মোঃ এমদাদ উল্যাহ, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুণবতী বাজারে নিউ পপুলার ডায়াগনষ্টিক সেন্টার থেকে সঞ্জয় চন্দ্র রায় নামে এক ভুয়া এমবিবিএস ডাক্তারকে শনাক্ত করে তিন মাসের সাজা দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডাঃ আল রায়হান পাটোয়ারী তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
গুণবতী বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী থেকে প্রতারক সঞ্জয় রোগী দেখছেন। শুরুতে পরামর্শ ফি ৫০০ টাকা হলেও সম্প্রতি ২০ টাকার টিকেটে মাইকিং করে প্রলোভন দেখিয়ে রোগীর সংখ্যা বাড়াতে থাকে। স্থানীয়রা নিউ পপুলার ডায়াগনষ্টিক সেন্টারটির বিরুদ্ধে ইতোপূর্বেও কলিকাতার এমবিবিএস ডিগ্রী ব্যবহার করে ডাঃ মতিলাল চন্দ্র দাস, ডাঃ নুরে আলমসহ বেশ কয়েকজন ভুয়া এমবিবিএস ডাক্তার, অনভিজ্ঞ ল্যাব ইনচার্জ দিয়ে চিকিৎসা সেবা প্রদানের অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে উপজেলার গুনবতীসহ আশ-পাশের বিভিন্ন এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। অভিযান চলাকালিন সময়ে এবং অভিযানের পরে ডায়াগনষ্টিক সেন্টারটি স্থায়ীভাবে বন্ধে এবং আটককৃত ডাক্তারের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে সচেতন এলাকাবাসী।
অভিযানে অংশ নেয়া উপজেলা স্যানেটারি ইন্সপেক্টর মাহতাব জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তমালিকা পালের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিমসহ বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার গুনবতী বাজারের মক্কা টাওয়ারের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত নিউ পপুলার হাসপাতালে অভিযানে চালায়। নামের মিল থাকায় প্রতারক সঞ্জয় এমিবিবিএস রেজিঃ নং-৬০৬৭৫ তার নামের পাশে ব্যবহার করে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে। তার প্রদানকৃত রেজিঃ নাম্বার চেক করে দেখা যায় রেজিঃ নাম্বারটি সঞ্জয় কান্তি নাথ নামের সিনিয়র এক চিকিৎসকের। প্রতারক সঞ্জয় চট্টগ্রামের সন্দিপ উপজেলার প্রখ্যাত চিকিৎসক সঞ্জয় কান্তি নাথের রেজিঃ নাম্বার এবং একই ঠিকানা ব্যবহার করে নিউ পপুলার ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে বসে অপচিকিৎসা চালিয়ে আসছে। অভিযানকালে উপস্থিত থেকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা জানান, গ্রামের সহজ সরল প্রকৃতির মানুষকে ২০ টাকার প্রলোভন দেখিয়ে ভুয়া ডাক্তারের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে নিউ পপুলার ডায়াগনষ্টিক সেন্টারটি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।
নিউ পপুলার ডায়াগনষ্টিকের ম্যানেজার জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ডাঃ সঞ্জয় রেজিঃ নাম্বারটি তার বলে আমাদের জানায়। আমরা সে অনুযায়ী প্যাড এবং প্রচারপত্র বিলি করি। রেজিঃ নাম্বারটি চেক করার বিষয়ে প্রশ্ন করলে সে কোন জবাব দিতে রাজি হয়নি’।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তমালিকা পাল জানান, ‘বিগত ৬-৭ মাস যাবৎ সঞ্জয় কান্তি নাথ নামের এক চিকিৎসকের নাম রেজিঃ নাম্বার ব্যবহার করে সঞ্জয় চন্দ্র রায় এমবিবিএস ডাক্তার হিসেবে চিকিসা সেবা প্রদান করে আসছিল। বুধবার সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে তিন মাসের কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে’।
সময় জার্নাল/এলআর