মাহবুবুল হক খান, প্রতিনিধি দিনাজপুর:
ব্যবসায়ীদের অত্যাচার ও হয়়রানির প্রতিবাদে দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার ঘুষখোর অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা সেলিনা আফরোজকে ৭ দিনের মধ্যে প্রত্যাহারের দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন শেষে ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে ব্যবসায়ীরা।
বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর-২০২২) সকালে দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার আমতলা মোড়ে় রাসায়়নিক সার, বীজ, কীটনাশক ডিলার ও খুচরা ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির আয়োজনে ঘন্টাব্যাপী এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে শতাধিক ব্যবসায়়ী অংশগ্রহণ করে। কাহারোল সার, বীজ ও কীটনাশক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব জয়নাল আবেদীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা সেলিনা আফরোজ কাহারোলে বদলী হয়ে় এসেই ঘুষ বাণিজ্য শুরু করেছেন। তিনি ব্যবসায়়ীদের আলাদাভাবে তার সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। ব্যবসায়়ীরা দেখা না করায়় ক্ষিপ্ত হয়ে নিজে এবং ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে অন্যায়়ভাবে দোকানের মালামাল জব্দ এবং কোনোরূপ পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই তা ধ্বংস করেছেন।
বক্তারা বলেন, সেলিনা আফরোজের স্বামী দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে কর্মরত অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষন) মোঃ মাহবুবুর রশীদের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ব্যবসায়ীদের বিভিন্নবাবে হুমকি ধমকি এবং ভয়ভীতি দেখান। এতে করে কাহারোল উপজেলার প্রায়় সাড়ে ৩ শত সার, বীজ ও কীটনাশক ব্যবসায়়ী আর্থিকভাবে যেমন কোটি কোটি টাকার ক্ষতির সম্মূখীন হচ্ছেন তেমনি ব্যবসায়িক সুনামও নষ্ট হচ্ছে তাদের ।
মানববন্ধনে ব্যবসায়়ীদেের স্বার্থে আগামী ৭ কার্য দিবসের মধ্যে সেলিনা আফরোজকে কাহারোল থেকে প্রত্যাহারের দাবী জানান। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ মোনায়েম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক পুলিং চন্দ্র রায়়, সহ -সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আনসারুল ইসলাম প্রমুখ। মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল সহকারে অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা সেলিনা আফরোজকে প্রত্যাহারসহ ছয়় দফা দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরুল হাসানের কাছে হস্তান্তন করেন।
এদিকে অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা সেলিনা আফরোজের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভোক্তা অধিকার সংক্রান্ত সরকারী নিয়মনীতি মেনেই অভিযান পরিচালনা এবং জব্দকৃত মালামাল ধ্বংস করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে কাহারোল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু জাফর মোহাম্মদ সাদেক জানান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এটা রুটিন ওয়ার্ক, মনিটরিংয়ের দায়িত্ব আমার, তাই আমার অফিসাররা বিভিন্ন সার ও বালাই নাশকের দোকানে নিয়ম মেনেই অভিযান চালায় এবং পণ্য যাচাই বাছাইয়ের পর ভেজাল পাওয়া গেলে তা ধ্বংস করেন।
উল্লেখ্য, ৬ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে আগামী ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা সেলিনা আফরোজকে কাহারোল থেকে প্রত্যাহার, অযথা হয়রানিমূলক অভিযান বন্ধ করতে হবে, অভিযান চালানোর সময় আমাদের সমিতির প্রতিনিধিদের সঙ্গে রাখতে হবে, কোনো সার, কীটনাশক ধ্বংস করার আগে ল্যাবরেটরিতে রাসায়নিক পরীক্ষা করতে হবে, নকল প্রমাণিত হলে তা ধ্বংস করা যেতে পারে অন্যথায় তা ফেরত দিতে হবে, সার ও কীটনাশক ডিলার ও ব্যবসায়ীর সঙ্গে খারাপ আচরণ করা যাবে না ও অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা সেলিনা আফরোজকে সাত দিনের মধ্যে কাহারোল থেকে প্রত্যাহার না করা হলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে ।
সময় জার্নাল/এলআর