মো. মাইদুল ইসলাম : পড়ন্ত বিকেলে আসরের নামাজের পর সারিবদ্ধভাবে সড়কে সাজিয়ে রাখা হয়েছে ইফতারের প্যাকেট ও খাবার পানির বোতল। রোযাদার দরিদ্র, রিকশাচালক, খেঁটে খাওয়া মানুষেরা আসছেন এবং নিজেই হাতে তুলে নিচ্ছেন ইফতারি। আবার যারা ইফতারি নিচ্ছেন তাদের কারও ছবি তোলা হয় না। ‘পটুয়াখালীবাসী’ নামক সেচ্ছাসেবী সংগঠনের ইফতার বিতরণে দেখা গেছে এ ভিন্নতা।
মহামারীতে থমকে আছে দেশ, রমজান মাসের প্রথমদিন থেকেই লকডাউন চলছে দেশে। এ পরিস্তিতিতে নিদারুণ কষ্টে আছে নিম্নবিত্তরা। এসকল দরিদ্র মানুষদের মাঝে, ১৬ এপ্রিল থেকে প্রতিদিন পটুয়াখালী জেলা শহরে, ‘পটুয়াখালীবাসী’ সংগঠনটি ৫০ জন রোজাদার অসহায় ব্যক্তিকে এভাবেই ব্যতিক্রমীভাবে ইফতার বিতরণ করে যাচ্ছেন। যেখানে প্রতি প্যাকেটে রয়েছে মুড়ি, বুট, পেঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ, জিলাপি, খেজুর এবং সঙ্গে খাবার পানির একটি বোতল।
সাধারণত দেখা যায় ইফতার বিতরণ কর্মসূচীতে যারা ইফতার দিচ্ছেন এবং যারা নিচ্ছেন তাদের ছবি তুলতে। কিন্তু এখানেই ভিন্নতা দেখা গেছে উক্ত আয়োজনে। এখানে, কে নিচ্ছেন তাদের কারও ছবি তোলা হয় না।
১৬ এপ্রিল প্রথমদিন ও আজ বিকেলে শহরের সার্কিট হাউস গোল চত্বর এলাকায় এবং ১৭ এপ্রিল পটুয়াখালীর ঝাউবন রোডে ইফতার বিতরণের এ ব্যতিক্রমী আয়োজন করা হয়।
এ ব্যতিক্রমী আয়োজনে সংগঠনটিকে সহযোগিতা করছেন স্থানীয় জেলা প্রশাসন, এক ম্যাজিস্ট্রেট ও একজন বিত্তবান।
ইফতার বিতরণের এ ব্যতিক্রমী আয়োজন ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রসংশা কুড়িয়েছে।
'পটুয়াখালীবাসী' সংগঠনের সভাপতি মাহমুদ হাসান রায়হান বলেন, 'করোনার এই বিরূপ পরিস্থিতিতে অনেকেই কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। ফলে সাধ আর সাধ্যের মিল করে অনেকেই ইফতার তৈরি করতে পারছেন না অথবা কিনতে পারছেন না। এমন পরিস্থিতি বিবেচনায় বিত্তবানদের সহযোগিতায় আমরা ইফতার দেওয়ার এই ব্যতিক্রমী আয়োজন করেছি।'
তিনি বলেন, প্রতিদিন আমরা ৫০ জন রোজাদার ব্যক্তির জন্য এই আয়োজন করে থাকি। ইফতারির সব আইটেম স্থানীয় দোকানির কাছ থেকে অর্ডার দিয়ে তৈরি করা হয়। ইফতারি আইটেম তৈরি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা নিয়ে প্যাকেট করে শহরের প্রবেশপথ সার্কিট হাউস গোল চত্বর এলাকায় তা সারিবদ্ধভাবে সাজিয়ে রাখি। নির্দ্বিধায় যে যার মতো করে প্রয়োজন অনুসারে সেই ইফতারের প্যাকেট নিয়ে নেয়। এই ব্যতিক্রমী আয়োজনের বিশেষ একটি বিষয় হলো, কে নিচ্ছেন বা কে দিচ্ছেন, তাদের কারও ছবি তোলা হয় না।
সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগে আপনিও সহযোগিতা করে এসব মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারেন। আপনার নাম আমরা প্রকাশ করব না। আমাদের সহযোগিতা করতে চাইলে যোগাযোগ করুন বিকাশ : 01736799979 নম্বরে।
সময় জার্নাল/এমআই