রান্ত অংশের নথি ঘেঁটে দেখা যায়, প্রচারের অংশ হিসেবে নির্বাচনের ছয় মাস আগে থেকে ১৫০টি আসনে পাঁচ হাজার স্কুলে ফ্লোর গেম বিতরণ করা হবে। পাশাপাশি প্রতিটি স্কুলে একটি করে মোবাইল গেম দেওয়া হবে। এতে খরচ হবে দেড় কোটি টাকা। নির্বাচনের ৯০ দিন আগে থেকে জেলা, উপজেলা, গ্রাম, বাজার ও জনবহুল স্থানে আটটি ভ্যান দিয়ে ইভিএমের পক্ষে প্রচার চালানো হবে। এতে খরচ হবে ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ইভিএমের নেতিবাচক কনটেন্টের (আধেয়) বিপরীতে ইতিবাচক কনটেন্ট বানাতে খরচ করা হবে আড়াই কোটি টাকা।


নতুন ভোটার, নারী ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে ইভিএমে ভোটদানে উদ্বুদ্ধ করতে এবং গণমাধ্যমে প্রচারে আরও ১৩ কোটি টাকা খরচ হবে। অডিও–ভিডিও কনটেন্ট তৈরিতে তিন কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। নির্বাচনের ছয় মাস আগে থেকে গণপরিবহনের টিকিট কাউন্টারের পাশাপাশি চায়ের দোকান, সেলুন, সুপারশপ ও ওষুধের দোকানে ব্যানার–ফেস্টুন টাঙানো হবে। এতে ব্যয় হবে ৫৫ লাখ টাকা।


প্রচারের অংশ হিসেবে দেশে পাঁচটি আন্তর্জাতিক সেমিনার আয়োজন করা হবে। এতে বিদেশি বিশেষজ্ঞদেরও আনা হবে। এ খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে দেড় কোটি টাকা।সিসিটিভি ক্যামেরা ও নিরাপত্তাসামগ্রীর ভাড়ায় ব্যয় ১৩২ কোটি প্রকল্পের নথি বলছে, নির্বাচনে সিসিটিভি ক্যামেরা ও নিরাপত্তাসামগ্রীর ভাড়া বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২ লাখ ২৫ হাজার সিসিটিভি ক্যামেরা ভাড়া নেওয়া হবে, সংযোগ সেট করাসহ যার মোট খরচ ৫২ কোটি টাকা। সিসিটিভি স্থাপনে খরচ হবে আরও সাড়ে ৩৭ কোটি টাকা। সিসিটিভি ক্যামেরার জন্য আইএসপি সংযোগে ১০ কোটি ও কেব্‌ল সংযোগে ১১ কোটি টাকা খরচ হবে।

নথি থেকে জানা যায়, এ প্রকল্পের আওতায় আউটসোর্সিংয়ের জন্য ১ হাজার ১৩৫ জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে, যাঁদের বেতন–ভাতা বাবদ ১৯৬ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। ইভিএম সংযোজন ও নির্বাচনকালীন পরিবহনের সঙ্গে এসব জনবল সম্পৃক্ত থাকবেন।


এ ছাড়া প্রকল্পের আওতায় ২৬৪ কোটি টাকার যানবাহন কেনা হবে। যানবাহন নিবন্ধন ও নবায়ন ফি বাবদ খরচ হবে আরও ১৬ কোটি টাকা। পেট্রল কিনতে খরচ হবে ৯১ কোটি টাকা। আলাদা করে প্রশিক্ষণে ব্যয় হবে ৫২ কোটি টাকা। ওয়্যারহাউস নির্মাণের লক্ষ্যে ভূমি অধিগ্রহণে ৪০ কোটি টাকা খরচ হবে। ১০টি ওয়্যারহাউস বানাতে খরচ হবে ৩৭০ কোটি টাকা। এসব ওয়্যারহাউসে ইভিএম সংরক্ষণ করা হবে।কম্পিউটার সফটওয়্যারে ২২ কোটি, আসবাব ও ওয়্যারহাউসের র‍্যাক কেনায় ৫৬ কোটি টাকা, বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি ও থার্মাল কন্ট্রোল কেনায় খরচ হবে ১১০ কোটি টাকা।ইসি বলছে, প্রকল্পটি তৈরির আগে সমীক্ষা করা হয়নি। অথচ পরিকল্পনা কমিশনের নীতিমালায় স্পষ্ট করে বলা আছে, ৫০ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে কোনো প্রকল্প গ্রহণ করার আগে অবশ্যই সমীক্ষা করতে হবে।


তবে ইসি বলেন, এ ধরনের প্রকল্প আগে নেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া সময়স্বল্পতার কারণে সমীক্ষা করা যায়নি।প্রকল্প প্রস্তাব অনুযায়ী, শুধু ইভিএম কেনায় খরচ হবে ৬ হাজার ৬৬০ কোটি টাকা। এ ছাড়া ইভিএম সেন্টার স্থাপন, অঞ্চলভিত্তিক ওয়্যারহাউস নির্মাণ, ইভিএম সংরক্ষণ ও পরিবহনে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ১৫৫ কোটি টাকা। প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় খরচ হবে ৬৯০ কোটি টাকা।


ইভিএম প্রকল্পের বিভিন্ন খাতের ব্যয় সম্পর্কে জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, সরকার প্রধান আগামী বছর দুর্ভিক্ষের কথা বলছেন, খাদ্যসংকটের কথা বলছেন। অথচ এ সময়ে ইভিএমের পক্ষে প্রচারে অস্বাভাবিক ব্যয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা অকল্পনীয়।




এসএম



Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল