বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪

পা দিয়ে লিখেই জিপিএ-৫ পেল কুড়িগ্রামের মানিক

সোমবার, নভেম্বর ২৮, ২০২২
পা দিয়ে লিখেই জিপিএ-৫ পেল কুড়িগ্রামের মানিক

রেজাউল করিম রেজা, কুড়িগ্রাম : 

জন্ম থেকেই দুই হাত ছিলনা মানিকের। বাম পায়ের প্রায় ৬টি আঙুলই খাটো। চিন্তায় দিশেহারা হয়েছিল মানিকের বাবা মা। অনেক পরিশ্রম করে স্কুল মুখি করেছেন তাকে। স্কুলের ক্লাসে নিজেদের চকিতে আলাদা বসিয়ে পায়ের আঙ্গুলে কলম বসিয়ে খাতায় লিখতো সে।  পর্যাক্রমে  সুস্থ ও স্বাভাবিক অন্যান্য শিক্ষার্থীর মতই লড়াই করে শিশু শ্রেনী থেকেই তার রোল ছিলে প্রথম ও দ্বিতীয়। অনুষ্ঠিতব্য এসএসসিতে পরীক্ষায় অংশগ্রহন  করে একই ভাবে পায়ের আঙ্গুলে কলম বসিয়ে খাতায় লিখে এবার এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছেন সে। 

অদম্য মেধাবী মানিক রহমানের ফলাফল দেখে অবাগ হয়েছে শিক্ষক ও এলাকাবাসী। মানিক রহমান ফুলবাড়ী জছিমিঞা মডেল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। সে জেএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে বাবা মায়ের মুখ উজ্জল করেছেন শারীরিক এ প্রতিবন্ধি। অদম্য মেধাবী মানিক রহমান এ বছর ফুলবাড়ী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা অংশগ্রহন করেছিলেন। 

শারীরিক প্রতিবন্ধী মানিক রহমান উপজেলার সদর ইউনিয়নের চন্দ্রখানা গ্রামের ঔষধ ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ও রাবাইতারী স্কুল এন্ড কলেজের প্রভাষক মরিয়ম বেগমের ছেলে। পিতা-মাতার বড় ছেলে মানিক রহমান জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। জন্ম থেকেই তার দুটো হাত নাই, একটি পা অন্যটির চেয়ে অনেকাংশে খাটো। সে সমাজের বোঝা হবেন, না কাজকর্ম করে খেতে পারবে, তা নিয়ে দিশেহারা হয়ে ছিলেন মা-বাবা।  বাবা মায়ের চেষ্টায় পিছিয়ে যায়নি মানিক। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকলেও পিইসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ সহ ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছিল সে। শুধু পা দিয়ে লেখাই নয়, পা দিয়ে মোবাইল চালানো এবং কথা বলা সহ কম্পিউটার টাইপিং ও ইন্টারনেট ব্যবহারেও পারদর্শী মানিক রহমান ভবিষ্যতে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে চায় ।  

এ প্রসঙ্গে মানিকের মা মরিয়ম বেগম জানান, মানিকের জন্মগত দুই হাত নেই। দুই পায়ের মধ্যে বাম পা প্রায় ৬ ইি  খাটো ছিল। তাকে নিয়ে চিন্তায় দিশেহারা ছিলাম । অনেক কষ্ট করে স্কুল মুখি করার হয় মানিককে। লেখাপড়ার চাহিদা হওয়ায় প্রথম শ্রেনী থেকে এক রোল হয় মানিকের। লেখা পড়ায় আগ্রহ ছিল তার বেশি ।  

ঔষধ ব্যবসায়ী ও মানিকের বাবা মিজানুর রহমান বলেন, ছোট বেলা থেকে লেখাপড়ার আগ্রহ ছিলে তার। হামা গুড়ি দিয়ে কলম ধরতে ও টেলিভিশনের রিমোট ধরে কার্টুন দেখে মজা পেত। স্কুলের সময়ের আগে গোসল করতো। আর ক্লাসের আগে পৌচ্ছাতে হতো তাকে। প্রতিদিন একই ঘরে রাত ১১টা পর্যান্ত  লেখা পড়া করতো। 
ফুলবাড়ী ফুলবাড়ী জছিমিঞা মডেল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবেদ আলী খন্দকার জানান, শারীরিক প্রতিবন্ধি হওয়ার পরেও মানিক রহমান অন্যান্য শিক্ষার্থীদের চেয়ে ভাল ফলাফল করায় আমরা মুগ্ধ। এবারেও বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ভাল ফলাফল করায় আমরা খুশি হয়েছি। 

এমআই


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল