ইমরান মাহফুজ : স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, “জনগণের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার নিশ্চিত করনার্থে, সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্ররূপে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা ঘোষণা করিলাম”।
গতকাল কী হয়েছে! কারা ঘটনার সাথে যুক্ত সবাইকে জানেন। তারা রাষ্ট্রের দায়িত্বে থেকে যে আচরণ করলো উভয়ে, তা ঘরে বাহিরের জন্য অশনি সংকেত।
আমাদের সাম্য, সামাজিক মর্যাদা ও সুবিচার হাহাকার করছে। তারাই আবার নাকি মুক্তিযোদ্ধার রক্তে প্রবাহিত ধারা বহন করছে। মুক্তিযোদ্ধারা হেডম দেখাইছে পাকিস্থানিদের সাথে, আমরা দেখাচ্ছি কার সাথে? উত্তরাধিকার হয়ে কেবলমাত্র সুযোগ নিয়েছে বাবার আদর্শ নিতে পারে নাই। যেমন অনেকে বিদেশ থেকে গাড়ি বাড়ির ডিজাইন নিয়ে আসে, আনে না চলাচলের শৃঙ্খলা নীতিজ্ঞান।
বৃটিশের ১৯০ বছর, পাকিস্থানের ২৪ বছর ও বাংলাদেশের ৫০ বছর। আমাদের আমলনামা বদল হয়নি। দাদা রঙ চা, বাবা দুধ চা, আমি একই কাপে কফি খাওয়ার মত পরিবর্তন হয়েছে। মানুষ আসে যায় চেয়ার আর শাসকের চেহারা একই আছে বছরের পর বছর। এইভাবে একটা দেশ চলতে পারে না। আমাদের সর্বনাশ আমরাই করে চলছি। কোথায় যাবে সাধারণ?
কীভাবে রাষ্ট্রের কর্তাব্যক্তিরা ভুলে যায় পাকিস্তানে আমাদের আশা আদর্শ ও স্বপ্নের বাস্তবায়ন সম্ভব ছিল না বলে ৩০ লাখ মানুষের ত্যাগ! হাজারো বছরের একটা জাতির সংগ্রাম। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাঙালি জনগোষ্ঠী তার ইতিহাসে একটি অনন্য ও অভিনব বাস্তবতা।
নতুন রাষ্ট্রকাঠামোর ভেতরে দীর্ঘ সংগ্রামের ফসল হিসেবে পাওয়া সেসব আদর্শ ও মূল্যবোধ চর্চার এক কঠোর দায় আরোপ করে এবং অবারিত সম্ভাবনার সুযোগ করে দেয়। মুক্তিযুদ্ধ তাই একাধারে এক দীর্ঘ রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লড়াইয়ের সমাপ্তি এবং আরেকটি দীর্ঘ লড়াইয়ের সূচনা।
কালের পরম্পরায় স্বাধীনতার স্বর্ণজয়ন্তী। মৌলিক চাহিদা মিটেনি শতভাগ। ফলে আমাদের প্রয়োজন সামাজিক মুক্তি। এই মুক্তি আসবে আপনার আমার মাধ্যমে। রাস্তায়, পথে ঘাটে গাড়ি আটকিয়ে কিংবা কথায় কথায় বাবা চাচার নাম, মন্ত্রীর ফোনে না!
আপনাদের অবস্থা দেখে সাধারণরা আতংকে আছে। যেভাবে আতংকে আছে বাংলার স্বাধীনতা...
লেখক : কবি ও গবেষক।
সময় জার্নাল/এমআই